HADITH.One

Bangla

Support

রিডিং সেটিংস

Bangla

System

আরবি ফন্ট নির্বাচন

Kfgq Hafs

অনুবাদ ফন্ট নির্বাচন

Kalpurush

22
17

সাধারণ সেটিংস

আরবি দেখান

অনুবাদ দেখান

রেফারেন্স দেখান

হাদিস পাশাপাশি দেখান


এই সদাকা জারিয়ায় অংশীদার হোন

মুসলিম উম্মাহর জন্য বিজ্ঞাপনমুক্ত মডার্ন ইসলামিক এপ্লিকেশন উপহার দিতে আমাদের সাহায্য করুন। আপনার এই দান সদাকায়ে জারিয়া হিসেবে আমল নামায় যুক্ত হবে ইন শা আল্লাহ।

সাপোর্ট করুন
hadith book logo

মিশকাতুল মাসাবিহ

. পর্ব-৫ঃ জানাযা

مشكاة المصابيح

/ পরিচ্ছেদঃ প্রথম অনুচ্ছেদ

অধিকাংশ লেখকবৃন্দ এর মধ্যে মুহাদ্দিসগণ ও ফুকাহারা জানাযাহ্ পর্বকে সলাতের পরে এনেছেন। কেননা মৃত ব্যক্তির সাথে গোসল, কাফন ইত্যাদি ক্রম করা হয় বিশেষ করে তার ওপর সলাত (সালাত/নামায/নামাজ) আদায় করা হয় যেখানে তার জন্য ক্ববরের ‘আযাব হতে মুক্তি পাওয়ার উপকারিতা বিদ্যমান থাকে। কারো মতে মানুষের দু’ অবস্থা একটি জীবিত অপরটি মৃত অবস্থা আর প্রত্যেকটির সাথে সম্পর্ক থাকে ‘ইবাদাত ও মু‘আমিলাতের হুকুম-আহকাম। আর গুরুত্বপূর্ণ ‘ইবাদাত হচ্ছে সলাত। সুতরাং যখন জীবিতকালীন সম্পর্কিত হুকুম-আহকাম হতে মুক্ত হল তখন মৃত্যুকালীন সম্পর্কিত বিষয়াদি আলোচনা করা হল তন্মধ্যে সলাত ও অন্যান্য বিষয়। কারো মতে, জানাযার সলাত শুরু হয়েছে হিজরীর প্রথম বৎসরে, সুতরাং যারা মাক্কায় মারা গেছে তাদের ওপর সলাত আদায় হয়নি।

১৫২৩

সহিহ হাদিস
عَنْ أَبِىْ مُوسى قَالَ: قَالَ رَسُولُ اللّهِ ﷺ: «أَطْعِمُوا الْجَائِعَ وَعُودُوا الْمَرِيْضَ وَفُكُّوْا الْعَانِىْ» . رَوَاهُ البُخَارِيُّ

আবূ মূসা আল আশ্‘আরী (রাঃ) থেকে বর্ণিতঃ

তিনি বলেন, রসূলুল্লাহ (সাল্লাল্লাহু ‘আলাইহি ওয়া সাল্লাম) বলেছেনঃ ক্ষুধাতুরকে খাবার দিও, অসুস্থ ব্যক্তিকে দেখতে যেও, বন্দী ব্যক্তিকে মুক্ত করার ব্যবস্থা করো। [১]
[১] সহীহ : বুখারী ৫৩৭৩, ৫৬৪৯, আবূ দাঊদ ৩১০৫, আহমাদ ১৯৫১, সুনানুল কুবরা লিল নাসায়ী ৮৬১৮, ইবনু হিব্বান ৩৩২৪, সুনানুল কুবরা লিল বায়হাক্বী ৬৫৭৫।

১৫২৪

সহিহ হাদিস
وَعَنْ أَبِىْ هُرَيْرَةَ قَالَ: قَالَ رَسُولُ اللّهِ ﷺ: «حَقُّ الْمُسْلِمِ عَلَى الْمُسْلِمِ خَمْسٌ: رَدُّ السَّلَامِ وَعِيَادَةُ الْمَرِيْضِ وَاتِّبَاعُ الْجَنَائِزِ وَإِجَابَةُ الدَعْوَةِ وَتَشْمِيْتُ الْعَاطِسِ». (مُتَّفَقٌ عَلَيْهِ)

আবূ হুরায়রাহ্ (রাঃ) থেকে বর্ণিতঃ

তিনি বলেন, রসূলুল্লাহ (সাল্লাল্লাহু ‘আলাইহি ওয়া সাল্লাম) বলেছেনঃ এক মুসলিমের ওপর আর এক মুসলিমের পাঁচটি হাক্ব বর্তায়। (১) সালামের জবাব দেয়া, (২) রোগ হলে দেখতে যাওয়া, (৩) জানাযায় শামিল হওয়া, (৪) দা’ওয়াত গ্রহণ করা ও (৫) হাঁচির জবাব দেয়া। [১]
[১] সহীহ : বুখারী ১২৪০, মুসরিম ২১৬২, আহমাদ ১০৯৬৬, সুনানুল কুবরা লিন নাসায়ী ৯৯৭৮, আমালুল ইওয়ামে ওয়াল লায়লাহ্ ২২১, ইবনু হিব্বান ২৪১, সহীহ আত্ তারগীব ২১৫৬, সহীহ আল জামি‘ ৩১৫০।

১৫২৫

সহিহ হাদিস
وَعَنْ أَبِىْ هُرَيْرَةَ قَالَ: قَالَ رَسُولُ اللّهِ ﷺ: «حَقُّ الْمُسْلِمِ عَلَى الْمُسْلِمِ سِتٌّ» . قِيلَ: مَا هُنَّ يَا رَسُولَ اللّهِ؟ قَالَ: «إِذَا لَقِيتَه فَسَلِّمْ عَلَيْهِ وَإِذَا دَعَاكَ فَأَجِبْهُ وَإِذَا اسْتَنْصَحَكَ فَانْصَحْ لَه وَإِذَا عَطَسَ فَحَمِدَ اللّهَ فَشَمِّتْهُ وَإِذَا مَرِضَ فَعُدْهُ وَإِذَا مَاتَ فَاتَّبِعْهُ» . رَوَاهُ مُسْلِمٌ

আবূ হুরায়রাহ্ (রাঃ) থেকে বর্ণিতঃ

তিনি বলেন, রসূলুল্লাহ (সাল্লাল্লাহু ‘আলাইহি ওয়া সাল্লাম) বলেছেনঃ মুসলিমের ওপর মুসলিমের ছয়টি হাক্ব (অধিকার) আছে। তাঁকে জিজ্ঞেস করা হলো, হে আল্লাহর রসূল! এ অধিকারগুলো কি কি? জবাবে তিনি বলেন, (১) কোন মুসলিমের সাথে দেখা হলে, সালাম দেবে, (২) তোমাকে কেউ দা’ওয়াত দিলে, তা কবূল করবে, (৩) তোমার কাছে কেউ কল্যাণ কামনা করলে তাকে কল্যাণের পরামর্শ দেবে, (৪) হাঁচি দিলে তার জবাব ইয়ারহামুকাল্ল-হ বলবে, (৫) কেউ অসুস্থ হয়ে পড়লে তাকে দেখতে যাবে, (৬) কারো মৃত্যু ঘটলে তার জানাযায় শারীক হবে। [১]
[১] সহীহ : মুলিম ২১৬২, আহমাদ ৮৮৪৫, সুনানুল কুবরা লিল বায়হাক্বী ১০৯০৯, শু‘আবুল ঈমান ৮৭৩৭, শারহুস্ সুন্নাহ্ ১৪০৫, সহীহ আদাবুল মুফরাদ ৯৯১, সহীহ আত্ তারগীব ৩৪৯৪, সহীহ আল জামি‘ ৩১৫১।

১৫২৬

সহিহ হাদিস
وَعَنِ الْبَرَاءِ بْنِ عَازِبٍ قَالَ: أَمَرَنَا النَّبِيُّ ﷺ بِسَبْعٍ وَنَهَانَا عَنْ سَبْعٍ أَمَرَنَا: بِعِيَادَةِ الْمَرِيضِ وَاتِّبَاعِ الْجَنَائِزِ وَتَشْمِيتِ الْعَاطِسِ وَرَدِّ السَّلَامِ وَإِجَابَةِ الدَّاعِىْ وَإِبْرَارِ الْمُقْسِمِ وَنَصْرِ الْمَظْلُومِ وَنَهَانَا عَنْ خَاتَمِ الذَّهَبِ وَعَنِ الْحَرِيرِ والْإِسْتَبْرَقِ وَالدِّيبَاجِ وَالْمِيْثَرَةِ الْحَمْرَاءِ وَالْقَسِّيِّ وَانِيَةِ الْفِضَّةِ وَفِىْ رِوَايَةٍ وَعَنِ الشُّرْبِ فِي الْفِضَّةِ فَإِنَّه مَنْ شَرِبَ فِيهَا فِي الدُّنْيَا لَمْ يَشْرَبْ فِيْهَا فِي الْاخِرَةِ. (مُتَّفَقٌ عَلَيْهِ)

বারা ইবনু ‘আযিব (রাঃ) থেকে বর্ণিতঃ

তিনি বলেন, নাবী (সাল্লাল্লাহু ‘আলাইহি ওয়া সাল্লাম) আমাদেরকে সাতটি আদেশ ও সাতটি কাজ করতে নিষেধ করেছেন। তিনি আমাদেরকে আদেশ করেছেন- (১) রোগীর খোঁজ-খবর নিতে, (২) জানাযায় শারীক হতে, (৩) হাঁচির আলহামদুলিল্লা-হ’র জবাবে ইয়ারহামুকাল্ল-হ বলতে, (৪) সালামের জবাব দিতে, (৫) দা’ওয়াত দিলে তা কবূল করতে, (৬) কসম করলে তা পূর্ণ করতে, (৭) মাযলূমের সাহায্য করতে। এভাবে তিনি আমাদেরকে (১) সোনার আংটি পরতে, (২) রেশমের পোশাক, (৩) ইস্তিবরাক [মোটা রেশম], (৪) দীবাজ [পাতলা রেশম] পরতে, (৫) লাল নরম গদীতে বসতে, (৬) ক্বাস্সী ও (৭) রূপার পাত্র ব্যবহার করতে। কোন কোন বর্ণনায়, রূপার পাত্রে পান করতে নিষেধ করেছেন। কেননা যে ব্যক্তি দুনিয়াতে রূপার পাত্রে পান করবে আখিরাতে সে তাতে পান করতে পারবে না। [১]
[১] সহীহ : বুখারী ১২৩৯, ২৪৪৫, ৫১৭৫, ৫৬৩৫, ৫৬৫০, ৫৮৪৯, ৬২২২, মুসলিম ২০৬৬, আত্ তিরযিমী ২৮০৯, নাসায়ী ১৯৩৯, ৫৩০৯, আহমাদ ১৮৫০৪, সহীহ আদাবুল মুফরাদ ৯২৪, সুনানুল কুবরা লিল নাসায়ী ২০৭৭, সুনানুল কুবরা লিল বায়হাক্বী ৫৮৪৬।

১৫২৭

সহিহ হাদিস
وَعَنْ ثَوْبَانَ قَالَ: قَالَ رَسُولُ اللّهِ ﷺ: «إِنَّ الْمُسْلِمَ إِذَا عَادَ أَخَاهُ الْمُسْلِمَ لَمْ يَزَلْ فِىْ خُرْفَةِ الْجَنَّةِ حَتّى يَرْجِعَ» . رَوَاهُ مُسْلِمٌ

সাওবান (রাঃ) থেকে বর্ণিতঃ

তিনি বলেন, রসূলুল্লাহ (সাল্লাল্লাহু ‘আলাইহি ওয়া সাল্লাম) বলেছেনঃ কোন মুসলিম তার অসুস্থ কোন মুসলিম ভাইকে দেখার জন্য চলতে থাকে, সে ফিরে আসা পর্যন্ত জান্নাতের ফল আহরণ করতে থাকে ৷ [১]
[১] সহীহ : মুসলিম ২৫৬৮, আত্ তিরমিযী ৯৬৭, আহমাদ ২২৪৪৪, ইবনু হিব্বান ২৯৫৭, সহীহ আত্ তারগীব ৩৪৭৫, সহীহ আল জামি‘ ১৯৪৮।

১৫২৮

সহিহ হাদিস
وَعَنْ أَبِىْ هُرَيْرَةَ قَالَ: قَالَ رَسُولُ اللّهِ ﷺ: «إِنَّ اللهَ عَزَّ وَجَلَّ يَقُوْلُ يَوْمَ الْقِيَامَةِ: يَا ابْنَ ادَمَ مَرِضْتُ فَلَمْ تَعُدْنِىْ قَالَ: يَا رَبِّ كَيْفَ أَعُوْدُكَ وَأَنْتَ رَبُّ الْعَالَمِينَ؟ قَالَ: أَمَّا عَلِمْتَ أَنَّ عَبْدِىْ فُلَانًا مَرِضَ فَلَمْ تَعُدْهُ؟ أَمَا عَلِمْتَ أَنَّكَ لَوْ عُدْتَه لَوَجَدْتَنِىْ عِنْدَه؟ يَا ابْنَ ادَمَ اسْتَطْعَمْتُكَ فَلَمْ تُطْعِمْنِىْ قَالَ: يَا رَبِّ كَيْفَ أُطْعِمُكَ وَأَنْتَ رَبُّ الْعَالَمِينَ؟ قَالَ: أَمَا عَلِمْتَ أَنَّهُ اسْتَطْعَمَكَ عَبْدِىْ فُلَانٌ فَلَمْ تُطْعِمْهُ؟ أَمَا عَلِمْتَ أَنَّكَ لَوْ أَطْعَمْتَهُ لَوَجَدْتَ ذلِكَ عِنْدِىْ؟ يَا ابْنَ ادَمَ اسْتَسْقَيْتُكَ فَلَمْ تَسْقِنِىْ قَالَ: يَا رَبِّ كَيْفَ أَسْقِيكَ وَأَنْتَ رَبُّ الْعَالَمِينَ؟ قَالَ: اسْتَسْقَاكَ عَبْدِىْ فُلَانٌ فَلَمْ تَسْقِه أَمَا إِنَّك لَوْ سَقَيْتَه لَوَجَدْتَ ذلِكَ عِنْدِىْ». رَوَاهُ مُسْلِمٌ

আবূ হুরায়রাহ্ (রাঃ) থেকে বর্ণিতঃ

তিনি বলেন, রসূলুল্লাহ (সাল্লাল্লাহু ‘আলাইহি ওয়া সাল্লাম) বলেছেনঃ আল্লাহ তা’আলা কিয়ামতের দিন বলবেন, হে বনী আদাম! আমি অসুস্থ ছিলাম। তুমি আমাকে দেখতে আসোনি। সে বলবে, হে আমার রব! আমি তোমাকে কিভাবে দেখতে যাব? তুমি তো বিশ্বজাহানের রব! আল্লাহ বলবেন, তুমি কি জানতে না যে, আমার অমুক বান্দা অসুস্থ ছিল? তুমি তাকে দেখতে যাওনি। তুমি কি জানতে না যে, তুমি যদি তাকে দেখতে যেতে, আমাকে অবশ্যই তার কাছে পেতে। হে আদাম সন্তান! আমি তোমার কাছে খাবার চেয়েছিলাম। তুমি আমাকে খাবার দাওনি। সে বলবে, হে আমার রব! আমি তোমাকে কিভাবে খাবার দিতাম? তুমি তো বিশ্বজাহানের রব। আল্লাহ বলবেন, তুমি কি জানো না, আমার অমুক বান্দা তোমার কাছে খাবার চেয়েছিল? তুমি তাকে খাবার দাওনি। তুমি কি জানতে না যে, সে সময় যদি তুমি তাকে খাবার দিতে তাহলে তা এখন আমার কাছে পেতে? হে বনী আদাম! আমি তোমার কাছে পিপাসা নিবারণের জন্য পানি চেয়েছিলাম। তুমি পানি দিয়ে তখন আমার পিপাসা নিবারণ করোনি। সে বলবে, হে আমার রব! আমি কিভাবে তোমার পিপাসা নিবারণ করতাম? তুমি তো বিশ্বজাহানের রব। আল্লাহ বলবেন, আমার অমুক বান্দা তোমার কাছে পানি চেয়েছিল, তুমি তখন তাকে পানি দাওনি। যদি তুমি সে সময় তাকে পানি দিতে, তাহলে তা এখন আমার কাছে পেতে। [১]
[১] সহীহ : মুসলিম ২৫৬৯, ইবনু হিব্বান ৯৪৪, সহীহ আদাবুল মুফরাদ ৫১৭, সহীহ আত্ তারগীব ৯৫২, সহীহ আল জামি‘ আস্ সগীর ১৯১৬।

১৫৩০

সহিহ হাদিস
وَعَنْ عَائِشَةَ رَضِيَ اللّهُ عَنْهَا قَالَتْ: كَانَ رَسُولُ اللّهِ ﷺ إِذَا اشْتَكى مِنَّا إِنْسَانٌ مَسَحَه بِيَمِينِه ثُمَّ قَالَ: «أَذْهِبِ الْبَاسَ رَبَّ النَّاسِ وَاشْفِ أَنْتَ الشَّافِىْ لَا شِفَاءَ إِلَّا شِفَاؤُكَ شِفَاءٌ لَا يُغَادِرُ سَقَمًا». (مُتَّفَقٌ عَلَيْهِ)

‘আয়িশাহ্ (রাঃ) থেকে বর্ণিতঃ

তিনি বলেন, আমাদের কারো অসুখ হলে রসূলুল্লাহ (সাল্লাল্লাহু ‘আলাইহি ওয়া সাল্লাম) তাঁর ডান হাত রুগীর গায়ে বুলিয়ে দিয়ে বলতেন, হে মানুষের রব! এ ব্যক্তির রোগ দূর করে দিন৷ তাকে নিরাময় করে দিন৷ নিরাময় করার মালিক আপনিই৷ আপনার নিরাময় ছাড়া আর কোনো নিরাময় নেই৷ এমন নিরাময় যা কোন রোগকে বাকী রাখে না৷ [১]
[১] সহীহ : বুখারী ৫৭৫০, মুসলিম ২১৯১, ইবনু মাজাহ্ ৩৫২০, ইবনু আবী শায়বাহ্ ২৯৪৯০, আহমাদ ২৪৭৭৬, সুনানুল কুবরা লিল নাসায়ী ৭৪৬৬, ইবনু হিব্বান ২৯৭১, সুনানুল কুবরা লিল বায়হাক্বী ৬৫৯০, শারহুস্ সুন্নাহ্ ১৪১৩, আল কালিমুত্ব ত্বইয়্যিব ১৪৮, সহীহ আল জামি‘ আস্ সগীর ১৩০৩।

১৫৩১

সহিহ হাদিস
وَعَنْ عَائِشَةَ رَضِيَ اللّهُ عَنْهَا قَالَتْ: كَانَ إِذَا اشْتَكَى الْإِنْسَانُ الشَّيْءَ مِنْهُ أَوْ كَانَتْ بِه قَرْحَةٌ أَوْ جُرْحٌ قَالَ النَّبِيُّ ﷺ بِأُصْبُعِه: «بِسْمِ اللّهِ تُرْبَةُ أَرْضِنَا بِرِيقَةِ بَعْضِنَا لِيُشْفى سَقِيْمُنَا بِإِذْنِ رَبِّنَا». (مُتَّفَقٌ عَلَيْهِ)

‘আয়িশাহ্ (রাঃ) থেকে বর্ণিতঃ

তিনি বলেন, কোন মানুষ তার দেহের কোন অংশে ব্যথা পেলে অথবা কোথাও ফোড়া কিংবা বাঘী উঠলে বা আহত হলে আল্লাহর নাবী (সাল্লাল্লাহু ‘আলাইহি ওয়া সাল্লাম) ঐ স্থানে তাঁর আঙ্গুল বুলাতে বুলাতে বলতেন, “বিসমিল্লা-হি তুরবাতু আরযিনা- বিরীক্বাতি বা’যিনা- লিইউশ্ফা- সাক্বীমুনা- বিইযনি রব্বিনা-” (অর্থাৎ আল্লাহর নামে আমাদের জমিনের মাটি আমাদের কারো মুখের থুথুর সাথে মিশে আমাদের রোগীকে ভালো করবে, আমাদের মহান রবের নির্দেশে) ৷ [১]
[১] সহীহ : বুখারী ৫৭৪৫, মুসলিম ২১৯৪, ইবনু মাজাহ্ ৩৫২১, ইবনু আবী শায়বাহ্ ২৩৫৬৯, আবূ দাঊদ ৩৮৯৫, ইবনু হিব্বান ২৯৭৩, মুসতাদরাক লিল হাকিম ৮২৬৬, শারহুস্ সুন্নাহ্ ১৪১৪, আল কালিমুত্ব ত্বইয়্যিব।

১৫৩২

সহিহ হাদিস
وَعَنْ عَائِشَةَ رَضِيَ اللّهُ عَنْهَا قَالَتْ: كَانَ النَّبِيُّ ﷺ إِذَا اشْتَكى نَفَثَ عَلى نَفْسِه بِالْمُعَوِّذَاتِ وَمَسَحَ عَنْهُ بِيَدِه فَلَمَّا اشْتَكى وَجَعَهُ الَّذِىْ تُوُفِّيَ فِيهِ كُنْتُ أَنْفِثُ عَلَيْهِ بِالْمُعَوِّذَاتِ الَّتِىْ كَانَ يَنْفِثُ وَأَمْسَحُ بِيَدِ النَّبِيِّ ﷺ. (مُتَّفَقٌ عَلَيْهِ) وَفِىْ رِوَايَةٍ لِمُسْلِمٍ قَالَتْ: كَانَ إِذَا مَرِضَ أَحَدٌ مِنْ أَهْلِ بَيْتِه نَفَثَ عَلَيْهِ بِالْمُعَوِّذَاتِ

‘আয়িশাহ্ (রাঃ) থেকে বর্ণিতঃ

তিনি বলেন, নাবী সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম অসুস্থ হলে (مُعَوِّذَاتِ) ‘‘মু‘আবিবযা-ত’’ অর্থাৎ সূরাহ্ আন্ নাস ও সূরাহ্ আল ফালাক্ব পড়ে নিজের শরীরের উপর ফুঁ দিতেন এবং নিজের হাত দিয়ে শরীর মুছে ফেলতেন। তিনি মৃত্যুজনিত রোগে আক্রান্ত হলে আমি মু‘আবিবযাত পড়ে তাঁর শরীরে ফুঁ দিতাম, যেসব মু‘আবিবযাত পড়ে তিনি নিজে ফুঁ দিতেন। তবে আমি নাবী সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম-এর হাত দিয়েই তাঁর শরীর মুছে দিতাম। (বুখারী, মুসলিম)[১]

মুসলিমের এক বর্ণনায় আছে, ‘আয়িশাহ্ (রাঃ) বলেছেন, তাঁর পরিবারের কেউ অসুস্থ হলে তিনি ‘‘মু‘আবিবযাত’’ পড়ে তার গায়ে ফুঁ দিতেন।
[১] সহীহ : বুখারী ৪৪৩৯, মুসলিম ২১৯২, ইবনু হিব্বান ৬৫৯০, সহীহ আল জামি‘ আস্ সগীর ৪৬৭৩।

১৫২৯

সহিহ হাদিস
وَعَنِ ابْنِ عَبَّاسٍ: أَنَّ النَّبِيَّ ﷺ دَخَلَ عَلَى اعْرَابِيٍّ يَعُودُه وَكَانَ إِذَا دَخَلَ عَلى مَرِيضٍ يَعُودُه قَالَ: «لَا بَأْسَ طَهُوْرٌ إِنْ شَآءَ اللّهُ» فَقَالَ لَه: «لَا بَأْسَ طَهُوْرٌ إِنْ شَآءَ اللّهُ» . قَالَ: كَلَّا بَلْ حُمّى تَفُوْرُ عَلى شَيْخٍ كَبِيْرٍ تَزِيْرُهُ الْقُبُوْرُ. فَقَالَ: «فَنَعَمْ إِذَنْ» . رَوَاهُ البُخَارِيُّ

আবদুল্লাহ ইবনু ‘আব্বাস (রাঃ) থেকে বর্ণিতঃ

তিনি বলেন, নাবী (সাল্লাল্লাহু ‘আলাইহি ওয়া সাল্লাম) একবার একজন অসুস্থ বেদুইনকে দেখতে গেলেন। আর কোনো রোগীকে দেখতে গেলে তিনি বলতেন, ‘ভয় নেই, আল্লাহ চান তো তুমি খুব শীঘ্রই ভালো হয়ে যাবে। এ রোগ তোমার পবিত্র হবার কারণ হয়ে দাঁড়াবে।’ এ নিয়ম অনুযায়ী তিনি বেদুঈনকে সান্ত্বনা দিয়ে বললেন, ‘ভয় নেই, তুমি ভালো হয়ে যাবে। আল্লাহর ইচ্ছায় এটা তোমার পবিত্র হবার কারণ হয়ে যাবে।’ তাঁর কথা শুনে বেদুঈন বলল, কক্ষনো নয়। বরং এটা এমন এক জ্বর, যা একজন বৃদ্ধ লোকের শরীরে ফুঁটছে। এটা তাকে কবরে নিয়ে ছাড়বে। তার কথা শুনে এবার নাবী (সাল্লাল্লাহু ‘আলাইহি ওয়া সাল্লাম) বললেন, আচ্ছা, তুমি যদি তাই বুঝে থাক তবে তোমার জন্য তা-ই হবে। [১]
[১] সহীহ : বুখারী ৩৬১৬, ৫৬৫৬, ৫৬৬২, ইবনু হিব্বান ২৯৫৯, শারহুস্ সুন্নাহ্ ১৪১২, সহীহ আল জামি‘ আস্ সগীর ৪৭১৮।

১৫৩৩

সহিহ হাদিস
وَعَنْ عُثْمَانَ بْنِ أَبِي الْعَاصِ أَنَّه شَكَا إِلى رَسُولِ اللّهِ ﷺ وَجَعًا يَجِدُه فِي جَسَدِه فَقَالَ لَه رَسُولُ اللّهِ ﷺ: «ضَعْ يَدَكَ عَلَى الَّذِىْ يَأْلَمُ مِنْ جَسَدِكَ وَقُلْ: بِسْمِ اللّهِ ثَلَاثًا وَقُلْ سَبْعَ مَرَّاتٍ: أَعُوذُ بِعِزَّةِ اللّهِ وَقُدْرَتِه مِنْ شَرِّ مَا أَجِدُ وَأُحَاذِرُ». قَالَ: فَفَعَلْتُ فَأَذْهَبَ اللّهُ مَا كَانَ بِىْ. رَوَاهُ مُسْلِمٌ

‘উসমান ইবনু আবুল ‘আস (রাঃ) থেকে বর্ণিতঃ

তিনি বলেন, একবার তিনি রসূলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম-এর কাছে তাঁর শরীরে অনুভূত একটি ব্যথার কথা জানালেন। এ কথা শুনে আল্লাহর নাবী সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম তাঁকে বললেন, যে জায়গায় তুমি ব্যথা অনুভব করো সেখানে তোমার হাত রাখো। তারপর তিনবার ‘‘বিসমিল্লা-হ’’ (অর্থাৎ আল্লাহর নামে) আর সাতবার বলো, ‘‘আ‘ঊযু বি‘ইযযাতিল্ল-হি ওয়া কুদ্‌রাতিহী মিন্ শার্‌রি মা- আজিদু ওয়াউহা-যির’’ (অর্থাৎ আমি আল্লাহর সম্মান ও তাঁর ক্ষমতার আশ্রয় নিচ্ছি, যা আমি অনুভব করছি ও আশংকা করছি তাঁর ক্ষতি হতে)।

‘উসমান ইবনু আবুল ‘আস বলেন, আমি তা করলাম। ফলে আমার শরীরে যে ব্যথা-বেদনা ছিল তা আল্লাহ দূর করে দিলেন। (মুসলিম)[১]
[১] সহীহ : মুসলিম ২২০২, আবূ দাঊদ ৩৮৯১, আত্ তিরমিযী ২০৮০, ইবনু মাজাহ্ ৩৫২২, মুয়াত্ত্বা মালিক ৭৪২, ইবনু আবী শায়বাহ্ ২৩৫৮৩, আহমাদ ১৬২৬৮, ইবনু হিব্বান ২৯৬৫, মুসতাদরাক লিল হাকিম ১২৭১, শারহুস্ সুন্নাহ্ ১৪১৭, আল কালিমুত্ব ত্বইয়্যিব ১৪৯, সিলসিলাহ্ আস্ সহীহাহ্ ১২৫৮, সহীহ আত্ তারগীব ৩৪৫৩, সহীহ আল জামি‘ ৩৪৬।

১৫৩৪

সহিহ হাদিস
وَعَنْ أبىْ سَعِيْدِ الْخُدْرِيّ أَن جِبْرِيْلَ أَتَى النَّبِيَّ ﷺ فَقَالَ: يَا مُحَمَّدُ أَشْتَكَيْتَ؟ فَقَالَ: «نَعَمْ» . قَالَ: بِسْمِ اللّهِ أَرْقِيْكَ مِنْ كُلِّ شَيْءٍ يُؤْذِيْكَ مِنْ شَرِ كُلِّ نَفْسٍ أَوْ عَيْنِ حَاسِدٍ اللّهُ يَشْفِيكَ بِسْمِ اللهِ أَرْقِيْكَ. رَوَاهُ مُسْلِمٌ

আবূ সা‘ঈদ আল্ খুদরী (রাঃ) থেকে বর্ণিতঃ

একবার জিবরীল (আঃ) নাবী সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম-এর কাছে এসে বললেন, হে মুহাম্মাদ! আপনি কি অসুস্থতা বোধ করছেন? জবাবে তিনি বললেন, হ্যাঁ! জিবরীল (আঃ) বললেন, আপনাকে কষ্ট দেয় এমন সব বিষয়ে আল্লাহর নামে আপনাকে ঝাড়ফুঁক দিচ্ছি প্রত্যেক ব্যক্তির অকল্যাণ হতে। অথবা তিনি বলেছেন, প্রত্যেক বিদ্বেষী চোখের অকল্যাণ হতে। আল্লাহ আপনাকে আরোগ্য করুন। আল্লাহর নামে আপনাকে ঝাড়ছি। (মুসলিম)[১]
[১] সহীহ : মুসলিম ২১৮৬, আত্ তিরমিযী ৯৭২, ইবনু মাজাহ্ ৩৫২৩, সুনানুল কুবরা লিন নাসায়ী ১০৭৭৭, সহীহ আল জামি‘ আস্ সগীর ৭০।

১৫৩৬

সহিহ হাদিস
وَعَنْ أَبِىْ هُرَيْرَةَ قَالَ: قَالَ رَسُولُ اللّهِ ﷺ: «مَنْ يُرِدِ اللّهُ بِه خَيْرًا يُصِبْ مِنْهُ» . رَوَاهُ البُخَارِيُّ

আবূ হুরায়রাহ্ (রাঃ) থেকে বর্ণিতঃ

তিনি বলেন, রসূলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম বলেছেনঃ আল্লাহ যার কল্যাণ চান তাকে বিপদগ্রস্ত করেন। (বুখারী)[১]
[১] সহীহ : বুখারী ৫৬৪৫, মুয়াত্ত্বা মালিক ৭৪০, আহমাদ ৭২৩৫, সুনানুল কুবরা লিন নাসায়ী ৭৪৩৬, ইবনু হিব্বান ২৯০৭, শু‘আবুল ঈমান ৯৩২৩, সহীহ আত্ তারগীব ৩৪০৫, সহীহ আলুজামি‘ আস্ সগীর ৬৬১০।

১৫৩৫

সহিহ হাদিস
وَعَنِ ابْنِ عَبَّاسٍ قَالَ: كَانَ رَسُولُ اللّهِ ﷺ يُعَوِّذُ الْحَسَنَ وَالْحُسَيْنَ: «أُعِيْذُكُمَا بِكَلِمَاتِ اللّهِ التَّامَّةِ مِنْ كُلِّ شَيْطَانٍ وَهَامَّةٍ وَمِنْ كُلِّ عَيْنٍ لَامَّةٍ» وَيَقُولُ: «إِنَّ أَبَاكُمَا كَانَ يُعَوِّذُ بِهِمَا إِسْمَاعِيلَ وَإِسْحَاقَ» . رَوَاهُ الْبُخَارِيُّ وَفِي أَكْثَرِ نُسَخِ الْمَصَابِيْحِ: «بِهِمَا» عَلى لَفْظِ التَّثْنِيَةِ

‘আবদুল্লাহ ইবনু ‘আব্বাস (রাঃ) থেকে বর্ণিতঃ

তিনি বলেন, রসূলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম হাসান ও হুসায়ন (রাঃ)-কে এ ভাষায় দু‘আ করে আল্লাহর হাতে সোপর্দ করতেন। তিনি বলতেন, ‘আমি আল্লাহর পরিপূর্ণ কালিমার মাধ্যমে প্রত্যেক শায়ত্বনের (শয়তানের) অনিষ্ট হতে, প্রত্যেক ধ্বংসকারী হিংস্র জন্তু জানোয়ারের ধ্বংস হতে, প্রত্যেক কুদৃষ্টিসম্পন্ন চোখ হতে তোমাদেরকে আল্লাহর আশ্রয়ে সোপর্দ করছি। তিনি আরো বলতেন, তোমাদের পিতা ইব্রাহীম (আঃ) এ কালিমার দ্বারা তাঁর সন্তান ইসমা‘ঈল ও ইসহককে আল্লাহর কাছে সোপর্দ করতেন। বুখারী; মাসাবীহ সংস্করণের অধিকাংশ স্থানে ‘বিহা’ শব্দের জায়গায় بهما (বিহিমা-) শব্দ ব্যবহার করা হয়েছে দ্বিবচন শব্দে।[১]
[১] সহীহ : বুখারী ৩৩৭১, আবূ দাঊদ ৪৭৩৭, আত্ তিরমিযী ২০৬০, ইবনু মাজাহ্ ৩৫২৫, ইবনু আবী শায়বাহ্ ২৩৫৭৭, আহমাদ ২১১২, সুনানুল কুবরা লিন নাসায়ী ১০৭৭৮, ইবনু হিব্বান ১০১৩, মুসতাদরাক লিল হাকিম ৪৭৮১, শারহুস্ সুন্নাহ্ ১৪১৭, আল কালিমুত্ব ত্বইয়্যিব ১৪৬।

১৫৩৭

সহিহ হাদিস
وَعَن أبىْ هُرَيْرَة وَأبي سَعِيدٍ عَنِ النَّبِيِّ ﷺ قَالَ: «مَا يُصِيْبُ الْمُسْلِمَ مِنْ نَصَبٍ وَلَا وَصَبٍ وَلَا هَمٍّ وَلَا حُزْنٍ وَلَا أَذًى وَلَا غَمٍّ حَتَّى الشَّوْكَةُ يُشَاكُهَا إِلَّا كَفَّرَ اللّهُ بهَا مِنْ خَطَايَاهُ». (مُتَّفق عَلَيْهِ)

আবূ হুরায়রাহ্ (রাঃ) ও আবূ সা‘ঈদ আল্ খুদরী (রাঃ) থেকে বর্ণিতঃ

নাবী (সাল্লাল্লাহু ‘আলাইহি ওয়া সাল্লাম) বলেন, মুসলিমের ওপর এমন কোন বিপদ আসে না, কোন রোগ, কোন ভাবনা, কোন চিন্তা, কোন দুঃখ-কষ্ট হয় না, এমনকি তার গায়ে একটি কাঁটাও ফুটে না, যার দ্বারা আল্লাহ তার গুনাহগুলো মাফ না করেন। [১]
[১] সহীহ : বুখারী ৫৬৪১, মুসলিম ২৫৭২, আহমাদ ৮০২৭, ইবনু হিব্বান ২৯০৫, শারহুস্ সুন্নাহ্ ১৪২১, সহীহ আদাবুল মুফরাদ ৪৯২, সহীহ আত্ তারগীব ৩৪১৩, সহীহ আল জামি‘ আস্ সগীর ৫৮১৮।

১৫৩৮

সহিহ হাদিস
وَعَنْ عَبْدِ اللّهِ بْنِ مَسْعُودٍ قَالَ: دَخَلْتُ عَلَى النَّبِيِّ ﷺ وَهُوَ يُوعَكُ فَمَسِسْتُه بِيَدِىْ فَقُلْتُ: يَا رَسُولَ اللّهِ إِنَّكَ لَتُوعَكُ وَعْكًا شَدِيدًا. فَقَالَ النَّبِيُّ ﷺ: «أَجَلْ إِنِّىْ أُوعَكُ كَمَا يُوعَكُ رَجُلَانِ مِنْكُمْ» . قَالَ: فَقُلْتُ: ذلِكَ لِأَنَّ لَكَ أَجْرَيْنِ؟ فَقَالَ: «أَجَلْ» . ثُمَّ قَالَ: «مَا مِنْ مُسْلِمٍ يُصِيبُه أَذًى مِنْ مَرَضٍ فَمَا سِوَاهُ إِلَّا حَطَّ اللّهُ تَعَالى بِه سَيِّئَاتِه كَمَا تَحُطُّ الشَّجَرَةُ وَرَقَهَا». (مُتَّفَقٌ عَلَيْهِ)

‘আবদুল্লাহ ইবনু মাস্‘ঊদ (রাঃ) থেকে বর্ণিতঃ

তিনি বলেন, একবার আমি নাবী (সাল্লাল্লাহু ‘আলাইহি ওয়া সাল্লাম) -এর কাছে গেলাম। তিনি সে সময় জ্বরে ভুগছিলেন। আমি আমার হাত দিয়ে তাঁকে স্পর্শ করলাম এবং বললাম, হে আল্লাহর রসূল! আপনার তো বেশ জ্বর। জবাবে তিনি বললেন, হ্যাঁ, তোমাদের দু’জনে যা ভোগ করে আমি তা ভুগছি। ‘আবদুল্লাহ ইবনু মাসউদ (রাঃ) বলেন, আমি বললাম, এর কারণ, আপনার জন্য দু’গুণ পুরস্কার রয়েছে? রসূলুল্লাহ (সাল্লাল্লাহু ‘আলাইহি ওয়া সাল্লাম) বললেনঃ হ্যাঁ। তারপর রসূলুল্লাহ (সাল্লাল্লাহু ‘আলাইহি ওয়া সাল্লাম) বললেনঃ কোন মুসলিমের প্রতি যে কোন কষ্ট পৌঁছে থাক না কেন চাই তা রোগ হোক বা অপর কিছু হোক আল্লাহ তা’আলা তা দ্বারা তার গুনাহসমূহ ঝেড়ে দেন যেভাবে গাছ তার পাতা ঝাড়ে। [১]
[১] সহীহ : বুখারী ৫৬৪৮, ৫৬৬০, ৫৬৬৭, মুসলিম ২৫৭১, ইবনু আবী শায়বাহ্ ১০৮০০, আহমাদ ৩৬১৮, দারিমী ২৮১৩, সুনানুল কুবরা লিন নাসায়ী ৭৪৬১, ইবনু হিব্বান ২৯৩৭, সুনানুল কুবরা লিল বায়হাক্বী ১৩৪১৬, শারহুস্ সুন্নাহ্ ১৪৩১, সহীহ আত্ তারগীব ৩৪৩২, সহীহ আল জামি‘ আস্ সগীর ৫৭০৩।

১৫৩৯

সহিহ হাদিস
وَعَنْ عَائِشَةَ رَضِيَ اللّهُ عَنْهَا قَالَتْ: مَا رَأَيْتُ أَحَدًا الْوَجَعُ عَلَيْهِ أَشَدُّ مِنْ رَسُولِ اللّهِ ﷺ. (مُتَّفَقٌ عَلَيْهِ)

‘আয়িশাহ্ (রাঃ) থেকে বর্ণিতঃ

তিনি বলেন, আমি রসূলুল্লাহ (সাল্লাল্লাহু ‘আলাইহি ওয়া সাল্লাম) হতে বেশী রোগ যন্ত্রণায় কষ্ট পেতে হয়েছে এমন কাউকে দেখিনি। [১]
[১] সহীহ : বুখারী ৫৬৪৬, মুসলিম ২৫৭০, ইবনু মাজাহ্ ১৬২২।

১৫৪১

সহিহ হাদিস
وَعَنْ كَعْبِ بْنِ مَالِكٍ قَالَ: قَالَ رَسُولُ اللّهِ ﷺ: «مَثَلُ الْمُؤْمِنِ كَمَثَلِ الْخَامَةِ مِنَ الزَّرْعِ تُفَيِّئُهَا الرِّيَاحُ تَصْرَعُهَا مَرَّةً وَتَعْدِلُهَا أُخْرى حَتّى يَأْتِيهِ أَجَلُه وَمَثَلُ الْمُنَافِقِ كَمَثَلِ الْأَرْزَةِ الْمُجْذِيَةِ الَّتِي لَا يُصِيْبُهَا شَيْءٌ حَتّى يَكُوْنَ انْجِعَافُهَا مَرَّةً وَاحِدَةً». (مُتَّفَقٌ عَلَيْهِ)

কা‘ব ইবনু মালিক (রাঃ) থেকে বর্ণিতঃ

তিনি বলেন, রসূলুল্লাহ (সাল্লাল্লাহু ‘আলাইহি ওয়া সাল্লাম) বলেছেনঃ মু’মিনের দৃষ্টান্ত হলো, ক্ষেতের তরতাজা ও কোমল শস্য শাখার মতো, যাকে বাতাস এদিক-ওদিক ঝুঁকিয়ে ফেলে। একবার এদিকে কাত করে। আবার সোজা করে দেয়। এভাবে তার আয়ু শেষ হয়ে যায়। আর মুনাফিকের দৃষ্টান্ত হলো শক্তভাবে দাঁড়িয়ে থাকা পিপুল গাছের মতো। একেবারে ভূমিতে উপড়ে পড়ার আগে এ গাছে ঝটকা লাগে না। [১]
[১] সহীহ : বুখারী ৫৬৪৪, ৫৬৪৩, মুসলিম ২৮১০, ইবনু আবী শায়বাহ্ ৩৪৪১২, আহমাদ ১৫৭৬৯, সিলসিলাহ্ আস্ সহীহাহ্ ২২৮৩, সহীহ আত্ তারগীব ৩৩৯৯, সহীহ আল জামি‘ আস্ সগীর ৫৮৪১।

১৫৪০

সহিহ হাদিস
وَعَنْ عَائِشَةَ رَضِيَ اللّهُ عَنْهَا قَالَتْ: مَاتَ النَّبِيُّ ﷺ بَيْنَ حَاقِنَتِىْ وَذَاقِنَتِىْ فَلَا أَكْرَه شِدَّةَ الْمَوْتِ لِأَحَدٍ أَبَدًا بَعْدَ النَّبِيَّ ﷺ. رَوَاهُ الْبُخَارِيُّ

‘আয়িশাহ্ (রাঃ) থেকে বর্ণিতঃ

তিনি বলেন, নাবী (সাল্লাল্লাহু ‘আলাইহি ওয়া সাল্লাম) আমার বুক ও চিবুকের মাঝে মাথা রেখে মৃত্যুবরণ করেছেন। তাই নাবী (সাল্লাল্লাহু ‘আলাইহি ওয়া সাল্লাম) –এর পর আর কারো মৃত্যু যন্ত্রণাকে আমি খারাপ মনে করি না। [১]
[১] সহীহ : বুখারী ৪৪৪৬, নাসায়ী ১৮৩০, আহমাদ ২৪৩৫৫৪, সুনানুল কুবরা লিন নাসায়ী ১৯৬৯, শারহুস্ সুন্নাহ্ ৩৮২৭।

১৫৪৩

সহিহ হাদিস
وَعَنْ جَابِرٍ قَالَ: دَخَلَ رَسُوْلِ اللّهِ ﷺ عَلَى اُمِّ السَّائِبِ فَقَالَ: «مَالَكِ تُزَفْزِفِينَ؟» . قَالَتِ: الْحُمّى لَا بَارَكَ اللّهُ فِيهَا فَقَالَ: «لَا تَسُبِّي الْحُمّى فَإِنَّهَا تُذْهِبُ خَطَايَا بَنِىْ ادَمَ كَمَا يُذْهِبُ الْكِيْرُ خَبَثَ الْحَدِيْدِ» . رَوَاهُ مُسْلِمٌ

জাবির (রাঃ) থেকে বর্ণিতঃ

তিনি বলেন, একবার রসূলুল্লাহ (সাল্লাল্লাহু ‘আলাইহি ওয়া সাল্লাম) উম্মু সায়িব (রাঃ) -এর কাছে গেলেন। তাঁকে তিনি জিজ্ঞেস করলেন, তোমার কি হয়েছে? তুমি কাঁদছো কেন? উম্মু সায়িব (রাঃ) বলল, আমার জ্বর বেড়েছে। আল্লাহ এর ভাল না করুন। তার কথা শুনে তিনি (সাল্লাল্লাহু ‘আলাইহি ওয়া সাল্লাম) বললেন, জ্বরকে গালি দিও না। কারণ জ্বর বানী আদামের গুনাহগুলো এভাবে দূর করে দেয়, যেভাবে হাপর লোহার মরিচ দূর করে। [১]
[১] সহীহ : মুসলিম ২৫৭৫, সুনানুল কুবরা লিল বায়হাক্বী ৬৫৬১, সিলসিলাহ্ আস্ সহীহাহ্ ৭১৫, সহীহ আত্ তারগীব ৩৪৩৭, সহীহ আল জামি‘ আস্ সগীর ৭৩২১।

১৫৪৫

সহিহ হাদিস
وَعَنْ أَنَسٍ قَالَ: قَالَ رَسُولُ اللّهِ ﷺ: «الطَّاعُونُ شَهَادَةٌ لِكُلِّ مُسْلِمٍ». (مُتَّفَقٌ عَلَيْهِ)

আনাস (রাঃ) থেকে বর্ণিতঃ

তিনি বলেন, রসূলুল্লাহ (সাল্লাল্লাহু ‘আলাইহি ওয়া সাল্লাম) বলেছেনঃ ত্বা’উন (মহামারী)’র কারণে মৃত্যু মুসলিমদের জন্য শাহাদাতের মর্যাদা। [১]
[১] সহীহ : বুখারী ২৮৩০, ৫৭৩২, মুসলিম ১৯১৬, আহমাদ ১৩৩৩৫, সহীহ আত্ তারগীব ১৩৯৯, সহীহ আল জামি‘ আস্ সগীর ৩৯৪৭।

১৫৪৪

সহিহ হাদিস
وَعَنْ أَبِىْ مُوسى قَالَ: قَالَ رَسُولُ اللّهِ ﷺ: «إِذَا مَرِضَ الْعَبْدُ أَوْ سَافَرَ كُتِبَ لَه بِمِثْلِ مَا كَانَ يَعْمَلُ مُقِيْمًا صَحِيْحًا» رَوَاهُ البُخَارِيُّ

আবূ মূসা আল আশ্‘আরী (রাঃ) থেকে বর্ণিতঃ

তিনি বলেন, রসূলুল্লাহ (সাল্লাল্লাহু ‘আলাইহি ওয়া সাল্লাম) বলেছেনঃ মানুষ রোগে অসুস্থ হলে অথবা সফরে থাকলে তার ‘আমলনামায় তাই লেখা হয়, যা সে সুস্থ অবস্থায় বা বাড়ীতে থাকলে লেখা হত। [১]
[১] সহীহ : বুখারী ২৯৯৬, আহমাদ ১৯৬৭৯, সুনানুল কুবরা লিল বায়হাক্বী ৬৫৪৭, ইরওয়া ৫৬০, সহীহ আত্ তারগীব ৩৪২০।

১৫৪৬

সহিহ হাদিস
وَعَنْ أَبِىْ هُرَيْرَةَ قَالَ: قَالَ رَسُولُ اللّهِ ﷺ: «الشُّهَدَاءُ خَمْسَةٌ الْمَطْعُونُ وَالْمَبْطُونُ وَالْغَرِيْقُ وَصَاحِبُ الْهَدَمِ وَالشَّهِيْدُ فِىْ سَبِيْلِ اللهِ». (مُتَّفَقٌ عَلَيْهِ)

আবূ হুরায়রাহ্ (রাঃ) থেকে বর্ণিতঃ

তিনি বলেন, রসূলুল্লাহ (সাল্লাল্লাহু ‘আলাইহি ওয়া সাল্লাম) বলেছেনঃ শাহীদরা পাঁচ প্রকার-(১) মহামারীতে মৃত ব্যক্তি, (২) পেটের অসুখে আক্রান্ত হয়ে মৃত ব্যক্তি, (৩) পানিতে ডুবে মৃত ব্যক্তি, (৪) দেয়াল চাপা পড়ে মৃত ব্যক্তি এবং (৫) আল্লাহর পথে জিহাদ করে মৃত ব্যক্তি। [১]
[১] সহীহ : বুখারী ২৮২৯, মুসলিম ১৯১৪, মুয়াত্ত্বা মালিক ১৩৩, আহমাদ ৮৩০৫, সুনানুল কুবরা লিন নাসায়ী ৭৪৮৬, শু‘আবুল ঈমান ৯৪১২, সহীহ আল জামি‘ আস্ সগীর ৩৭৪১।

১৫৪২

সহিহ হাদিস
وَعَنْ أَبِىْ هُرَيْرَةَ قَالَ: قَالَ رَسُولُ اللّهِ ﷺ: «مَثَلُ الْمُؤْمِنِ كَمَثَلِ الزَّرْعِ لَا تَزَالُ الرِّيْحُ تُمِيْلُه وَلَا يَزَالُ الْمُؤْمِنُ يُصِبْيُهُ الْبَلَاءُ وَمَثَلُ الْمُنَافِقِ كَمَثَلِ شَجَرَةِ الْأَرْزَةِ لَا تَهْتَزُّ حَتّى تَسْتَحْصِدَ». (مُتَّفَقٌ عَلَيْهِ)

আবূ হুরায়রাহ্ (রাঃ) থেকে বর্ণিতঃ

তিনি বলেন, রসূলুল্লাহ (সাল্লাল্লাহু ‘আলাইহি ওয়া সাল্লাম) বলেছেনঃ মু’মিনের দৃষ্টান্ত হলো এক শস্য ক্ষেতের মতো। শস্য ক্ষেতকে যেভাবে বাতাস সবসময় ঝুঁকিয়ে রাখে, ঠিক এভাবে মু’মিনকে বিপদাপদ দোলায়। বালা-মুসীবত ঘিরে থাকে। আর মুনাফিকের দৃষ্টান্ত হলো, পিপুল গাছের মতো। পিপুল গাছ বাতাসের দোলায় ঝুঁকে না পড়লেও পরিশেষে শিকড়সহ উপড়ে যায় । [১]
[১] সহীহ : বুখারী ৫৬৪৪, মুসলিম ২৮০৯, আহমাদ ৭১৯২, মুসান্নাফ ‘আবদুর রায্যাক্ব ২০৩০৭, আত্ তিরমিযী ২৮৬৬, শু‘আবুল ঈমান ৯৩২১, শারহুস্ সুন্নাহ্ ১৪৩৭, সহীহ আত্ তারগীব ৩৪০০, সহীহ আল জামি‘ আস্ সগীর ৫৮৪২।

১৫৪৭

সহিহ হাদিস
وَعَنْ عَائِشَةَ رَضِيَ اللّهُ عَنْهَا قَالَتْ: سَأَلَتْ رَسُولَ اللّهِ ﷺ عَنِ الطَّاعُونِ فَأَخْبَرَنِي: «أَنَّه عَذَابٌ يَبْعَثُهُ اللّهُ عَلى مَنْ يَشَاءُ وَأَنَّ اللّهَ جَعَلَه رَحْمَةً لِلْمُؤْمِنِيْنَ لَيْسَ مِنْ أَحَدٍ يَقَعُ الطَّاعُونُ فَيَمْكُثُ فِي بَلَدِه صَابِرًا مُحْتَسِبًا يَعْلَمُ أَنَّه لَا يُصِيْبُه إِلَّا مَا كَتَبَ اللّهُ لَه إِلَّا كَانَ لَه مِثْلُ أَجْرِ شَهِيْدٍ» . رَوَاهُ الْبُخَارِيُّ

‘আয়িশাহ্ (রাঃ) থেকে বর্ণিতঃ

তিনি বলেন, আমি একবার রাসূলুল্লাহ (সাল্লাল্লাহু ‘আলাইহি ওয়া সাল্লাম) -কে মহামারীর ব্যাপারে জিজ্ঞেস করলাম। জবাবে তিনি আমাকে বললেন, এটা এক রকম ‘আযাব। আল্লাহ যার উপর চান এ ‘আযাব পাঠান। কিন্তু মু’মিনদের জন্য তা তিনি রহমাত গণ্য করেছেন। তোমাদের যে কোন লোক মহামারী কবলিত এলাকায় সাওয়াবের আশায় সবরের সাথে অবস্থান করে এবং আস্থা রাখে যে, আল্লাহ তার জন্য যা নির্ধারণ করে রেখেছেন তাই হবে, তাছাড়া আর কিছু হবে না, তার জন্য রয়েছে শাহীদের সাওয়াব। [১]
[১] সহীহ : বুখারী ৩৪৭৪, সুনানুল কুবরা লিল বায়হাক্বী ৬৫৬০, শারহুস্ সুন্নাহ্ ১৪৪২।

১৫৪৮

সহিহ হাদিস
وَعَنْ أُسَامَةَ بْنِ زَيْدٍ قَالَ: قَالَ رَسُولُ اللّهِ ﷺ: «الطَّاعُوْنُ رِجْزٌ أُرْسِلَ عَلى طَائِفَةٍ مِنْ بَنِىْ إِسْرَائِيْلَ أَوْ عَلى مَنْ كَانَ قَبْلَكُمْ فَإِذَا سَمِعْتُمْ بِه بِأَرْضٍ فَلَا تَقْدَمُوْا عَلَيْهِ وَإِذَا وَقَعَ بِأَرْضٍ وَأَنْتُمْ بِهَا فَلَا تَخْرُجُوْا فِرَارًا مِنْهُ». (مُتَّفَقٌ عَلَيْهِ)

উসামাহ্ ইবনু যায়দ (রাঃ) থেকে বর্ণিতঃ

তিনি বলেন, রসূলুল্লাহ (সাল্লাল্লাহু ‘আলাইহি ওয়া সাল্লাম) বলেছেনঃ ত্বা’ঊন বা মহামারী হলো এক রকমের ‘আযাব। এ ত্বা’ঊন বানী ইসরাঈলের একটি দলের ওপর নিপতিত হয়েছিল। অথবা তিনি (সাল্লাল্লাহু ‘আলাইহি ওয়া সাল্লাম) বলেছেন, তোমাদের আগে যারা ছিল তাদের ওপর নিপতিত হয়েছিল। তাই তোমরা কোন জায়গায় ত্বা’ঊন-এর প্রাদুর্ভাব ঘটেছে শুনলে সেখানে যাবে না। আবার তোমরা যেখানে থাকো, মহামারী শুরু হয়ে গেলে সেখান থেকে পালিয়ে বের হয়ে যেও না। [১]
[১] সহীহ : বুখারী ৩৪৭৩, মুসলিম ২২১৮, ২২১৯, আবূ দাঊদ ৩১০৩, আত্ তিরমিযী ১০৬৫, আহমাদ ২১৭৬৩, সুনানুল কুবরা লিন নাসায়ী ৭৪৮৩, ইবনু হিব্বান ২৯৫২, সুনানুল কুবরা লিল বায়হাক্বী ৬৫৫৬, শারহুস্ সুন্নাহ্ ১৪৪৩, সহীহ আল জামি‘ আস্ সগীর ২২৪৮।

১৫৪৯

সহিহ হাদিস
وَعَن أَنَسٍ قَالَ: سَمِعْتُ رَسُولَ اللّهِ ﷺ يَقُولُ: «قَالَ اللّهُ سُبْحَانَه وَتَعَالى: إِذَا ابْتَلَيْتُ عَبْدِىْ بِحَبِيْبَتَيْهِ ثُمَّ صَبَرَ عَوَّضْتُه مِنْهُمَا الْجنَّةَ» يُرِيْدُ عَيْنَيْهِ. رَوَاهُ البُخَارِيُّ

আনাস (রাঃ) থেকে বর্ণিতঃ

তিনি বলেন, আমি রাসূলুল্লাহ (সাল্লাল্লাহু ‘আলাইহি ওয়া সাল্লাম) -কে বলতে শুনেছি, আল্লাহ তা’আলা বলেছেনঃ আমি যখন আমার কোন বান্দাকে তার প্রিয় দু’টি জিনিস দিয়ে বিপদ্গ্রস্ত করি, আর সে এর উপর ধৈর্যধারণ করে, আমি তাকে এ দু’টি প্রিয় জিনিসের বিনিময়ে জান্নাত দান করব। প্রিয় দু’টো জিনিস বলতে রসূলুল্লাহ (সাল্লাল্লাহু ‘আলাইহি ওয়া সাল্লাম) দু’টো চোখ বুঝিয়েছেন। [১]
[১] সহীহ : বুখারী ৫৬৫৩, সুনানুল কুবরা লিল বায়হাক্বী ৬৫৫২, শারহুস্ সুন্নাহ্ ১৪২৬, সহীহ আত্ তারগীব ৩৪৪৮।
/ পরিচ্ছেদঃ দ্বিতীয় অনুচ্ছেদ

১৫৫০

সহিহ হাদিস
عَنْ عَلِيٍّ قَالَ: سَمِعْتُ رَسُولَ اللّهِ ﷺ يَقُولُ: «مَا مِنْ مُسْلِمٍ يَعُودُ مُسْلِمًا غُدْوَةً إِلَّا صَلّى عَلَيْهِ سَبْعُوْنَ أَلْفَ مَلَكٍ حَتّى يُصْبِحَ وَكَانَ لَه خَرِيْفٌ فِي الْجَنَّةِ». رَوَاهُ التِّرْمِذِيُّ وَأَبُو دَاوُدَ

‘আলী (রাঃ) থেকে বর্ণিতঃ

তিনি বলেন, রসূলুল্লাহ (সাল্লাল্লাহু ‘আলাইহি ওয়া সাল্লাম)-কে বলতে শুনেছি, যে মুসলিম সকাল বেলায় কোন অসুস্থ মুসলিমকে দেখতে যায়, তার জন্য সন্ধ্যা পর্যন্ত সত্তর হাজার মালাক (ফেরেশতা) দু’আ করতে থাকে। যদি সে তাকে সন্ধ্যায় দেখতে যায়, তার জন্য সত্তর হাজার মালাক (ফেরেশতা) সকাল পর্যন্ত দু’আ করতে থাকে এবং তার জন্য জান্নাতে একটি বাগান তৈরি হয়। [১]
[১] সহীহ : আত্ তিরমিযী ৯৬৯, আবূ দাঊদ ৩০৯৮, ইবনু মাজাহ্ ১৪৪২, সহীহ আত্ তারগীব ৩৪৭৬, সহীহ আল জামি‘ আস্ সগীর ৫৭৬৭।

১৫৫১

সহিহ হাদিস
وَعَنْ زَيْدَ بْنَ أَرْقَمَ قَالَ: عَادَنِي النَّبِيُّ ﷺ مِنْ وَجَعٍ كَانَ يُصِيْبُنِىْ. رَوَاهُ أَحْمَدُ وَأَبُو دَاوُدَ

যায়দ ইবনু আরক্বাম (রাঃ থেকে বর্ণিতঃ

তিনি বলেন, নাবী (সাল্লাল্লাহু ‘আলাইহি ওয়া সাল্লাম) একবার আমার চোখের অসুখ হলে আমাকে দেখতে আসলেন। [১]
[১] সহীহ : আবূ দাঊদ ৩১০২, আহমাদ ১৭৭৬১।

১৫৫৩

সহিহ হাদিস
وَعَنِ ابْنِ عَبَّاسٍ قَالَ: قَالَ رَسُولُ اللّهِ ﷺ: «مَا مِنْ مُسْلِمٍ يَعُودُ مُسْلِمًا فَيَقُولُ سَبْعَ مَرَّاتٍ: أَسْأَلُ اللّهَ الْعَظِيمَ رَبَّ الْعَرْشِ الْعَظِيْمِ أَنْ يَّشْفِيَكَ إِلَّا شُفِيَ إِلَّا أَنْ يَكُونَ قَدْ حَضَرَ أَجَلُه». رَوَاهُ أَبُو دَاوُدَ وَالتِّرْمِذِيُّ

‘আবদুল্লাহ ইবনু ‘আব্বাস (রাঃ) থেকে বর্ণিতঃ

তিনি বলেন, রসূলুল্লাহ (সাল্লাল্লাহু ‘আলাইহি ওয়া সাল্লাম) বলেছেনঃ এক মুসলিম তার এক অসুস্থ মুসলিমকে দেখতে গিয়ে যদি সাতবার বলে, “আস্আলুল্ল-হাল ‘আযীমা রব্বাল ‘আরশিল ‘আযীমি আই ইয়াশ্ফিয়াকা” (অর্থাৎ আমি মহান আল্লাহর দরবারে দু’আ করছি তিনি যেন আপনাকে আরোগ্য দান করেন, যিনি মহান ‘আরশের রব।)। তাহলে তাকে অবশ্যই আরোগ্য দান করা হয় যদি না তার জীবনের শেষ সময় উপস্থিত হয়। [১]
[১] সহীহ : আবূ দাঊদ ৩১০৬, আত্ তিরমিযী ২০৮৩, শারহুস্ সুন্নাহ্ ১৪১৯, আহমাদ ২১৩৭, সুনানুল কুবরা লিন নাসায়ী ১০৮২০, মুসতাদরাক লিল হাকিম ৭৪৮৯, শারহুস্ সুন্নাহ্ ১৪১৯, সহীহ আত্ তারগীব ৩৪৮০

১৫৫৫

খুবই দুর্বল
وَعَنْ أَبِي الدَّرْدَاءِ قَالَ: سَمِعْتُ رَسُولَ اللّهِ ﷺ يَقُولُ: «مَنِ اشْتَكى مِنْكُمْ شَيْئًا أَوِ اشْتَكَاهُ أَخٌ لَه فَلْيَقُلْ: رَبُّنَا اللّهُ الَّذِي فِي السَّمَاءِ تَقَدَّسَ اسْمُكَ أَمْرُكَ فِي السَّمَاءِ وَالْأَرْضِ كَمَا أَنَّ رَحْمَتُكَ فِي السَّمَاءِ فَاجْعَلْ رَحْمَتَكَ فِي الْأَرْضِ اغْفِرْ لَنَا حُوْبَنَا وَخَطَايَانَا أَنْتَ رَبُّ الطَّيِبِيْنَ أَنْزِلْ رَحْمَةً مِنْ رَحْمَتِكَ وَشِفَاءً مِنْ شِفَائِكَ عَلى هذَا الْوَجَعِ. فَيَبْرَأُ». رَوَاهُ أَبُو دَاوُدَ

আবুদ্ দারদা (রাঃ) থেকে বর্ণিতঃ

তিনি বলেন, আমি রসূলুল্লাহ (সাল্লাল্লাহু ‘আলাইহি ওয়া সাল্লাম) -কে বলতে শুনেছি, তোমাদের কেউ ব্যথা-বেদনা অনুভব করলে অথবা তার কোন মুসলিম ভাই তার নিকট ব্যথা-বেদনার কথা বললে, সে যেন দু’আ করে, “আমাদের রব আল্লাহ যিনি আসমানে আছেন। হে রব! তোমার নাম পূতঃ-পবিত্র। তোমার নির্দেশ আকাশ ও পৃথিবী উভয় স্থানেই প্রযোজ্য। আকাশে যেভাবে তোমার অগণিত রহমাত আছে, ঠিক সেভাবে তুমি পৃথিবীতেও তোমার অগণিত রহমাত ছাড়িয়ে দাও। তুমি আমাদের ইচ্ছাকৃত ও অনিচ্ছাকৃত অপরাধগুলো ক্ষমা করে দাও। তুমি পূতঃ-পবিত্র লোকদের রব। তুমি তোমার রহমাতগুলো হতে বিশেষ রহমাত ও তোমার শেফাসমূহ হতে বিশেষ শেফা এ ব্যথা-বেদনার নিরাময় পাঠিয়ে দাও।” এ দু’আ তার সকল ব্যথা-বেদনা দূর করে দেবে। [১]
[১] খুবই দুর্বল : আবূ দাঊদ ৩৮৯২, য‘ঈফ আত্ তারগীব ২০১০, য‘ঈফ আল জামি‘ আস্ সগীর ৫৪২২। শায়খ আলবানী (রহঃ) বলেছেন, এর সানাদে যিয়াদ বিন মুহাম্মাদ রয়েছে যাকে ইমাম বুখারী (রহঃ) মুনকারুল হাদীস বলেছেন।

১৫৫৪

দুর্বল হাদিস
وَعَنِ ابْنِ عَبَّاسٍ أَنَّ النَّبِيَّ ﷺ: كَانَ يُعَلِّمُهُمْ مِنَ الْحُمّى وَمِن الْأَوْجَاعِ كُلِّهَا أَنْ يَقُوْلُوْا: «بِسْمِ اللهِ الْكَبِيْرِ أَعُوذُ بِاللّهِ الْعَظِيمِ مِنْ شَرِّ كُلِّ عِرْقٍ نَعَّارٍ وَمِنْ شَرِّ حَرِّ النَّارِ» . رَوَاهُ التِّرْمِذِيُّ وَقَالَ هذَا حَدِيثٌ غَرِيبٌ لَا يُعْرَفُ إِلَّا مِنْ حَدِيثِ إِبْرَاهِيمَ بْنِ إِسْمَاعِيلَ وَهُوَ يُضَعَّفُ فِي الحَدِيْثِ

আবদুল্লাহ ইবনু ‘আব্বাস (রাঃ) থেকে বর্ণিতঃ

তিনি বলেন, নাবী (সাল্লাল্লাহু ‘আলাইহি ওয়া সাল্লাম) আমাদেরকে জ্বরসহ অসুখ-বিসুখ হতে পরিত্রাণ পাবার জন্য এভাবে দু’আ করতে শিখিয়েছেন, “মহান আল্লাহর নামে, মহান আল্লাহর কাছে সব রক্তপূর্ণ শিরার অপকার হতে ও জাহান্নামের গরমের ক্ষতি হতে।” [১]
[১] য‘ঈফ : আত্ তিরমিযী ২০৭৫, ইবনু মাজাহ্ ৩৫২৬, ইবনু আবী শায়বাহ্ ২৯৫০১, আহমাদ ২৭২৯, আদ্ দা‘ওয়াতুল কাবীর ৬০৩, য‘ঈফ আল জামি‘ ৪৫৮৭। এর সানাদে ইব্রাহীম বিন ইসমা‘ঈল একজন দুর্বল রাবী। যদিও ইমাম আহমাদ (রহঃ) তাকে বিশ্বস্ত বলেছেন। কিন্তু জমহূর মুহাদ্দিসগণ তাকে দুর্বল বলেছেন।

১৫৫২

দুর্বল হাদিস
وَعَنْ أَنَسٍ: قَالَ: قَالَ رَسُولُ اللّهِ ﷺ: «مَنْ تَوَضَّأَ فَأَحْسَنَ الْوُضُوءَ وَعَادَ أَخَاهُ الْمُسْلِمَ مُحْتَسِبًا بُوعِدَ مِنْ جَهَنَّمَ مَسِيْرَةَ سِتِّينَ خَرِيْفًا» . رَوَاهُ أَبُو دَاوُد

আনাস (রাঃ) থেকে বর্ণিতঃ

তিনি বলেন, রাসূলুল্লাহ (সাল্লাল্লাহু ‘আলাইহি ওয়া সাল্লাম) বলেছেনঃ যে ব্যক্তি সাওয়াবের নিয়্যাতে ভাল করে উযূ করার পর তার কোন অসুস্থ মুসলিম ভাইকে দেখতে যায়, তাকে জাহান্নাম থেকে ষাট বছরের পথ দূরে রাখা হবে। [১]
[১] য‘ঈফ : আবূ দাঊদ ৩০৯৭, য‘ঈফ আত্ তারগীব ২০২৫, য‘ঈফ আল জামি‘ আস্ সগীর ৫৫৩৯। শায়খ আলবানী (রহঃ) বলেন, এর সানাদে ফাযল বিন দালহাম আল ওয়াসিত্বী রয়েছে যিনি স্মৃতিশক্তিগত ত্রুটির কারণে একজন দুর্বল রাবী।

১৫৫৬

সহিহ হাদিস
وَعَنْ عَبْدِ اللّهِ بْنِ عَمْرٍو قَالَ: قَالَ رَسُولُ اللّهِ ﷺ: «إِذَا جَاءَ الرَّجُلُ يَعُوْدُ مَرِيْضًا فَلْيَقُلْ اللّهُمَّ اشْفِ عَبْدَكَ يَنْكَأُ لَكَ عَدُوًّا أَوْ يَمْشِىْ لَكَ إِلى جَنَازَةٍ» رَوَاهُ أَبُو دَاوُدَ

‘আবদুল্লাহ ইবনু ‘আমর (রাঃ) থেকে বর্ণিতঃ

তিনি বলেন, রসূলুল্লাহ (সাল্লাল্লাহু ‘আলাইহি ওয়া সাল্লাম) বলেছেনঃ যখন কোন ব্যক্তি কোন অসুস্থ ব্যক্তিকে দেখতে যায় তখন সে যেন বলে, “আল্ল-হুম্মাশফি ‘আবদাকা ইয়ান্কাউ লাকা ‘আদ্যুওয়ান আও ইয়াম্শী লাকা ইলা-জানা-যাহ্” (অর্থঃ হে আল্লাহ! তোমার বান্দাকে সুস্থ করে দাও। সে যাতে তোমার জন্য শত্রুকে আঘাত করতে পারে। অথবা তোমার সন্তষ্টির জন্য জানাযায় অংশ নিতে পারে।) [১]
[১] সহীহ : আবূ দাঊদ ৩১০৭, আহমাদ ৬৬০০, ইবনু হিব্বান ২৯৭৪, মুসতাদরাক লিল হাকিম ১২৭৩, সিলসিলাহ্ আস্ সহীহাহ্ ১৩০৪, সহীহ আল জামি‘ ৪৬৬। তবে আহমাদের সানাদটি দুর্বল কারণ তাতে ইবনুল লাহ্ইয়া রয়েছে।

১৫৫৭

দুর্বল হাদিস
عَن عَلِيِّ بْنِ زَيْدٍ عَنْ أُمَيَّةَ أَنَّهَا سَأَلَتْ عَائِشَة عَن قَوْلِ اللهِ تَبَارَكَ وَتَعَالى: ﴿إِن تُبْدُوا مَا فِي أَنْفُسِكُمْ أَوْ تُخْفُوهُ يُحَاسِبْكُمْ بِهِ الله﴾ [البقرة 2 : 284].وَعَنْ قَوْلِه: ﴿مَنْ يَّعْمَلْ سُوْءًا يُجْزَ بِه﴾ [النساء 4 : 123]، فَقَالَتْ: مَا سَأَلَنِىْ عَنْهَا أَحَدٌ مُنْذُ سَأَلَتُ رَسُولَ اللّهِ ﷺ فَقَالَ: «هذِه مُعَاتَبَةُ اللهِ الْعَبْدَ فِيْمَا يُصِيْبُه مِنَ الْحُمّى وَالنَّكْبَةِ حَتَّى الْبِضَاعَةِ يَضَعُهَا فِي يَدِ قَمِيْصِه فَيَفْقِدُهَا فَيَفْزَعُ لَهَا حَتّى إِنَّ الْعَبْدَ لَيَخْرُجُ مِنْ ذُنُوْبِه كَمَا يَخْرُجُ التِبْرُ الْأَحْمَرُ مِنَ الْكِيْرِ» . رَوَاهُ التِّرْمِذِيُّ

‘উমাইয়্যাহ্ (রহঃ) থেকে বর্ণিতঃ

তিনি (‘উমাইয়্যাহ) একদিন ‘আয়িশাহ (রাঃ)-কে “তোমাদের অন্তরে যা আছে তোমরা যদি তা প্রকাশ করো অথবা গোপন করো, আল্লাহ সে সম্পর্কে তোমারদের হিসাব নিবেন”-(সূরাহ আল বাকারাহ ২:২৮৪) এবং “যে অন্যায় কাজ করবে সে তার শাস্তি ভোগ করবে”-(সূরাহ আন নিসা ৪:১২৩)- এ দু’টি আয়াতের ব্যাপারে জিজ্ঞেস করেছিলেন।
উত্তরে ‘আয়িশাহ (রাঃ) বলেন, আমি এ ব্যাপারে রসূলুল্লাহ (সাল্লাল্লাহু ‘আলাইহি ওয়া সাল্লাম)-কে জিজ্ঞেস করে জেনে নেবার পর এ পর্যন্ত কেউ আমাকে এ বিষয়ে জিজ্ঞেস করেনি। রসূলুল্লাহ (সাল্লাল্লাহু ‘আলাইহি ওয়া সাল্লাম) বলেছেন, এ দু’টি আয়াতে যে শাস্তির কথা বলা হয়েছে, তা হল দুনিয়ায় বান্দার যে জ্বর ও দুঃখ-কষ্ট ইত্যাদি হয়, তা দিয়ে আল্লাহ যে শাস্তি দেন তাই, এমনকি বান্দা জামার পকেটে কে সম্পদ রাখে, তারপর হারিয়ে ফেলে তার জন্য অস্থির হয়ে যায়-এটাও এ শাস্তির মধ্যে গণ্য। অবশেষে বান্দা তার গুনাহগুলো হতে পবিত্র হয়ে বের হয়। যেভাবে সোনাকে হাপরের আগুনে পরিস্কার করে বের করা হয়।
[১]
[১] য‘ঈফ : আত্ তিরমিযী ২৯৯১, আহমাদ ২৫৮৩৫, শু‘আবুল ঈমান ৯৩৫২, য‘ঈফ আল জামি‘ ৬০৮৬। কারণ এর সানাদে ‘আলী বিন যায়দ বিন যায়দান রয়েছে যিনি একজন দুর্বল রাবী এবং ‘উমাইয়্যাহ্ যে তার পিতার স্ত্রী একজন মাজহূল রাবী।

১৫৫৮

দুর্বল হাদিস
وَعَنْ أَبِي مُوسى أَنَّ رَسُولَ اللّهِ ﷺ قَالَ: «لَا يُصِيْبُ عَبْدًا نَكْبَةٌ فَمَا فَوْقَهَا أَوْ دُونَهَا إِلَّا بِذَنَبٍ وَمَا يَعْفُو اللّهُ عَنْهُ أَكْثَرُ وَقَرَأَ: ﴿وَمَا أَصَابَكُمْ مِنْ مُّصِيْبَةٍ فَبِمَا كَسَبَتْ أَيْدِيْكُمْ وَيَعْفُوْ عَنْ كَثِيْر﴾ [الشورى 42 : 30]. رَوَاهُ التِّرْمِذِيّ

আবূ মূসা আল আশ্‘আরী (রাঃ) থেকে বর্ণিতঃ

তিনি বলেন, রসূলুল্লাহ (সাল্লাল্লাহু ‘আলাইহি ওয়া সাল্লাম) বলেছেনঃ বড় হোক কিংবা ছোট হোক, বান্দা যেসব দুঃখ-কষ্ট পায়, নিশ্চয়ই তা তার অপরাধের কারণে। তবে আল্লাহ্‌ যা ক্ষমা করে দেন তা এর চেয়েও অনেক বেশী। এ কথার সমর্থনে তিনি (সাল্লাল্লাহু ‘আলাইহি ওয়া সাল্লাম) এ আয়াতটি তিলাওয়াত করেন-অর্থাৎ “তোমাদের ওপর যেসব বিপদ-আপদ নিপতিত হয়, তা তোমাদের কর্মফলের কারণে। আর আল্লাহ্‌ ক্ষমা করে দেন অনেক অনেক বেশি”-(সূরাহ আশ শূরা ৪২:৩০)। [১]
[১] য‘ঈফুল ইসনাদ : আত্ তিরমিযী ৩২৫২, সহীহ আল জামি‘ আস্ সগীর ৭৭৩২। শায়খ আলবানী (রহঃ) বলেন, এর সানাদে ‘উবায়দুল্লাহ্ বিন আল ওয়াযি‘ এবং তার উস্তায শায়খ দু’জনই মাজহূল রাবী। তবে আল জামি‘তে তিনি হাদীসটিকে সম্ভবতঃ শাহিদ এর কারণে হাসান বলেছেন।

১৫৫৯

সহিহ হাদিস
وَعَنْ عَبْدِ اللّهِ بْنِ عَمْرٍو قَالَ: قَالَ رَسُولُ اللّهِ ﷺ: «إِن الْعَبْدَ إِذَا كَانَ عَلى طَرِيْقَةٍ حَسَنَةٍ مِنَ الْعِبَادَةِ ثُمَّ مَرِضَ قِيلَ لِلْمَلَكِ الْمُوَكَّلِ بِه: اكْتُبْ لَه مِثْلَ عَمَلِه إِذَا كَانَ طَلِيْقًا حَتّى أطْلِقَه أَوْ أَكْفِتَه إِلَيَّ

আবদুল্লাহ ইবনু ‘আমর (রাঃ) থেকে বর্ণিতঃ

তিনি বলেন, রসূলুল্লাহ (সাল্লাল্লাহু ‘আলাইহি ওয়া সাল্লাম) বলেছেনঃ বান্দা যখন ‘ইবাদতের কোন সুন্দর নিয়ম-পদ্ধতি পালন করে চলতে শুরু করে এবং তারপর যদি অসুস্থ হয়ে পড়ে (‘ইবাদতের ধারা বন্ধ হয়ে যায়), তখন তার ‘আমালনামা লিখার জন্য নিযুক্ত মালাককে (ফেরেশতাকে) বলা হয়, এ বান্দা সুস্থ অবস্থায় যে ‘আমাল করত (অসুস্থ অবস্থাও) তার ‘আমালনামায় তা লিখতে থাকো। যে পর্যন্ত না তাকে মুক্ত করে দিই অথবা তাকে আমার কাছে ডেকে আনি। [১]
[১] সহীহ : আহমাদ ৬৮৯৫, সুনানুল কুবরা লিল বায়হাক্বী ৬৫৪৬, শারহুস্ সুন্নাহ্ ১৪২৯, সহীহ আত্ তারগীব ৩৪২১।

১৫৬০

হাসান সহিহ
وَعَنْ أَنَسٍ أَنَّ رَسُولَ اللّهِ ﷺ قَالَ: إِذَا ابْتُلِيَ الْمُسْلِمُ بِبَلَاءٍ فِي جَسَدِه قِيلَ لِلْمَلَكِ: اكْتُبْ لَه صَالِحَ عَمَلِهِ الَّذِىْ كَانَ يَعْمَلُ فَإِنْ شَفَاهُ غَسَّلَه وَطَهَّرَه وَإِنْ قَبَضَه غَفَرَ لَه وَرَحِمَه. رَوَاهُمَا فِي شَرَح ِالسُّنَّةِ

আনাস (রাঃ) থেকে বর্ণিতঃ

তিনি বলেন, রসূলুল্লাহ (সাল্লাল্লাহু ‘আলাইহি ওয়া সাল্লাম) বলেছেনঃ কোন মুসলিমকে শারীরিক বিপদে ফেলা হলে মালায়িকাহ-কে (ফেরেশতাদেরকে) বলা হয়, এ বান্দা নিয়মিত যে নেক কাজ করত, তা-ই তার ‘আমালনামায় লিখতে থাকো। এরপর তাকে আল্লাহ্‌ আরোগ্য দান করলে গুনাহখাতা হতে ধুয়ে পাকসাফ করে নেন। আর যদি তাকে উঠিয়ে নেন, তাকে মাফ করে দেন এবং তার প্রতি রহমাত দান করেন। [১]
[১] হাসান সহীহ : আহমাদ ১২৫০৪, ইবনু আবী শায়বাহ্ ০৮৩১, শারহুস্ সুন্নাহ্ ১৪৩০, ইরওয়া ২, সহীহ আত্ তারগীব ৩৪২২।

১৫৬৩

সহিহ হাদিস
وَعَنْ عَائِشَةَ رَضِيَ اللّهُ عَنْهَا قَالَتْ: مَا أَغْبِطُ أَحَدًا بِهَوْنِ مَوْتٍ بَعْدَ الَّذِىْ رَأَيْتُ مِنْ شِدَّةِ مَوْتِ رَسُولِ اللّهِ ﷺ. رَوَاهُ التِّرْمِذِيُّ وَالنَّسَائِيُّ

‘আয়িশাহ্ (রাঃ) থেকে বর্ণিতঃ

তিনি বলেন, আমি রসূলুল্লাহ (সাল্লাল্লাহু ‘আলাইহি ওয়া সাল্লাম) -এর মৃত্যু কষ্ট দেখেছি। তাই এরপর আর সহজভাবে মৃত্যু হতে দেখলে ঈর্ষা করি না। [১]
[১] সহীহ : আত্ তিরমিযী ৯৭৯, শামায়িল ৩২৫, নাসায়ী ১৮৩০।

১৫৬২

হাসান হাদিস
وَعَنْ سَعْدٍ قَالَ: سُئِلَ النَّبِيُّ ﷺ: أَيُّ النَّاسِ أَشَدُّ بَلَاءً؟ قَالَ: «الْأَنْبِيَاءُ ثُمَّ الْأَمْثَلُ فَالْأَمْثَلُ يُبْتَلَى الرَّجُلُ عَلى حَسَبِ دِينِه فَإِنْ كَانَ صَلْبًا فِىْ دِيْنِهِ اشْتَدَّ بَلَاؤُهُ وَإِنْ كَانَ فِي دِينِه رِقَّةٌ هُوِّنَ عَلَيْهِ فَمَا زَالَ كَذلِكَ حَتّى يَمْشِيَ على الأَرْض مَالَه ذَنْبٌ» . رَوَاهُ التِّرْمِذِيُّ وَابْنُ مَاجَهْ وَالدَّارِمِيُّ وَقَالَ التِّرْمِذِيُّ: هذَا حَدِيْثٌ حَسَنٌ صَحِيْحٌ

সা‘দ ইবনু আবূ ওয়াক্কাস (রাঃ) থেকে বর্ণিতঃ

তিনি বলেন, নাবী (সাল্লাল্লাহু ‘আলাইহি ওয়া সাল্লাম) –কে একবার জিজ্ঞেস করা হলো, হে আল্লাহর নাবী! কোন সব লোককে বিপদাপদ দিয়ে সবচেয়ে বেশি পরীক্ষা-নিরীক্ষা করা হয়। জবাবে তিনি (সাল্লাল্লাহু ‘আলাইহি ওয়া সাল্লাম) বললেন, নাবীদেরকে। তারপর তাদের পরে যারা উত্তম তাদেরকে। মানুষকে আপন আপন দ্বীনদারীর অনুপাতে পরীক্ষা-নিরীক্ষা করা হয়। দ্বীনদারীতে যে যত বেশি মজবুত হয় তার বিপদ-মুসীবাত তত বেশি কঠিন হয়। দ্বীনের ব্যাপারে যদি মানুষের দুর্বলতা থাকে, তার বিপদও ছোট ও সহজ হয়। এভাবে তার বিপদ হতে থাকে। এ নিয়েই সে মাটিতে চলাফেরা করতে থাকে। তার কোন গুনাহখাতা থাকে না। [১]
[১] হাসান সহীহ : আত্ তিরমিযী ২৩৯৮, ইবনু মাজাহ্ ৪০২৩, আহমাদ ১৬০৭, দারিমী ২৮২৫, সুনানুল কুবরা লিন নাসায়ী ৭৪৩৯, ইবনু হিব্বান ২৯০১, সহীহ আত্ তারগীব ৩৪০২।

১৫৬১

সহিহ হাদিস
وَعَنْ جَابِرِ بْنِ عَتِيْكٍ قَالَ: قَالَ رَسُولُ اللّهِ ﷺ: «الشَّهَادَةُ سَبْعٌ سِوَى الْقَتْلِ فِي سَبِيلِ اللّهِ: الْمَطْعُونُ شَهِيدٌ وَالْغَرِيقُ شَهِيدٌ وَصَاحِبُ ذَاتِ الْجَنْبِ شَهِيْدٌ وَالْمَبْطُوْنُ شَهِيْدٌ وَصَاحِبُ الْحَرِيْقِ شَهِيْدٌ وَالَّذِىْ يَمُوتُ تَحْتَ الْهَدْمِ شَهِيْدٌ وَالْمَرْأَةُ تَمُوتُ بِجُمْعٍ شَهِيْدٌ». رَوَاهُ مَالِك وَأَبُوْ دَاوُدَ وَالنَّسَائِيُّ

জাবির ইবনু ‘আতীক (রাঃ) থেকে বর্ণিতঃ

তিনি বলেন, রসুলুল্লাহ (সাল্লাল্লাহু ‘আলাইহি ওয়া সাল্লাম) বলেছেনঃ আল্লাহর রাহে যুদ্ধ করে নিহত শাহীদ ছাড়াও সাত ধরনের শাহীদ রয়েছে। এরা হচ্ছে (১) মহামারীতে আক্রান্ত হয়ে মৃত ব্যক্তি, (২) পানিতে ডুবে মারা যাওয়া ব্যক্তি, (৩) ‘যা-তুল জানব’ রোগে মারা যাওয়া ব্যক্তি, (৪) পেটের রোগে মারা যাওয়া ব্যক্তি, (৫) অগ্নিদগ্ধ হয়ে মারা যাওয়া ব্যক্তি, (৬) কোন প্রাচীর চাপা পড়ে মৃত ব্যক্তি এবং (৭) প্রসবকালে মৃত্যুবরণকারী মহিলা। [১]
[১] সহীহ : আবূ দাঊদ ৩১১১, নাসায়ী ১৮৪৬, আহমাদ ২৩৭৫৩, ইবনু হিব্বান ৩১৮৯, সহীহ আত্ তারগীব ১৩৯৮, সহীহ আর-জামি‘ আস্ সগীর ৩৭৩৯।

১৫৬৪

দুর্বল হাদিস
وَعَنْ عَائِشَةَ رَضِيَ اللّهُ عَنْهَا قَالَتْ: رَأَيْتُ النَّبِيَّ ﷺ وَهُوَ بِالْمَوْتِ وَعِنْدَه قَدَحٌ فِيهِ مَاءٌ وَهُوَ يُدْخِلُ يَدَه فِي الْقَدَحِ ثُمَّ يَمْسَحُ وَجْهَه ثُمَّ يَقُولُ: «اللّهُمَّ أَعِنِّىْ عَلى مُنْكَرَاتِ الْمَوْتِ أَوْ سَكَرَاتِ الْمَوْتِ» . رَوَاهُ التِّرْمِذِيُّ وَابْنُ مَاجَهْ

আয়িশাহ্ (রাঃ) থেকে বর্ণিতঃ

তিনি বলেন, নাবী (সাল্লাল্লাহু ‘আলাইহি ওয়া সাল্লাম) -কে আমি তাঁর মৃত্যুবরণ করার সময় দেখেছি। তাঁর কাছে একটি পানিভরা বাটি ছিল। এ বাটিতে তিনি বারবার হাত ডুবাতেন। তারপর হাত দিয়ে নিজের চেহারা মুছতেন ও বলতেন, হে আল্লাহ্‌! তুমি আমাকে মৃত্যু যন্ত্রণায় সাহায্য করো। [১]
[১] য‘ঈফ : আত্ তিরমিযী ৯৭৮, মুখতাসার আশ্ শামায়িল ৩২৪, ইবনু মাজাহ্ ১৬২৩। শায়খ আলবানী (রহঃ) বলেন, এর সানাদে মূসা বিন সারজিস রয়েছে যাকে কেউই বিশ্বস্ত হিসেবে উল্লেখ করেননি এবং তার থেকে মাত্র দু’জন ব্যক্তি হাদীস বর্ণনা করেছে। অতএব, তিনি একজন মাজহূল রাবী।

১৫৬৫

সহিহ হাদিস
وَعَنْ أَنَسٍ قَالَ: قَالَ رَسُولُ اللّهِ ﷺ: «إِذَا أَرَادَ اللّهُ تَعَالى بِعَبْدِهِ الْخَيْرَ عَجَّلَ لَهُ الْعُقُوبَةَ فِي الدُّنْيَا وَإِذَا أَرَادَ اللّهُ بِعَبْدِهِ الشَّرَّ أَمْسَكَ عَنْهُ بِذَنْبِه حَتّى يُوَافِيَه بِهِ يَوْمَ الْقِيَامَةِ . رَوَاهُ التِّرْمِذِيُّ

আনাস (রাঃ) থেকে বর্ণিতঃ

তিনি বলেন, রসূলুল্লাহ (সাল্লাল্লাহু ‘আলাইহি ওয়া সাল্লাম) বলেছেনঃ আল্লাহ তাঁর কোন বান্দার কল্যাণ চাইলে আগে-ভাগে দুনিয়াতেই তাকে তার গুনাহখাতার জন্য কিছু শাস্তি দিয়ে দেন। আর কোন বান্দার অকল্যাণ চাইলে দুনিয়ায় তার পাপের শাস্তিদান হতে বিরত থাকেন। পরিশেষে কিয়ামতের দিন তাকে তার পূর্ণ শাস্তি দিবেন। [১]
[১] সহীহ : আত্ তিরমিযী ২৩৯৬, শারহুস্ সুন্নাহ্ ১৪৩৫, সিলসিলাহ্ আস্ সহীহাহ্ ১২২০, সহীহ আল জামি‘ আস্ সগীর ৩০৮।

১৫৬৭

হাসান সহিহ
وَعَنْ أَبِىْ هُرَيْرَةَ قَالَ: قَالَ رَسُولُ اللّهِ ﷺ: «لَا يَزَالُ الْبَلَاءُ بِالْمُؤْمِنِ أَوِ الْمُؤْمِنَةِ فِي نَفْسِه وَمَالِه وَوَلَدِه حَتّى يَلْقَى اللّهَ تَعَالى وَمَا عَلَيْهِ مِنْ خَطِيْئَةٍ» . رَوَاهُ التِّرْمِذِيُّ وَرَوى مَالِكٌ نَحْوَه وَقَالَ التِّرْمِذِيُّ: هذَا حَدِيْثٌ حَسَنٌ صَحِيْحٌ

আবূ হুরায়রাহ্ (রাঃ) থেকে বর্ণিতঃ

তিনি বলেন, রসুলুল্লাহ (সাল্লাল্লাহু ‘আলাইহি ওয়া সাল্লাম) বলেছেন: মু’মিন নারী-পুরুষের বিপদ মুসীবাত লেগেই থাকে, এই বিপদ মুসীবাত তার শারীরিক, তার ধন-সম্পদের, তার সন্তান- সন্তুতির ব্যপারে হতে পারে। আল্লাহর সাথে মিলিত হবার আগ পর্যন্তই তা চলতে থাকে। আর আল্লাহর সাথে তার মিলিত হবার পর তার উপর গুনাহের কোন বোঝাই থাকেনা। (তিরমিযী; মালিক (রহঃ) এরূপ বর্ণনা করেছেন। তিরমিযী বলেন, হাদীসটি হাসান ও সহীহ।)

১৫৬৮

সহিহ লিগাইরিহি
وَعَنْ مُحَمَّدِ بْنِ خَالِدٍ السُّلَمِيِّ عَنْ أَبِيهِ عَنْ جَدِّه قَالَ: قَالَ رَسُولُ اللّهِ ﷺ: إِنَّ الْعَبْدَ إِذَا سَبَقَتْ لَه مِنَ اللّهِ مَنْزِلَةٌ لَمْ يَبْلُغْهَا بِعَمَلِهِ ابْتَلَاهُ اللهُ فِىْ جَسَدِه أَوْفِي مَالِه أَوْ فِي وَلَدِه ثُمَّ صَبَّرَه عَلى ذلِكَ يُبَلِّغُهُ الْمَنْزِلَةَ الَّتِي سَبَقَتْ لَه مِنَ اللهِ . رَوَاهُ أَحْمَدُ وَأَبُوْ دَاوُدَ

মুহাম্মাদ ইবনু খালিদ আস্ সুলামী থেকে বর্ণিতঃ

তাঁর দাদা বলেছেন, রসূলুল্লাহ (সাল্লাল্লাহু ‘আলাইহি ওয়া সাল্লাম) বলেছেনঃ আল্লাহর তরফ হতে কোন মানুষের জন্য যখন কোন মর্যাদা নির্ধারিত হয়, যা সে ‘আমাল দিয়ে লাভ করতে পারে না, তখন আল্লাহ তাকে তার শরীরে অথবা তার সন্তান-সন্ততির উপর বিপদ ঘটিয়ে পরীক্ষা করেন। এতে তাকে ধৈর্যধারণ করারও শক্তি দান করেন। যাতে সেরূপ মর্যাদা লাভ করতে পারে, যা আল্লাহর তরফ হতে তার জন্য নির্দিষ্ট করা হয়েছে। [১]
[১] সহীহ লিগায়রিহী : আবূ দাঊদ ৩০৯০, সহীহ আত্ তারগীব ৩৪০৯।

১৫৬৯

হাসান হাদিস
وَعَنْ عَبْدِ اللهِ بْنِ شِخِّيْرٍ قَالَ: قَالَ رَسُولُ اللّهِ ﷺ: «مُثِّلَ ابْنُ ادَمَ وَإِلى جَنْبِه تِسْعٌ وَتِسْعُونَ مَنِيَّةً إِنْ أَخْطَأَتْهُ الْمَنَايَا وَقَعَ فِي الْهَرَمِ حَتّى يَمُوتَ» . رَوَاهُ التِّرْمِذِيُّ وَقَالَ: هذَا حَدِيْثٌ غَرِيْبٌ

আবদুল্লাহ ইবনু শিখখীর (রাঃ) থেকে বর্ণিতঃ

তিনি বলেন, রসূলুল্লাহ (সাল্লাল্লাহু ‘আলাইহি ওয়া সাল্লাম) বলেছেনঃ আদম সন্তানকে তার চারদিকে নিরানব্বইটি বিপদ পরিবেষ্টিত অবস্থায় সৃষ্টি করা হয়েছে। যদি এ বিপদগুলোর সবগুলোই তার ক্ষতি করতে ব্যর্থ হয়, তাহলে সে অন্তত বার্ধক্যজনিত বিপদে পতিত হয়। পরিশেষে মৃত্যুবরণ করে। [১]
[১] হাসান : আত্ তিরমিযী ২৪৫৬, শু‘আবুল ঈমান ১০০৯১, সহীহ আল জামি‘ আস্ সগীর ৫৮২৫।

১৫৭০

হাসান হাদিস
وَعَنْ جَابِرٍ قَالَ: قَالَ رَسُولُ اللّهِ ﷺ: «يَوَدُّ أَهْلُ الْعَافِيَةِ يَوْمَ الْقِيَامَةِ حِيْنَ يُعْطى أَهْلُ الْبَلَاءِ الثَّوَابَ لَوْ أَنَّ جُلُودَهُمْ كَانَتْ قُرِضَتْ فِي الدُّنْيَا بِالْمَقَارِيْضِ» . رَوَاهُ التِّرْمِذِيُّ

জাবির (রাঃ) থেকে বর্ণিতঃ

তিনি বলেন, রসুলুল্লাহ (সাল্লাল্লাহু ‘আলাইহি ওয়া সাল্লাম) বলেছেনঃ কিয়ামতের দিন ভোগ-বিলাসে জীবন-যাপনকারীরা যখন দেখবে বিপদ-মুসীবাতগ্রস্ত লোকদেরকে সওয়াব দেয়া হচ্ছে, তখন তারা আক্ষেপ করবে। বলবে, আহা! তাদের চামড়া যদি দুনিয়াতেই কাঁচি দিয়ে কেটে ফেলা হত! [১]
[১] হাসান : আত্ তিরমিযী ২৪০২, সহীহ আল জামি‘ আস্ সগীর ৮১৭৭।

১৫৬৬

হাসান হাদিস
وَعَنْ أَنَسٍ قَالَ: قَالَ رَسُولُ اللّهِ ﷺ: «إِنَّ عِظَمَ الْجَزَاءِ مَعَ عِظَمِ الْبَلَاءِ وَإِنَّ اللّهَ عَزَّ وَجَلَّ إِذَا أَحَبَّ قَوْمًا ابْتَلَاهُمْ فَمَنْ رَضِيَ فَلَهُ الرِّضَا وَمَنْ سَخِطَ فَلَهُ السَّخَطُ» . رَوَاهُ التِّرْمِذِيُّ وَابْنُ مَاجَهْ

আনাস (রাঃ) থেকে বর্ণিতঃ

তিনি বলেন, রসূলুল্লাহ (সাল্লাল্লাহু ‘আলাইহি ওয়া সাল্লাম)-বলেছেনঃ বড় বড় বিপদ-মুসীবাতের পরিণাম বড় পুরস্কার। আল্লাহ তা’আলা কোন জাতিকে ভালবাসেন তাদেরকে বিপদাপদ দিয়ে পরীক্ষা করেন। যারা এতে সন্তুষ্ট ও তৃপ্ত থাকে তাদের জন্য আল্লাহর সন্তুষ্টি রয়েছে। আর যে জাতি এতে অসন্তুষ্ট হয়, তার জন্য রয়েছে আল্লাহর অসন্তুষ্টি। [১]
[১] হাসান : আত্ তিরমিযী ২৩৯৬, ইবনু মাজাহ্ ৪০৩১, শু‘আবুল ঈমান ৯৩২৫, শারহুস্ সুন্নাহ্ ১৪৩৫, সিলসিলাহ্ আস্ সহীহাহ্ ১৪৬, সহীহ আত্ তারগীব ৩৪০৭।

১৫৭২

খুবই দুর্বল
وَعَنْ أَبِىْ سَعِيدٍ قَالَ: قَالَ رَسُولُ اللّهِ ﷺ: «إِذَا دَخَلْتُمْ عَلَى الْمَرِيضِ فَنَفِّسُوا لَه فِي أَجَلِه فَإِنَّ ذلِكَ لَا يَرُدُّ شَيْئًا وَيُطَيِّبُ بِنَفْسِه». رَوَاهُ التِّرْمِذِيُّ وَابْنُ مَاجَهْ وَقَالَ التِّرْمِذِيُّ: هذَا حَدِيْثٌ غَرِيْبٌ

আবূ সা‘ঈদ আল্ খুদরী (রাঃ) থেকে বর্ণিতঃ

তিনি বলেন, রসুলুল্লাহ (সাল্লাল্লাহু ‘আলাইহি ওয়া সাল্লাম) বলেছেনঃ তোমরা কোন রোগীকে দেখতে গেলে, তার জীবনের ব্যাপারে তাকে সান্ত্বনা যোগাবে, এ সান্ত্বনা যদিও তার তাক্বদীর পরিবর্তন করতে পারবে না। কিন্তু তার মন প্রশান্তি লাভ করবে। [১]
[১] খুবই দুর্বল : আত্ তিরমিযী ২০৮৭, ইবনু মাজাহ্ ১৪৩৮, শু‘আবুল ঈমান ৮৭৭৮, সিলসিলাহ্ আয্ য‘ঈফাহ্ ১৮৪। শায়খ আলবানী (রহঃ) বলেন, এর সানাদে মূসা বিন মুহাম্মাদ বিন ইব্রাহীম আত্ তায়মী রয়েছে যিনি মুনকারুল হাদীস হিসেবে আখ্যায়িত।

১৫৭৩

সহিহ হাদিস
وَعَنْ سُلَيْمَانَ بْنِ صَرَدٍ قَالَ: قَالَ رَسُولُ اللّهِ ﷺ: «مَنْ قَتَلَه بَطْنُه لَمْ يُعَذَّبْ فِي قَبْرِه» رَوَاهُ أَحْمَدُ وَالتِّرْمِذِيُّ وَقَالَ: هذَا حَدِيْثٌ غَرِيْبٌ

সুলায়মান ইবনু সুরাদ (রাঃ) থেকে বর্ণিতঃ

তিনি বলেন, রসূলুল্লাহ (সাল্লাল্লাহু ‘আলাইহি ওয়া সাল্লাম) বলেছেনঃ যাকে তার ‘পেটের অসুখ’ হত্যা করেছে, তাকে ক্ববরে শাস্তি দেয়া হবে না। [১]
[১] সহীহ : আত্ তিরমিযী ১০৬৪, নাসায়ী ২০৫২, আহমাদ ১৮৩১১, সহীহ আত্ তারগীব ১৪১০, সহীহ আল জামি‘ আস্ সগীর ৬৪৬১।

১৫৭১

দুর্বল হাদিস
وَعَن عَامِرِ الرَّامِ قَالَ: ذَكَرَ رَسُولُ اللّهِ ﷺ الْأَسْقَامَ فَقَالَ: «إِنَّ الْمُؤْمِنَ إِذَا أَصَابَهُ السَّقَمُ ثُمَّ أَعْفَاهُ الله مِنْهُ كَانَ كَفَّارَةً لِمَا مَضى مِنْ ذُنُوبِه وَمَوْعِظَةً لَه فِيمَا يَسْتَقْبِلُ. وَإِنَّ الْمُنَافِقَ إِذَا مَرِضَ ثُمَّ أُعْفِيَ كَانَ كَالْبَعِيْرِ عَقَلَه أَهْلُه ثُمَّ أَرْسَلُوهُ فَلَمْ يَدْرِ لِمَ عَقَلُوْهُ وَلَمْ يَدْرِ لِمَ أَرْسَلُوهُ» . فَقَالَ رَجُلٌ يَا رَسُولَ اللّهِ وَمَا الْأَسْقَامُ؟ وَاللّهِ مَا مَرِضْتُ قَطُّ فَقَالَ: «قُمْ عَنَّا فَلَسْتَ مِنَّا» . رَوَاهُ أَبُو دَاوُد

‘আমির আর্ র-ম (রাঃ) থেকে বর্ণিতঃ

তিনি বলেন, রসুলুল্লাহ (সাল্লাল্লাহু ‘আলাইহি ওয়া সাল্লাম) একদিন অসুখ-বিসুখ প্রসঙ্গে বললেন, মু’মিনের অসুখ হলে পরিশেষে আল্লাহ তাকে আরোগ্য করেন। এ অসুখ তার জীবনের অতীত গুনাহের কাফ্‌ফারাহ্। আর ভবিষ্যতের জন্য শিক্ষা। কিন্তু মুনাফিকের অসুখ-বিসুখ হলে তাকেও আরোগ্য দান করা হয়, সেই উটের মতো যাতে মালিক বেঁধে রেখেছিলো তারপর ছেড়ে দিলো। সে বুঝলো না কেন তাকে বেঁধে রেখেছিল। আর কেনইবা ছেড়ে দিলো। এ সময় এক ব্যাক্তি বলে উঠলো, হে আল্লাহর রসূল! অসুখ-বিসুখ আবার কি? আল্লাহর শপথ আমার কোন সময় অসুখ হয়নি। রসূলুল্লাহ (সাল্লাল্লাহু ‘আলাইহি ওয়া সাল্লাম) বললেন, আমাদের কাছ থেকে সরে যাও। তুমি আমাদের মধ্যে গণ্য নও। [১]
[১] য‘ঈফ : আবূ দাঊদ ৩০৮৯, শু‘আবুল ঈমান ৬৭২৮, য‘ঈফ আত্ তারগীব ১৯৯৯, সহীহ আল জামি‘ ১৭৬৭, শারহুস্ সুন্নাহ্ ১৪৪০। শায়খ আলবানী (রহঃ) বলেন, এর সানাদে শামের (সিরিয়ার) অধিবাসী আবুল মানযূর রয়েছে যিনি একজন দুর্বল রাবী।
/ পরিচ্ছেদঃ তৃতীয় অনুচ্ছেদ

১৫৭৭

সহিহ হাদিস
وَعَنْ عَطَاءِ بْنِ أَبِىْ رَبَاحٍ قَالَ: قَالَ لِي ابْنُ عَبَّاسٍ رَضِي الله عَنهُ: أَلَا أُرِيْكَ امْرَأَةً مِنْ أَهْلِ الْجنَّةِ؟ فَقُلْتُ: بَلى. قَالَ: هذِهِ الْمَرْأَةُ السَّوْدَاءُ أَتَتِ النَّبِيَِّ ﷺ فَقَالَتْ: إِنِّىْ أُصْرِعُ وَإِنِّىْ أَتَكَشَفُ فَادْعُ اللهَ تَعَالى ليْ. قَالَ: «إِنْ شِئْتِ صَبَرْتِ وَلَكِ الْجَنَّةُ وَإِنْ شِئْتِ دَعَوْتُ اللهَ تَعَالَى أَنْ يُعَافِيَكِ» فَقَالَتْ: أَصْبِرُ فَقَالَتْ: إِنِّىْ أَتَكَشَّفُ فَادْعُ اللّهَ أَنْ لَا أَتَكَشَّفَ فَدَعَا لَهَا. (مُتَّفَقٌ عَلَيْهِ)

‘আত্বা ইবনু আবূ রবাহ (রহঃ) থেকে বর্ণিতঃ

তিনি বলেন, ‘আব্বাস (রাঃ) আমাকে একবার বললেন, হে ‘আত্বা! আমি কি তোমাকে একটি জান্নাতী মহিলা দেখাব না? আমি বললাম, জ্বি হ্যাঁ। তিনি বললেন, তাহলে এ কালো মহিলাটিকে দেখো। এ মহিলাটি একবার নাবী (সাল্লাল্লাহু ‘আলাইহি ওয়া সাল্লাম) এর কাছে এসে বলল, হে আল্লাহর রসূল! আমি মৃগী রোগে আক্রান্ত। রোগের ভয়াবহতার ফলে আমি উলঙ্গ হয়ে যাই। আমার জন্য আল্লাহর কাছে দু’আ করুন। তার কথা শুনে রসূলুল্লাহ (সাল্লাল্লাহু ‘আলাইহি ওয়া সাল্লাম) বললেন, যদি তুমি চাও, সবর করতে পার। তাহলে তোমার জন্য জান্নাত রয়েছে। আর তুমি চাইলে, আমি তোমার আরোগ্যের জন্য দু’আ করব। আল্লাহ যেন তোমাকে ভাল করে দেন। জবাবে মহিলাটি বলল, আমি সবর করব। পুনরায় মহিলাটি বলল, হে আল্লাহর রসূল! আমি উলঙ্গ হয়ে যাই। দু’আ করুন আমি যেন উলঙ্গ হয়ে না পড়ি। তিনি (সাল্লাল্লাহু ‘আলাইহি ওয়া সাল্লাম) তার জন্য দু’আ করলেন। [১]
[১] সহীহ : বুখারী ৫৬৫২, মুসলিমর ২৫৭৬, সুনানুল কুবরা লিল বায়হাক্বী ৭৪৪৮, শারহুস্ সুন্নাহ্ ১৪২৩, সহীহ আদাবুল মুফরাদ ৫০৫, সহীহ আত্ তারগীব ৩৪১৮।

১৫৭৮

দুর্বল মুরসাল
وَعَنْ يَحْيَى بْنِ سَعِيدٍ قَالَ: إِنَّ رَجُلًا جَاءَهُ الْمَوْتُ فِي زَمَنِ رَسُولِ اللّهِ ﷺ فَقَالَ رَجُلٌ: هَنِنْئًا لَه مَاتَ وَلَمْ يُبْتَلَ بِمَرَضٍ فَقَالَ رَسُولُ اللّهِ ﷺ: «وَيْحَكَ وَمَا يُدْرِيكَ لَوْ أَنَّ اللّهَ ابْتَلَاهُ بِمَرَضٍ فَكَفَّرَ عَنهُ مِنْ سَيِّئَاتِه» . رَوَاهُ مَالِكٌ مُرْسَلًا

ইয়াহ্ইয়া ইবনু সা‘ঈদ (রহঃ) থেকে বর্ণিতঃ

তিনি বলেন, রসূলুল্লাহ (সাল্লাল্লাহু ‘আলাইহি ওয়া সাল্লাম)-এর কালে এক ব্যক্তির মৃত্যু হলো। এ সময় আর এক ব্যক্তি মন্তব্য করল, লোকটির ভাগ্য ভাল। মারা গেল কিন্তু কোন রোগে ভুগতে হল না। এ কথা শুনে রসূলুল্লাহ (সাল্লাল্লাহু ‘আলাইহি ওয়া সাল্লাম) বললেন, আহ্! তোমাকে কে বলল, লোকটির ভাগ্য ভাল? যদি আল্লাহ তা’আলা লোকটিকে কোন রোগে ফেলতেন, আর তার গুনাহ মাফ করে দিতেন তাহলেই না সবচেয়ে ভাল হতো! [১]
[১] মুরসাল য‘ঈফ : মুয়াত্ত্বা মালিক ১৭৫৩, য‘ঈফ আত্ তারগীব ২০০৫। কারণ হাদীসটি মুরসাল।

১৫৭৪

সহিহ হাদিস
عَنْ أنَسٍ قَالَ: كَانَ غُلَامٌ يَهُودِيٌّ يَخْدُمُ النَّبِيَّ ﷺ فَمَرِضَ فَأَتَاهُ النَّبِيُّ ﷺ يَعُودُه فَقَعَدَ عِنْدَ رَأْسِه فَقَالَ لَه: «أَسْلِمْ» . فَنَظَرَ إِلى أَبِيْهِ وَهُوَ عِنْدَه فَقَالَ: أَطِعْ أَبَا الْقَاسِمِ. فَأَسْلَمَ. فَخَرَجَ النَّبِيُّ ﷺ وَهُوَ يَقُولُ: «الْحَمْدُ لِلّهِ الَّذِىْ أَنْقَذَه مِنَ النَّارِ» . رَوَاهُ البُخَارِيُّ

আনাস (রাঃ) থেকে বর্ণিতঃ

তিনি বলেন, এক ইয়াহুদী যুবক নাবী (সাল্লাল্লাহু ‘আলাইহি ওয়া সাল্লাম) -এর খিদমাত করতেন। তাঁর মৃত্যুশয্যায় নাবী (সাল্লাল্লাহু ‘আলাইহি ওয়া সাল্লাম) তাকে দেখতে গেলেন। তিনি তার মাথার পাশে বসে বললেন, হে অমুক! তুমি ইসলাম গ্রহণ করো। যুবকটি তার পাশে থাকা পিতার দিকে তাকাল। পিতা তাকে বলল, আবুল ক্বাসিমের কথা মেনে নাও। যুবকটি ইসলাম গ্রহণ করলো। এরপর নাবী (সাল্লাল্লাহু ‘আলাইহি ওয়া সাল্লাম) তার কাছ থেকে বের হয়ে এসে বললেন, আল্লাহর শুকরিয়া। তিনি তাকে জাহান্নাম থেকে মুক্তি দিলেন। [১]
[১] সহীহ : বুখারীর ১৩৫৬, নাসায়ী ৩০৯৫, আহমাদ ১৩৯৭৭, ইবনু হিব্বান ৪৮৮৮, সুনানুল কুবরা লিল বায়হাক্বী ১২১৫৭, শারহুস্ সুন্নাহ্ ৫৭, ইরওয়া ১২৭২।

১৫৭৬

সহিহ হাদিস
وَعَنِ ابْنِ عَبَّاسٍ قَالَ: إِنَّ عَلِيًّا خَرَجَ مِنْ عِنْدِ النَّبِيِّ ﷺ فِي وَجَعِهِ الَّذِىْ تُوُفِّيَ فِيهِ فَقَالَ النَّاسُ: يَا أَبَا الْحَسَنِ كَيْفَ أَصْبَحَ رَسُولُ اللّهِ ﷺ؟ قَالَ: أَصْبَحَ بِحَمْدِ الله بَارِئًا. رَوَاهُ البُخَارِيُّ

‘আবদুল্লাহ ইবনু ‘আব্বাস (রাঃ) থেকে বর্ণিতঃ

তিনি বলেন, আল্লাহর নাবী (সাল্লাল্লাহু ‘আলাইহি ওয়া সাল্লাম) যে রোগে মৃত্যুবরণ করেছেন, সে অসুখের সময় একদিন ‘আলী (রাঃ) তাঁর কাছ থেকে বের হয়ে এলেন। লোকেরা জিজ্ঞেস করলো, হে আবু হাসান! আজ সকালে আল্লাহর রসূলের অবস্থা কেমন রয়েছে? ‘আলী (রাঃ) বললেন, আলহামদুলিল্লাহ সকাল ভালই যাচ্ছে। [১]
[১] সহীহ : বুখারীর ৪৪৪৭, আহমাদ ২৩৭৪, সুনানুল কুবরা লিল বায়হাক্বী ১৬৫৭৪, সহীহ আদাবুল মুফরাদ ১১৩০।

১৫৭৫

হাসান হাদিস
وَعَنْ أَبِىْ هُرَيْرَةَ قَالَ: قَالَ رَسُولُ اللّهِ ﷺ: «مَنْ عَادَ مَرِيضًا نَادى مُنَادٍ فِي السَّمَاءِ: طِبْتَ وَطَابَ مَمْشَاكَ وَتَبَوَّأْتَ مِنَ الْجَنَّةِ مَنْزِلًا». رَوَاهُ ابْنُ مَاجَهْ

আবূ হুরায়রাহ্ (রাঃ) থেকে বর্ণিতঃ

তিনি বলেন, রসূলুল্লাহ (সাল্লাল্লাহু ‘আলাইহি ওয়া সাল্লাম) ইরশাদ করেছেনঃ যে ব্যক্তি রোগীকে দেখার জন্য যায়, আসমান থেকে একজন মালাক (ফেরেশতা) তাকে লক্ষ্য করে বলেন, ধন্য হও তুমি, ধন্য হোক তোমার পথ চলা। জান্নাতে তুমি একটি মনযিল তৈরি করে নিলে। [১]
[১] হাসান : আত্ তিরমিযী ৮৬১১, ইবনু মাজাহ্ ১৪৪৩, আহমাদ ৮৫৩৬, সহীহ আত্ তারগীব ২৫৭৮, সহীহ আল জামি‘ আস্ সগীর ৬৩৮৭।

১৫৭৯

হাসান হাদিস
وَعَنْ شَدَّادِ بْنِ أَوْسٍ وَالصَّنَابِحِيِّ أَنَّهُمَا دَخَلَا عَلى رَجُلٍ مَرِيضٍ يَعُودَانِه فَقَالَا لَه: كَيفَ أَصْبَحْتَ قَالَ أَصْبَحْتُ بِنِعْمَةٍ. فَقَالَ لَه شَدَّادٌ: أَبْشِرْ بِكَفَّارَاتِ السَّيِّئَاتِ وَحَطِّ الْخَطَايَا فَإِنِّي سَمِعْتُ رَسُولَ اللّهِ ﷺ يَقُولُ: «إِنَّ اللّهَ عَزَّ وَجَلَّ يَقُولُ إِذَا أَنَا ابْتَلَيْتُ عَبْدًا مِنْ عِبَادِىْ مُؤْمِنًا فَحَمِدَنِىْ عَلى مَا ابْتَلَيْتُه فَإِنَّه يَقُومُ مِنْ مَضْجَعِه ذلِكَ كَيَوْمِ وَلَدَتْهُ أُمُّه مِنَ الْخَطَايَا. وَيَقُولُ الرَّبُّ تَبَارَكَ وَتَعَالى: أَنَا قَيَّدْتُ عَبْدِىْ وَابْتَلَيْتُه فَأَجْرُوا لَه مَا كُنْتُمْ تُجْرُونَ لَه وَهُوَ صَحِيْحٌ». رَوَاهُ اَحْمَدُ

শাদ্দাদ ইবন আওস ও সুনাবিহী (রাঃ) থেকে বর্ণিতঃ

একবার তাঁরা দু’জন এক রোগীকে দেখতে গেলেন। তাঁরা তাকে জিজ্ঞেস করলেন, আজ সকালটা তোমার কেমন যাচ্ছে? রোগীটি বলল, আল্লাহর রহ্‌মতে ভালই। তার কথা শুনে শাদ্দাদ বললেন, তোমার গুনাহ ও অপরাধ মাফ হবার শুভ সংবাদ! কারণ আমি রসূলুল্লাহ (সাল্লাল্লাহু ‘আলাইহি ওয়া সাল্লাম)-কে বলতে শুনেছি, তিনি বলেছেন, আল্লাহ বলেন, আমি আমার বান্দাদের মধ্যে কোন মু’মিন বান্দাকে রোগাক্রান্ত করি। রোগগ্রস্ত করা সত্ত্বেও যে আমার শুকরিয়া আদায় করবে, সে রোগশয্যা হতে সদ্যপ্রসূত শিশুর মতো সব গুনাহ হতে পবিত্র হয়ে উঠবে। রসূলুল্লাহ (সাল্লাল্লাহু ‘আলাইহি ওয়া সাল্লাম) বলেছেনঃ আল্লাহ তা’আলা মালাকগণকে (ফেরেশতাদেরকে) বলেন, আমি আমার বান্দাকে রোগ দিয়ে বন্দী করে রেখেছি। তাই তোমরা তার সুস্থ অবস্থায় তার জন্য যা লিখতে তা-ই লিখো। [১]
[১] হাসান : আহমাদ ১৭১১৮, সিলসিলাহ্ আস্ সহীহাহ্ ২০০৯, সহীহ আত্ তারগীব ৩৪২৩, সহীহ আল জামি‘ আস্ সগীর ৪৩০০।

১৫৮০

দুর্বল হাদিস
وَعَنْ عَائِشَةَ رَضِيَ اللّهُ عَنْهَا قَالَتْ: قَالَ رَسُولُ اللّهِ ﷺ: «إِذَا كَثُرَتْ ذُنُوبُ الْعَبْدِ وَلَمْ يَكُنْ لَه مَا يُكَفِّرُهَا مِنَ الْعَمَلِ ابْتَلَاهُ اللّهُ بِالْحَزَنِ لِيُكَفِّرَهَا عَنهُ» . رَوَاهُ أَحْمَدُ

‘আয়িশাহ্ (রাঃ) থেকে বর্ণিতঃ

তিনি বলেন, রসূলুল্লাহ (সাল্লাল্লাহু ‘আলাইহি ওয়া সাল্লাম) বলেছেনঃ বান্দার গুনাহ যখন বেশী হয়ে যায় এবং এসব গুনাহের কাফ্‌ফারার মতো যথেষ্ট নেক ‘আমাল তার না থাকে, তখন আল্লাহ তা’আলা তাকে বিপদে ফেলে চিন্তাগ্রস্ত করেন। যাতে এ চিন্তাগ্রস্ততা তার গুনাহের কাফ্‌ফারাহ্ হয়ে যায়। [১]
[১] য‘ঈফ : আহমাদ ২৫২৩৬, শু‘আবুল ঈমান ৯৪৫৭, সিলসিলাহ্ আয্ য‘ঈফাহ্ ২৬৯৫, য‘ঈফ আত্ তারগীব ১৯৯৪, য‘ঈফ আল জামি‘ ৬৭৮। শায়খ আলবানী (রহঃ) বলেন। এর সানাদে লায়স বিন সুলায়ম রয়েছে যিনি একজন দুর্বল এবং মুখতালাত্ব রাবী।

১৫৮৪

সহিহ হাদিস
وَعَنْ أَبِىْ هُرَيْرَةَ قَالَ: إِنَّ رَسُولَ اللّهِ ﷺ عَادَ مَرِيْضًا فَقَالَ:«أَبْشِرْ فَإِنَّ اللّهَ تَعَالى يَقُولُ: هِيَ نَارِي أُسَلِّطُهَا عَلى عَبْدِي الْمُؤْمِنِ فِي الدُّنْيَا لِتَكَوُنَ حَظَّه مِنَ النَّارِ يَوْمَ الْقِيَامَةِ». رَوَاهُ أَحْمَدُ وَابْنُ مَاجَهْ والْبَيْهَقِيُّ فِي شُعَبِ الْإِيْمَانِ

আবূ হুরায়রাহ্ (রাঃ) থেকে বর্ণিতঃ

তিনি বলেন, রসূলুল্লাহ (সাল্লাল্লাহু ‘আলাইহি ওয়া সাল্লাম) একবার এক অসু্স্থ লোককে দেখতে গিয়ে বললেন, সুসংবাদ! আল্লাহ তা’আলা বলেন, তা আমার আগুন। আমি দুনিয়াতে এ আগুনকে আমার মু’মিন বান্দার কাছে পাঠাই। তা’ এজন্যই যাতে এ আগুন ক্বিয়ামাতে তার জাহান্নামের আগুনের পরিপূরক হয়ে যায়। [১]
[১] সহীহ : ইবনু মাজাহ্ ৩৪৭০, আত্ তিরমিযী ২০৮৮, ইবনু আবী শায়বাহ্ ১০৮০২, আহমাদ ৯৬৭৬, সিলসিলাহ্ আস্ সহীহাহ্ ৫৫৭, সহীহ আল জামি‘ আস্ সগীর ৩২।

১৫৮১

সহিহ হাদিস
وَعَنْ جَابِرٍ قَالَ: قَالَ رَسُولُ اللّهِ ﷺ: «مَنْ عَادَ مَرِيْضًا لَمْ يَزَلْ يَخُوضُ الرَّحْمَةَ حَتّى يَجْلِسَ فَإِذَا جَلَسَ اغْتَمَسَ فِيْهَا» . رَوَاهُ مَالِكٌ وَأحْمَدُ

জাবির (রাঃ) থেকে বর্ণিতঃ

তিনি বলেন, রসূলুল্লাহ (সাল্লাল্লাহু ‘আলাইহি ওয়া সাল্লাম) বলেছেনঃ কোন ব্যক্তি যখন কোন রুগ্ন ব্যক্তিকে দেখার জন্য রওয়ানা হয় তখন সে আল্লাহর রহ্‌মাতের সাগরে সাঁতার কাটতে থাকে। যে পর্যন্ত রোগীর বাড়ী গিয়ে না পৌঁছে। আর বাড়ী পৌঁছার পর রহ্‌মাতের সাগরে ডুব দেয়। [১]
[১] সহীহ : আহমাদ ১৪২৬০, ইবনু আবী শায়বাহ্ ১০৮৩৪, সিলসিলাহ্ আস্ সহীহাহ্ ২৫০৪, সহীহ আত্ তারগীব ৩৪৭৭, ইবনু হিব্বান ২৯৫৬, সুনানুল কুবরা লিল বায়হাক্বী ৬৫৮৩।

১৫৮৫

দুর্বল হাদিস
وَعَنْ أَنَسٍ أَنَّ رَسُولَ اللّهِ ﷺ قَالَ: «إِنَّ الرَّبَّ سُبْحَانَه وَتَعَالى يَقُولُ: وَعِزَّتِىْ وَجَلَالِىْ لَا أُخْرِجُ أَحَدًا مِنَ الدُّنْيَا أُرِيْدُ أَغْفِرَ لَه حَتّى أَسْتَوْفِيَ كُلَّ خَطِيئَةٍ فِي عُنُقِه بِسَقَمٍ فِي بَدَنِه وَإِقْتَارٍ فِي رِزْقِه». رَوَاهُ رَزِيْنٌ

আনাস (রাঃ) থেকে বর্ণিতঃ

তিনি বলেন, রসূলুল্লাহ (সাল্লাল্লাহু ‘আলাইহি ওয়া সাল্লাম) বলেছেন: আমার মহান রব বলেন, আমার ইয্য্ত ও প্রতাপের শপথ, আমি ততক্ষণ কাউকে দুনিয়া হতে বের করে আনি না যতক্ষণ না তাকে ক্ষমা করে দেবার ইচ্ছা করি। যতক্ষণ না তার ঘাড়ে থাকা প্রত্যেকটি গুনাহকে তার দেহের কোন রোগ অথবা রিয্‌ক্বের সংকীর্ণতা দিয়ে বিনিময় করে দিই। [১]
[১] য‘ঈফ : আত্ তারগীব ওয়াত্ তারহীব ২০০৪।

১৫৮২

দুর্বল হাদিস
وَعَنْ ثَوْبَانَ أَنَّ رَسُولَ اللّهِ ﷺ قَالَ: «إِذَا أَصَابَ أَحَدَكُمُ الْحُمّى فَإِنَّ الْحُمّى قِطْعَةٌ مِنَ النَّارِ فَلْيُطْفِئْهَا عَنْهُ بِالْمَاءِ فَلْيَسْتَنْقِعْ فِي نَهْرٍ جَارٍ وَلْيَسْتَقْبِلْ جِرْيَتَه فَيَقُولُ: بِسْمِ اللّهِ اللّهُمَّ اشْفِ عَبْدَكَ وَصَدَقَ رَسُوْلُكَ بَعْدَ صَلَاةِ الصُّبْحِ وَقَبْلَ طُلُوعِ الشَّمْسِ وَلْيَنْغَمِسْ فِيهِ ثَلَاثَ غَمْسَاتٍ ثَلَاثَةَ أَيَّامٍ فَإِنْ لَمْ يَبْرَأْ فِي ثَلَاثٍ فَخَمْسٍ فَإِنْ لَمْ يَبْرَأْ فِي خَمْسٍ فَسَبْعٍ فَإِنْ لَمْ يَبْرَأْ فِي سَبْعٍ فَتِسْعٍ فَإِنَّهَا لَا تَكَادَ تُجَاوِزُ تِسْعًا بِإِذْنِ اللّهِ عَزَّ وَجَلَّ». رَوَاهُ التِّرْمِذِيُّ وَقَالَ: هذَا حَدِيثٌ غَرِيبٌ

সাওবান (রাঃ) থেকে বর্ণিতঃ

তিনি বলেন, রসূলুল্লাহ (সাল্লাল্লাহু ‘আলাইহি ওয়া সাল্লাম) বলেছেন: তোমাদের কারো জ্বর হলে জ্বর আগুনের অংশ, আগুনকে পানি দিয়ে নিভানো হয়। সে যেন ফাজ্‌রের সলাতের পর সূর্য উঠার আগে প্রবাহিত নদীতে ঝাঁপ দেয় আর ভাটার দিকে এগুতে থাকে। এরপর বলে, হে আল্লাহ! শেফা দান করো তোমার বান্দাকে। সত্যবাদী প্রমাণ করো তোমার রসূলকে। ওই ব্যক্তি যেন নদীতে তিনদিন তিনটি করে ডুব দেয়। এতে যদি তার জ্বর না সারে তবে পাঁচদিন। তাতেও না সারলে, সাতদিন। সাতদিনেও যদি আরোগ্য না হয় তাহলে নয়দিন। আল্লাহর রহমাতে জ্বর-এর অধিক আগে বাড়বে না। [১]
[১] য‘ঈফ : আত্ তিরমিযী ২০৮৪, সিলসিলাহ্ আয্ য‘ঈফাহ্ ২৩৩৯, য‘ঈফ আল জামি‘ আস্ সগীর ৩৭৫। শায়খ আলবানী (রহঃ) বলেন, এর সানাদে رَجُلٌ হলো সা‘ঈদ বিন যুর‘আহ্ আল হিমসী। ইমাম আবূ হাতিম এবং যাহাবী (রহঃ) তাকে ‘‘মাজহূল’’ আর হাফিয ইবনু হাজার (রহঃ) ‘‘মাসতুর’’ বলে অবহিত করেছেন।

১৫৮৩

সহিহ হাদিস
وَعَنْ أَبِىْ هُرَيْرَةَ قَالَ: ذُكِرَتِ الْحُمّى عِنْدَ رَسُولِ اللّهِ ﷺ فَسَبَّهَا رَجُلٌ فَقَالَ النَّبِيُّ ﷺ: «لَا تَسُبَّهَا فَإِنَّهَا تَنْفِي الذُّنُوبَ كَمَا تَنْفِي النَّارُ خَبَثَ الْحَدِيدِ» . رَوَاهُ ابْنُ مَاجَهْ

আবূ হুরায়রাহ্ (রাঃ) থেকে বর্ণিতঃ

তিনি বলেন, রসূলুল্লাহ (সাল্লাল্লাহু ‘আলাইহি ওয়া সাল্লাম)-এর কাছে একবার জ্বর সম্পর্কে আলোচনা করা হলো। এ সময় এক লোক জ্বরকে গালি দিলো। এ কথা শুনে আল্লাহর নাবী (সাল্লাল্লাহু ‘আলাইহি ওয়া সাল্লাম) বললেন, জ্বরকে গালি দিও না। কারণ জ্বর গুনাহ দূর করে যেভাবে (কামারের) হাপর লোহার মরিচা দূর করে দেয়। [১]
[১] সহীহ : ইবনু মাজাহ্ ৩৪৬৯, ইবনু আবী শায়বাহ্ ১০৮১০।

১৫৮৬

নির্ণীত নয়
وَعَنْ شَقِيْقٍ قَالَ: مَرِضَ عَبْدُ اللهِ بْنِ مَسْعُوْدٍ فَعُدْنَاهُ فَجَعَلَ يَبْكِىْ فَعُوتِبَ فَقَالَ: إِنِّي لَا أَبْكِىْ لِأَجْلِ الْمَرَضِ لِأَنِّىْ سَمِعْتُ رَسُولَ اللّهِ ﷺ يَقُولُ: «الْمَرَضُ كَفَّارَةٌ» وَإِنَّمَا أَبْكِىْ أَنَّه أَصَابَنِىْ عَلى حَالِ فَتْرَةٍ وَلَمْ يُصِبْنِىْ فِىْ حَالِ اجْتِهَادٍ لِأَنَّه يُكْتَبُ لِلْعَبْدِ مِنَ الْأَجْرِ إِذَا مَرِضَ مَا كَانَ يُكْتَبُ لَه قَبْلَ أَنْ يَمْرَضَ فَمَنَعَه مِنْهُ الْمَرَضُ. رَوَاهُ رَزِيْنٌ

শাক্বীক্ব (রহঃ) থেকে বর্ণিতঃ

তিনি বলেন, একবার ‘আবদুল্লাহ ইবনু মাস্’উদ (রাঃ) অসুস্থ হলে আমরা দেখতে গেলাম। আমাদেরকে দেখে তিনি কাঁদতে শুরু করলেন। তা দেখে তাঁকে কেউ কেউ খারাপ বলতে লাগলেন। সে সময় ‘আবদুল্লাহ ইবনু মাস্’উদ (রাঃ) বললেন, আমি অসুখের জন্য কাঁদছি না। আমি শুনেছি, রসূলুল্লাহ (সাল্লাল্লাহু ‘আলাইহি ওয়া সাল্লাম) বলেছেনঃ অসুখ হচ্ছে গুনাহের কাফ্‌ফারাহ্। আমি বরং কাঁদছি এজন্য যে, এ অসুখ হল আমার বৃদ্ধ বয়সে। আমার শক্তি-সামর্থ্য থাকার সময়ে হল না। কারণ মানুষ যখন অসুস্থ হয় তার জন্য সে সাওয়াব লেখা হয়, যা অসুস্থ হবার আগে তার জন্য লেখা হত। এজন্যই যে অসুস্থতা তাকে ওই ‘ইবাদাত করতে বাধা দেয়। [১]
[১] রযীন : এর তাখরিজটি সম্পূর্ণ পাওয়া হয়নি।

১৫৯০

দুর্বল হাদিস
وَعَنْ أَنَسٍ قَالَ: قَالَ رَسُولُ اللّهِ ﷺ: «اَلْعِيَادَةُ فَوَاقُ نَاقَةٍ

আনাস (রাঃ) থেকে বর্ণিতঃ

তিনি বলেন, রসূলুল্লাহ (সাল্লাল্লাহু ‘আলাইহি ওয়া সাল্লাম) বলেছেনঃ রোগী দেখতে অল্প সময় নেবে। [১]
[১] য‘ঈফ : শু‘আবুল ঈমান ৮৭৮৬, সিলসিলাহ্ আয্ য‘ঈফাহ্ ৩৯৫৪, য‘ঈফ আল জামি‘ আস্ সগীর ৩৮৯৯। শায়খ আলবানী (রহঃ) বলেন, এর সানাদে ইসমা‘ঈল বিন আল ক্বাসিম একজন দুর্বল রাবী এবং আবূ ‘আলী আল আনাযীও একজন দুর্বল রাবী যেমনটি হাফিয হাজার ‘‘তাকরীবে’’ বলেছেন।

১৫৯১

দুর্বল হাদিস
وَفِي رِوَايَةِ سَعِيدِ بْنِ الْمُسَيَّبِ مُرْسَلًا: «أَفْضَلُ الْعِيَادَةِ سُرْعَةُ الْقِيَامِ» . رَوَاهُ الْبَيْهَقِيُّ فِي شُعَبِ الْإِيمَانِ

সা‘ঈদ ইবনু মুসাইয়্যিব- থেকে বর্ণিতঃ

রোগীকে দেখার উত্তম নিয়ম হলো তাড়াতাড়ি উঠে যাওয়া। [১]
[১] য‘ঈফ : শু‘আবুল ঈমান ৮৭৮৫, সিলসিলাহ্ আয্ য‘ঈফাহ্ ২৫১৭। শায়খ আলবানী (রহঃ) বলেন, হাদীসটি মুরসাল হওয়ার সাথে আরো দু’টি কারণে য‘ঈফ। প্রথমতঃ বাসারী শায়খ একজন মাজহূল রাবী এবং দ্বিতীয়তঃ আবূ মুহাম্মাদ আল ‘আতাকী আমার নিকট একজন অপরিচিত রাবী।

১৫৮৮

খুবই দুর্বল
وَعَنْ عُمَرَ بْنِ الْخَطَّابِ قَالَ قَالَ رَسُولُ اللّهِ ﷺ: إِذَا دَخَلْتَ عَلى مَرِيْضٍ فَمُرْهُ يَدْعُو لَكَ فَإِنَّ دُعَاءَه كَدُعَاءِ الْمَلَائِكَةِ . رَوَاهُ ابْنُ مَاجَهْ

উমার ইবনুল খাত্ত্বাব (রাঃ) থেকে বর্ণিতঃ

তিনি বলেন, রসূলুল্লাহ (সাল্লাল্লাহু ‘আলাইহি ওয়া সাল্লাম) বলেছেনঃ তুমি কোন অসুস্থ লোককে দেখতে গেলে, তাকে তোমার জন্য দু’আ করতে বলবে। কারণ রুগ্ন লোকের দু’আ মালায়িকার (ফেরেশ্‌তাদের) দু’আর মতো। [১]
[১] খুবই দুর্বল : ইবনু মাজাহ্ ১৪৪১, সিলসিলাহ্ আয্ য‘ঈফাহ্ ১০০৪, য‘ঈফ আত্ তারগীব ২০২৯, য‘ঈফ আল জামি‘ আস্ সগীর ৪৮৭। আলবানী (রহঃ) বলেন, হাদীসটি দু’টি কারণে দুর্বল। প্রথমতঃ মায়মূন বিন মিহরান এবং ‘উমার (রা)-এর মাঝে বিচ্ছিন্নতা। আর দ্বিতীয়তঃ জা‘ফার বিন বুরক্বর হতে কাসীর বিন হিশাম সরাসরি হাদীস বর্ণনা করেননি। বরং উভয়ের মাঝে হাসান বিন আরফায রয়েছে যিনি মূলত একজন মিথ্যার অপবাদপ্রাপ্ত রাবী।

১৫৮৭

জাল হাদিস
وَعَنْ أَنَسٍ قَالَ: كَانَ النَّبِيُّ ﷺ لَا يَعُوْدُ مَرِيْضًا إِلَّا بَعْدَ ثَلَاثٍ. رَوَاهُ ابْنُ مَاجَهْ وَالْبَيْهَقِيُّ فِي شُعَبِ الْإِيمَانِ

আনাস (রাঃ) থেকে বর্ণিতঃ

তিনি বলেন, আল্লাহর নাবী (সাল্লাল্লাহু ‘আলাইহি ওয়া সাল্লাম) কোন রোগীকে (রোগগ্রস্ত হবার পর) তিনদিন না হওয়া পর্যন্ত দেখতে যেতেন না। [১]
[১] মাওযূ‘ : ইবনু মাজাহ্ ১৪৩৭, শু‘আবুল ঈমান ৮৭৮১, সিলসিলাহ্ আয্ য‘ঈফাহ্ ১৪৫, য‘ঈফ আল জামি‘ ৪৪৯৯। শায়খ আলবানী (রহঃ) বলেন, এর সানাদে ইবনু জুরায়জ একজন মুদ্দালিস রাবী এবং মাসলামাহ্ বিন ‘আলী মিথ্যার অপবাদপ্রাপ্ত।

১৫৮৯

নির্ণীত নয়
وَعَنِ ابْنِ عَبَّاسٍ قَالَ: مِنَ السُّنَّةِ تَخْفِيفُ الْجُلُوسِ وَقِلَّةُ الصَّخَبِ فِي الْعِيَادَةِ عِنْدَ الْمَرِيضِ قَالَ: وَقَالَ رَسُولُ اللّهِ ﷺ لَمَّا كَثُرَ لَغَطُهُمْ وَاخْتِلَافُهُمْ: «قُومُوا عَنِّىْ» رَوَاهُ رَزِيْنٌ

‘আবদুল্লাহ ইবনু ‘আব্বাস (রাঃ) থেকে বর্ণিতঃ

তিনি বলেন, রোগীকে দেখতে যাবার পর নিয়ম হলো, রোগীর কাছে বসা। তার কাছে উচ্চৈঃস্বরে কথা না বলা। ইবনু ‘আব্বাস তাঁর এ কথার সমর্থনে বলেন, রসূলুল্লাহ (সাল্লাল্লাহু ‘আলাইহি ওয়া সাল্লাম)-এর মৃত্যুশয্যায় তাঁর পাশে লোকেরা বেশি কথাবার্তা ও মতভেদ শুরু করলে তিনি বলেন, তোমরা আমার কাছ থেকে সরে যাও। [১]
[১] রযীন : এর তাখরিজ সম্পূর্ণ হয়নি। তবে হাদীসটি মারফূ‘ সূত্রে বুখারীতে রয়েছে।

১৫৯২

দুর্বল হাদিস
وَعَنِ ابْنِ عَبَّاسٍ: أَنَّ النَّبِيَّ ﷺ عَادَ رَجُلًا فَقَالَ لَه: «مَا تَسْتَهِيْ؟» قَالَ: أَشْتَهِيْ خُبْزَ بُرٍّ. قَالَ النَّبِيُّ ﷺ: «مَنْ كَانَ عِنْدَه خُبْزُ بُرٍّ فَلْيَبْعَثْ إِلى أَخِيهِ» . ثُمَّ قَالَ النَّبِيُّ ﷺ: «إِذَا اشْتَهى مَرِيْضُ أَحَدِكُمْ شَيْئًا فَلْيُطْعِمْهُ» . رَوَاهُ ابْنُ مَاجَهْ

আবদুল্লাহ ইবনু ‘আব্বাস (রাঃ) থেকে বর্ণিতঃ

তিনি বলেন, নাবী (সাল্লাল্লাহু ‘আলাইহি ওয়া সাল্লাম) একবার একজন রোগীকে দেখতে গিয়ে তাকে জিজ্ঞেস করলেন, কি খেতে তোমার মন চায়? জবাবে সে বলল, গমের রূটি। এ কথা শুনে নাবী (সাল্লাল্লাহু ‘আলাইহি ওয়া সাল্লাম) বললেন, তোমাদের কাছে গমের রুটি আছে সে যেন তা তার ভাইয়ের জন্য পাঠায়। তারপর তিনি বললেন, তোমাদের কোন রোগী কিছু খেতে চাইলে, তাকে তা খাওয়াবে। [১]
[১] য‘ঈফ : ইবনু মাজাহ্ ১৪৩৯, ৩৪৪০। শায়খ আলবানী (রহঃ) বলেন, এর সানাদে সফ্ওয়ান বিন হুরায়রাহ্ সম্পর্কে হাফিয ইবনু হাজার (রহঃ) বলেছেন, সে লীনুল হাদীস (হাদীস বর্ণনায় শিথিল)।

১৫৯৪

দুর্বল হাদিস
وَعَنِ ابْنِ عَبَّاسٍ قَالَ: قَالَ رَسُولُ اللّهِ ﷺ: «مَوْتُ غُرْبَةٍ شَهَادَةٌ» . رَوَاهُ ابْنُ مَاجَهْ

‘আবদুল্লাহ ইবনু ‘আব্বাস (রাঃ) থেকে বর্ণিতঃ

তিনি বলেন, রসূলুল্লাহ (সাল্লাল্লাহু ‘আলাইহি ওয়া সাল্লাম) বলেছেনঃ যে ব্যক্তি সফররত অবস্থায় মারা যায় সে শাহীদ। [১]
[১] য‘ঈফ : ইবনু মাজাহ্ ১৬১৩, য‘ঈফ আত্ তারগীব ১৮২৫। শায়খ আলবানী (রহঃ) বলেছেন, এর সানাদে আবুল মুনযির আল হুযায়ল বিন আল হাকাম রয়েছে যাকে ইমাম বুখারী এবং ইমাম যাহাবী (রহঃ) মুনকারুল হাদীস বলেছেন।

১৫৯৫

জাল হাদিস
وَعَنْ أَبِىْ هُرَيْرَةَ قَالَ: قَالَ رَسُولُ اللّهِ ﷺ: «مَنْ مَاتَ مَرِيْضًا مَاتَ شَهِيدًا أَوْ وُقِيَ فِتْنَةَ الْقَبْرِ وَغُدِيَ وَرِيحَ عَلَيْهِ بِرِزْقِه مِنَ الْجَنَّةِ» . رَوَاهُ ابْنُ مَاجَهْ وَالْبَيْهَقِيُّ فِي شُعَبِ الْإِيمَانِ

আবূ হুরায়রাহ্ (রাঃ) থেকে বর্ণিতঃ

তিনি বলেন, যে ব্যক্তি রোগে ভুগে মারা যায়, সে শাহীদ হয়ে মারা গেল; তাকে ক্ববরের ফিতনাহ্ হতে রক্ষা করা হবে। এছাড়াও সকাল-সন্ধ্যায় তাকে জান্নাত থেকে রিয্‌ক্ব দেয়া হবে। [১]
[১] মাওযূ‘ : আত্ তিরমিযী ১৬১৫, শু‘আবুল ঈমান ৯৪২৫, সিলসিলাহ্ আয্ য‘ঈফাহ্ ৪৬৬১, য‘ঈফ আল জামি‘ আস্ সগীর ৫৮৫০। কারণ এর সানাদে ইব্রাহীম বিন মুহাম্মাদ রয়েছে যাকে ইয়াহ্ইয়া বিন সা‘ঈদ এবং ইবনু মা‘ঈন মিথ্যুক বলেছেন আর দারাকুত্বনী মাতরূক বলেছেন।

১৫৯৭

হাসান লিগাইরিহি
وَعَنْ جَابِرٍ أَنَّ رَسُولَ اللّهِ ﷺ قَالَ: «الْفَارُّ مِنَ الطَّاعُونِ كَالْفَارِّ مِنَ الزَّحْفِ وَالصَّابِرُ فِيهِ لَه أَجْرُ شَهِيدٍ» . رَوَاهُ أَحْمَدُ

জাবির (রাঃ) থেকে বর্ণিতঃ

রসুলুল্লাহ (সাল্লাল্লাহু ‘আলাইহি ওয়া সাল্লাম) বলেছেনঃ প্লেগ রোগ চড়িয়ে পড়লে ওখান থেকে ভেগে যাওয়া যুদ্ধের ময়দান থেকে ভেগে যাবার মতো। প্লেগ ছড়িয়ে পড়লে সেখানেই ধৈর্য ধরে অবস্থানকারী শাহীদের সাওয়াব পাবে। [১]
[১] হাসান লিগায়রিহী : আহমাদ ১৪৮৭৫, সিলসিলাহ্ আস্ সহীহাহ্ ১২৯৩, সহীহ আল জামি‘ আস্ সগীর ৪২৭৭।

১৫৯৩

হাসান হাদিস
وَعَنْ عَبْدِ اللهِ بْنِ عَمْرٍو قَالَ تُوُفِّيَ رَجُلٌ بِالْمَدِينَةِ مِمَّنْ وُلِدَ بِهَا فَصَلّى عَلَيْهِ النَّبِيُِّ ﷺ فَقَالَ: «يَا لَيْتَه مَاتَ بِغَيْرِ مَوْلِدِه» . قَالُوا وَلِمَ ذَاكَ يَا رَسُولَ اللّهِ؟ قَالَ: «إِنَّ الرَّجُلَ إِذَا مَاتَ بِغَيْرِ مَوْلِدِه قِيسَ لَه مِنْ مَوْلِدِه إِلَى مُنْقَطَعِ أَثَرِه فِي الْجَنَّةِ» . رَوَاهُ النَّسَائِيُّ وَابْنُ مَاجَهْ

‘আবদুল্লাহ ইবনু ‘আমর (রাঃ) থেকে বর্ণিতঃ

তিনি বলেন, এক ব্যক্তি মাদীনায় মারা গেলেন, মাদীনায়ই তার জন্ম হয়েছিল। রসূলুল্লাহ (সাল্লাল্লাহু ‘আলাইহি ওয়া সাল্লাম) তার জানাযায় সলাত আদায় করালেন। তারপর তিনি বললেন, হায়! এ ব্যক্তি যদি তার জন্মস্থান ছাড়া অন্য কোন জায়গায় মৃত্যুবরণ করত। সহাবীগণ জিজ্ঞেস করলেন, কেন? হে আল্লাহর রসূল! তখন তিনি বললেন, কোন লোক জন্মস্থান ছাড়া অন্য কোথাও মৃত্যুবরণ করলে তার মৃত্যুস্থান ও জন্মস্থানের মধ্যবর্তী স্থান জান্নাতের জায়গা হিসেবে গণ্য করা হয়। [১]
[১] হাসান : নাসায়ী ১৮৩২, ইবনু মাজাহ্ ১৬১৪, সহীহ আত্ তারগীব ৩১৩৪।

১৫৯৬

সহিহ হাদিস
عَن الْعِرْبَاضِ بْنِ سَارِيَةَ أَنَّ رَسُولَ اللّهِ ﷺ قَالَ: «يَخْتَصِمُ الشُّهَدَاءُ وَالْمُتَوَفَّوْنَ عَلى فُرُشِهِمْ إِلى رَبِّنَا فِي الَّذِيْنَ يُتَوَفَّوْنَ مِنَ الطَّاعُونِ فَيَقُولُ الشُّهَدَاءُ: إِخْوَانُنَا قُتِلُوْا كَمَا قُتِلْنَا وَيَقُوْلُ: الْمُتَوَفُّوْنَ عَلى فُرُشِهِمْ إِخْوَانُنَا مَاتُوا عَلى فُرُشِهِمْ كَمَا مِتْنَا فَيَقُولُ رَبُّنَا: انْظُرُوا إِلى جِرَاحِهِمْ فَإِنْ أَشْبَهَتْ جِرَاحُهُمْ جِرَاحَ الْمَقْتُولِيْنَ فَإِنَّهُمْ مِنْهُمْ وَمَعَهُمْ فَإِذَا جِرَاحُهُمْ قَدْ أَشْبَهَتْ جِرَاحَهُمْ». رَوَاهُ أَحْمَدُ وَالنَّسَائِيُّ

‘ইরবায ইবনু সারিয়াহ্ (রাঃ) থেকে বর্ণিতঃ

রসূলুল্লাহ (সাল্লাল্লাহু ‘আলাইহি ওয়া সাল্লাম) বলেছেনঃ শাহীদগণ এবং যারা বিছানায় মৃত্যুবরণ করেছে তারা আল্লাহ তা’আলার নিকট প্লেগ রোগে মৃত্যুবরণকারীদের ব্যাপারে ঝগড়া করবে। শাহীদগণ বলবে, “এরা আমাদের ভাই। কেননা আমাদেরকে যেভাবে নিহত করা হয়েছে, এভাবে এদেরকেও নিহত করা হয়েছে।” আর বিছানায় মৃত্যুবরণকারীগণ বলবে, “এরা আমাদের ভাই। এ লোকেরা এভাবে বিছানায় শুয়ে মৃত্যুবরণ করেছে, যেভাবে আমরা মরেছি।” তখন আল্লাহ তা’আলা বলবেন, এদের জখমগুলোকে দেখা হোক। এদের জখম যদি শাহীদদের জখমের মতো হয়ে থাকে, তাহলে এরাও শাহীদদের অন্তর্ভুক্ত এবং তাদের সাথে থাকবে। বস্তুত যখন জখম দেখা হবে, তখন তা’ শাহীদদের জখমের মতো হবে। [১]
[১] সহীহ : নাসায়ী ৩১৬৪, আহমাদ ১৭১৫৯, শু‘আবুল ঈমান ৯৪১৬, সহীহ আত্ তারগীব ১৪০৬, সহীহ আল জামি‘ আস্ সগীর ৮০৪৬।
/ পরিচ্ছেদঃ প্রথম অনুচ্ছেদ

১৬০২

সহিহ হাদিস
وَفِىْ رِوَايَةِ عَائِشَةَ: وَالْمَوْتَ قَبْلَ لِقَاءِ اللهِ

আয়িশাহ্ (রাঃ) থেকে বর্ণিতঃ

“মৃত্যু হলো আল্লাহ তা’আলার সাথে সাক্ষাতের অগ্রবর্তী”। [১]
[১] সহীহ : মুসলিম ২৬৮৪, আহমাদ ২৪১৭২, শারহুস্ সুন্নাহ্ ১৪৫০।

১৫৯৮

সহিহ হাদিস
وَعَنْ أَبِىْ هُرَيْرَةَ قَالَ: قَالَ رَسُولُ اللّهِ ﷺ: «لَا يَتَمَنّى أَحَدُكُمُ الْمَوْتَ إِمَّا مُحْسِنًا فَلَعَلَّه أَنْ يَزْدَادَ خَيْرًا وَإِمَّا مُسِيْئًا فَلَعَلَّه أَنْ يَّسْتَعْتِبَ» . رَوَاهُ البُخَارِيُّ

আবূ হুরায়রাহ্ (রাঃ) থেকে বর্ণিতঃ

তিনি বলেন, রসুলুল্লাহ (সাল্লাল্লাহু ‘আলাইহি ওয়া সাল্লাম) বলেছেনঃ তোমাদের কেউ যেন মৃত্যু কামনা না করে। কারন সে নেক্কার হলে আরো বেশী নেক কাজ করার সুযোগ পাবে। আর বদকার হলে, (সে তাওবাহ করে) আল্লাহ তা’আলার সন্তুষ্টি ও রেযামন্দি হাসিল করার সুযোগ পাবে। [১]
[১] সহীহ : বুখারী ৭২৩৩, দারিমী ২৮০০, সুনানুল কুবরা লিন নাসায়ী ১৯৫৮, সহীহ আত্ তারগীব ৩৩৬৯, সহীহ আল জামি‘ আস্ সগীর ৭৬১০।

১৬০০

সহিহ হাদিস
وَعَنْ أَنَسٍ قَالَ: قَالَ رَسُولُ اللّهِ ﷺ: «لَا يَتَمَنَّيَنَّ أَحَدُكُمُ الْمَوْتَ مِنْ ضُرٍّ أَصَابَه فَإِنْ كَانَ لَابُدَّ فَاعِلًا فَلْيَقُلِ: اللّهُمَّ أَحْيِنِىْ مَا كَانَتِ الْحَيَاةُ خَيْرًا لِّيْ وَتَوَفَّنِىْ إِذَا كَانَتِ الْوَفَاةُ خَيْرًا لِّىْ». (مُتَّفَقٌ عَلَيْهِ)

আনাস (রাঃ) থেকে বর্ণিতঃ

তিনি বলেন, রসুলুল্লাহ (সাল্লাল্লাহু ‘আলাইহি ওয়া সাল্লাম) বলেছেনঃ তোমাদের কেউ যেন কোন দুঃখ-কষ্টের কারণে মৃত্যুর আকাঙ্ক্ষা না করে। যদি এ ধরনের আকাঙ্ক্ষা করতেই হয় তাহলে যেন সে বলে, “আল্ল-হুম্মা আহয়িনী মা-কা-নাতিল হায়া-তু খায়রাল লী ওয়াতা ওয়াফফানী ইযা-কা-নাতিল ওয়াফা-তু খায়রাল লী” (অর্থাৎ হে আল্লাহ! আমার জীবনে আমার জন্য যতক্ষণ কল্যাণকর হয়, আমাকে বাঁচিয়ে রেখ। আর আমাকে মৃত্যুদান করো যদি মৃত্যুই আমার জন্য কল্যাণকর হয়।) [১]
[১] সহীহ : বুখারী ৫৬৭১, মুসলিম ২৬৮০, আবূ দাঊদ ৩১০৮, আত্ তিরমিযী ৯৭০, নাসায়ী ১৮২০, ইবনু মাজাহ্ ৪২৬৫, ইবনু আবী শায়বাহ্ ২৯৩৪৭, আহমাদ ১১৯৭৯, ১৩০২০, ইবনু হিব্বান ৯৬৮, সুনানুল কুবরা লিল বায়হাক্বী ৬৫৬৫, শু‘আবুল ঈমান ৯৬৭৩, সহীহ আত্ তারগীব ৩৩৭০, সহীহ আল জামি‘ আস্ সগীর ৭৬১১।

১৬০১

সহিহ হাদিস
وَعَنْ عُبَادَةَ بْنِ الصَّامِتِ قَالَ: قَالَ رَسُولُ اللّهِ ﷺ: «مَنْ أَحَبَّ لِقَاءَ اللّهِ أَحَبَّ اللّهُ لِقَاءَهُ وَمَنْ كَرِهَ لِقَاءَ اللّهِ كَرِهَ اللّهُ لِقَاءَه» فَقَالَتْ عَائِشَةُ أَوْ بَعْضُ أَزْوَاجِه: إِنَّا لَنَكْرَهُ الْمَوْتَ قَالَ: «لَيْسَ ذلِكَ وَلَكِنَّ الْمُؤْمِنَ إِذَا حَضَرَهُ الْمَوْتُ بُشِّرَ بِرِضْوَانِ اللّهِ وَكَرَامَتِه فَلَيْسَ شَيْءٌ أَحَبَّ إِلَيْهِ مِمَّا أَمَامَه فَأَحَبَّ لِقَاءَ اللّهِ وَأَحَبَّ اللّهُ لِقَاءَه وَإِنَّ الْكَافِرَ إِذَا حَضَرَ بُشِرَ بِعَذَابِ اللهِ وَعُقُوْبَتِه فَلَيْسَ شَيْءٌ أَكَرَه إِلَيْهِ مِمَّا أَمَامَه فَكَرِهَ لِقَاءَ اللّهِ وَكَرِهَ اللهُ لِقَاءَه». (مُتَّفَقٌ عَلَيْهِ)

উবাদাহ্ ইবনুস্ সামিত (রাঃ) থেকে বর্ণিতঃ

তিনি বলেন, রসুলুল্লাহ (সাল্লাল্লাহু ‘আলাইহি ওয়া সাল্লাম) বলেছেনঃ যে ব্যক্তি আল্লাহর সান্নিধ্য পছন্দ করে, আল্লাহও তার সান্নিধ্য পছন্দ করেন। আর যে ব্যক্তি আল্লাহর সান্নিধ্য অপছন্দ করে, আল্লাহও তার সান্নিধ্য অপছন্দ করেন। (এ কথা শুনে) ‘আয়িশাহ অথবা তাঁর স্ত্রীদের কেউ জিজ্ঞেস করলেন, আমরাতো মৃত্যুকে অপছন্দ করি। তিনি (সাল্লাল্লাহু ‘আলাইহি ওয়া সাল্লাম) বললেনঃ ব্যাপারটি তা নয়। বরং এর অর্থ হল। যখন মু’মিনের মৃত্যু আসে তখন তাকে আল্লাহর সন্তুষ্টি ও সুসংবাদ দেয়া হয়। তখন সামনে তার এসব মর্যাদা হতে বেশী পছন্দনীয় জিনিস আর কিছু থাকে না। তাই সে আল্লাহর সান্নিধ্য পছন্দ করে। আল্লাহও তার সান্নিধ্য পছন্দ করেন। আর কাফির ব্যক্তির মৃত্যু হাযির হলে, তাকে আল্লাহর ‘আযাব ও তার পরিণতির ‘খোশ খবর’ দেয়া হয়। তখন এ কাফির ব্যক্তির সামনে এসব খোশ খবরের চেয়ে বেশী অপছন্দনীয় জিনিস আর কিছু থাকে না। তাই সে যেমন আল্লাহর সাথে সাক্ষাৎকে অপছন্দ করে আল্লাহ তা’আলাও তার সাক্ষাৎ অপছন্দ করেন। [১]
1] সহীহ : বুখারী ৬৫০৭, মুসলিম ২৬৪৩, আত্ তিরমিযী ২৩০৯, নাসায়ী ১৮৩৬, ১৮৩৭, আহমাদ ২২৭৪৪, দারিমী ২৭৯৮, ইবনু হিব্বান ৩০০৯, শারহুস্ সুন্নাহ্ ১৪৪৯, সহীহ আত্ তারগীব ৩৪৮৪, সহীহ আল জামি‘ আস্ সগীর ৫৯৬৪।

১৬০৫

সহিহ হাদিস
وَعَنْ جَابِرٍ قَالَ: سَمِعْتُ رَسُولَ اللّهِ ﷺ قَبْلَ مَوْتِه بِثَلَاثَةِ أَيَّامٍ يَقُولُ: «لَا يَمُوتَنَّ أَحَدُكُمْ إِلَّا وَهُوَ يُحْسِنُ الظَّنَّ بِاللّه» . رَوَاهُ مُسْلِمٌ

জাবির (রাঃ) থেকে বর্ণিতঃ

তিনি বলেন, আমি রসুলুল্লাহ (সাল্লাল্লাহু ‘আলাইহি ওয়া সাল্লাম) কে মৃত্যুর তিনদিন আগে এ কথা বলতে শুনেছি। তিনি বলেন, আল্লাহর ওপর ভাল ধারণা পোষণ করা ছাড়া তোমাদের কেউ যেন মৃত্যুবরণ না করে। [১]
[১] সহীহ : মুসলিম ২৮৭৭, আবূ দাঊদ ৩১১৩, ইবনু মাজাহ্ ৪১৬৭, ইবনু হিব্বান ৬৩৮, সহীহ আত্ তারগীব ৩৩৮৫, সহীহ আল জামি‘ আস্ সগীর ৭৭৯২, সুনানুল কুবরা লিল বায়হাক্বী ৬৫৬৬, শারহুস্ সুন্নাহ্ ১৪৫৫।

১৬০৩

সহিহ হাদিস
وَعَنْ أَبِىْ قَتَادَةَ أَنَّه كَانَ يُحَدِّثُ أَنَّ رَسُولَ اللّهِ ﷺ مُرَّ عَلَيْهِ بِجِنَازَةٍ فَقَالَ: «مُسْتَرِيْحٌ أَوْ مُسْتَرَاحٌ مِنْهُ» فَقَالُوا: يَا رَسُولَ اللّهِ مَا الْمُسْتَرِيْحُ وَالْمُسْتَرَاحُ مِنْهُ؟ فَقَالَ: «الْعَبْدُ الْمُؤْمِنُ يَسْتَرِيحُ مِنْ نَصَبِ الدُّنْيَا وَأَذَاهَا إِلى رَحْمَةِ اللّهِ وَالْعَبْدُ الْفَاجِرُ يَسْتَرِيْحُ مِنْهُ الْعِبَادُ وْالْبَلَادُ وَالشَّجَرُ وَالدَّوَابُ». (مُتَّفَقٌ عَلَيْهِ)

আবূ ক্বাতাদাহ্ (রাঃ) থেকে বর্ণিতঃ

তিনি বলেন, এক দিন রসুলুল্লাহ (সাল্লাল্লাহু ‘আলাইহি ওয়া সাল্লাম) –এর সামনে দিয়ে একটি জানাযাহ্‌ বহন করা হচ্ছিল তিনি (সাল্লাল্লাহু ‘আলাইহি ওয়া সাল্লাম) (জানাযাহ্‌ দেখে) বললেন, এ ব্যক্তি শান্তি পাবে, অথবা এর থেকে অন্যরা শান্তি পাবে। সাহাবীগণ নিবেদন করলেন, হে আল্লাহর রসুল! শান্তি পাবে কে, অথবা ওই ব্যক্তি কে যার থেকে অন্যরা শান্তি পাবে? তিনি(সাল্লাল্লাহু ‘আলাইহি ওয়া সাল্লাম) বললেনঃ আল্লাহর মু’মিন বান্দা মৃত্যুর দারা দুনিয়ার দুঃখ-কষ্ট হতে আল্লাহর রহমাতের দিকে অগ্রসর হয়। ফলে সে শান্তি পায়। আর গুনাহগার বান্দা মারা গেলে তার অনিষ্ট ও ফাসাদ হতে মানুষ, শহর-বন্দর গাছ-পালা ও জন্তু – জানোয়ার সবকিছুই শান্তি লাভ করে। [১]
[১] সহীহ : বুখারী ৬৫১২, মুসলিম ৯৫০, নাসায়ী ১৯৩০, মুয়াত্ত্বা মালিক ২৮০, আহমাদ ২২৫৭৬, সহীহ ইবনু হিব্বান ৩০১২, সুনানুল কুবরা লিল বায়হাক্বী ৬৫৭৪, শারহুস্ সুন্নাহ্ ১৪৫৩, সহীহ আল জামি‘ আস্ সগীর ৫৮৭২।

১৫৯৯

সহিহ হাদিস
وَعَنْ أَبِىْ هُرَيْرَةَ قَالَ: قَالَ رَسُولُ اللّهِ ﷺ: «لَا يَتَمَنّى أَحَدُكُمُ الْمَوْتَ وَلَا يَدْعُ بِه مِنْ قَبْلِ أَنْ يَأْتِيَه إِنَّه إِذَا مَاتَ انْقَطَعَ أَمَلُه وَإِنَّه لَا يَزِيْدُ الْمُؤْمِنَ عُمْرُه إِلَّا خَيْرًا» . رَوَاهُ مُسْلِمٌ

আবূ হুরায়রাহ্ (রাঃ) থেকে বর্ণিতঃ

তিনি বলেন, রসুলুল্লাহ (সাল্লাল্লাহু ‘আলাইহি ওয়া সাল্লাম) বলেছেনঃ তোমাদের কেউ যেন মৃত্যু কামনা না করে আর তা আসার পূর্বে তাকে যেন আহ্বান না জানায়, কারন সে যখন মৃত্যুবরণ করবে তার ‘আমাল বন্ধ হয়ে যাবে। আর মু’মিনের হায়াত বাড়লে তার ভাল কাজই বৃদ্ধি পায়। [১]
[১] সহীহ : মুসলিম ২৬৮২, আহমাদ ৮১৮৯, ইবনু হিব্বান ৩০১৫, সুনানুল কুবরা লিল বায়হাক্বী ৬৫৬৪, সহীহ আত্ তারগীব ৩৩৬৯, সহীহ আল জামি‘ আস্ সগীর ৭৬১২।

১৬০৪

সহিহ হাদিস
وَعَنْ عَبْدِ اللّهِ بْنِ عُمَرَ قَالَ: أَخَذَ رَسُولُ اللّهِ ﷺ بِمَنْكِبِىْ فَقَالَ: «كُنْ فِي الدُّنْيَا كَأَنَّكَ غَرِيبٌ أَوْ عَابِرُ سَبِيلٍ» . وَكَانَ ابْنُ عُمَرَ يَقُولُ: إِذَا أَمْسَيْتَ فَلَا تَنْتَظِرِ الصَّبَاحَ وَإِذَا أَصْبَحْتَ فَلَا تَنْتَظِرِ الْمَسَاءَ وَخُذْ مِنْ صِحَّتِكَ لِمَرَضِكَ وَمِنْ حَيَاتِكَ لِمَوْتِكَ. رَوَاهُ البُخَارِيُّ

আবদুল্লাহ ইবনু ‘উমার (রাঃ) থেকে বর্ণিতঃ

তিনি বলেন, রসুলুল্লাহ (সাল্লাল্লাহু ‘আলাইহি ওয়া সাল্লাম) একদা হাত দিয়ে আমার দু’কাঁধ ধরলেন। তারপর বললেন, দুনিয়ায় তুমি এমনভাবে থাকো, যেমন-তুমি একজন গরীব অথবা পথের পথিক। (এরপর থেকে) ইবনু ‘উমার (মানুষদেরকে) বলতেন, “সন্ধ্যা হলে আর সকালের অপেক্ষা করবে না। আর যখন সকাল হবে, সন্ধার অপেক্ষা করবে না। নিজের সুস্থতার সুযোগ গ্রহন করবে অসুস্থতার আগে ও জীবনের সুযোগ গ্রহন করবে মৃত্যুর আগে। [১]
[১] সহীহ : বুখারী ৬৪১৬, আত্ তিরমিযী ২৩৩৩, সুনানুল কুবরা লিল বায়হাক্বী ৬৫১২, শু‘আবুল ঈমান ৯৭৬৪, সিলসিলাহ্ আস্ সহীহাহ্ ১১৫৭, সহীহ আত্ তারগীব ৩৩৪১, সহীহ আল জামি‘ আস্ সগীর ৪৫৭৯।

রিডিং সেটিংস

Bangla

System

আরবি ফন্ট নির্বাচন

Kfgq Hafs

অনুবাদ ফন্ট নির্বাচন

Kalpurush

22
17

সাধারণ সেটিংস

আরবি দেখান

অনুবাদ দেখান

রেফারেন্স দেখান

হাদিস পাশাপাশি দেখান


এই সদাকা জারিয়ায় অংশীদার হোন

মুসলিম উম্মাহর জন্য বিজ্ঞাপনমুক্ত মডার্ন ইসলামিক এপ্লিকেশন উপহার দিতে আমাদের সাহায্য করুন। আপনার এই দান সদাকায়ে জারিয়া হিসেবে আমল নামায় যুক্ত হবে ইন শা আল্লাহ।

সাপোর্ট করুন