HADITH.One

Bangla

Support

রিডিং সেটিংস

Bangla

System

আরবি ফন্ট নির্বাচন

Kfgq Hafs

অনুবাদ ফন্ট নির্বাচন

Kalpurush

22
17

সাধারণ সেটিংস

আরবি দেখান

অনুবাদ দেখান

রেফারেন্স দেখান

হাদিস পাশাপাশি দেখান


এই সদাকা জারিয়ায় অংশীদার হোন

মুসলিম উম্মাহর জন্য বিজ্ঞাপনমুক্ত মডার্ন ইসলামিক এপ্লিকেশন উপহার দিতে আমাদের সাহায্য করুন। আপনার এই দান সদাকায়ে জারিয়া হিসেবে আমল নামায় যুক্ত হবে ইন শা আল্লাহ।

সাপোর্ট করুন
hadith book logo

বুলুগুল মারাম

১৬. বিবিধ প্রসঙ্গ

بلوغ المرام

১৬/ পরিচ্ছেদঃ আদব

১৪৪০

সহিহ হাদিস
وَعَنِ ابْنِ مَسْعُودٍ - رضي الله عنه - قَالَ: قَالَ رَسُولُ اللَّهِ - صلى الله عليه وسلم -: «إِذَا كُنْتُمْ ثَلَاثَةً، فَلَا يَتَنَاجَى اثْنَانِ دُونَ الْآخَرِ، حَتَّى تَخْتَلِطُوا (1) بِالنَّاسِ; مِنْ أَجْلِ أَنَّ ذَلِكَ يُحْزِنُهُ» مُتَّفَقٌ عَلَيْهِ، وَاللَّفْظُ لِمُسْلِمٍ

আবদুল্লাহ ইবনু মাসঊদ (রাঃ) থেকে বর্ণিতঃ

তিনি বলেন, রাসূলুল্লাহ (সাল্লাল্লাহু ‘আলাইহি ওয়া সাল্লাম) বলেছেন : কোথাও তোমরা তিনজনে থাকলে একজনকে বাদ দিয়ে দু’জনে কানে-কানে কথা বলবে না যতক্ষণ না জনগনের সাথে মিশে যাও । এতে তার মনে দুঃখ হবে । [১৫৫১]
[১৫৫১] বুখারী ৬২৯০, মুসলিম ২১৮৪, তিরমিযী ২৮২৫, আবূ দাউদ ৪৮৫১, ইবনু মাজাহ ৩৭৭৫, আহমাদ ৩৪৫০, দারেমী ২৬৫৭ ।

১৪৩৯

সহিহ হাদিস
وَعَنِ النَوَّاسِ بْنِ سَمْعَانَ - رضي الله عنه - قَالَ: سَأَلْتُ رَسُولَ اللَّهِ - صلى الله عليه وسلم - عَنِ الْبِرِّ وَالْإِثْمِ، فَقَالَ: «الْبِرُّ: حُسْنُ الْخُلُقِ، وَالْإِثْمُ: مَا حَاكَ فِي صَدْرِكَ، وَكَرِهْتَ أَنْ يَطَّلِعَ عَلَيْهِ النَّاسُ» أَخْرَجَهُ مُسْلِمٌ

নাওওয়াস ইবনু সাম‘আন (রাঃ) থেকে বর্ণিতঃ

তিনি বলেন, আমি রাসূলুল্লাহ (সাল্লাল্লাহু ‘আলাইহি ওয়া সাল্লাম)-কে নেকি ও পাপ সম্পর্কে জিজ্ঞাসা করলাম । তখন তিনি বললেন, নেকি হচ্ছে সুন্দর ব্যবহার, আর পাপ হচ্ছে যা তোমার অন্তরে খটকা জাগায়, আর মানুষ তা জেনে যাক এটা এটা তুমি পছন্দ কর না । [১৫৫০]
[১৫৫০] মুসলিম ২৫৫৩, ২৩৮৯ আহমাদ ১৭১৭৯ দারেমী ২৭৮৯ ।

১৪৪২

সহিহ হাদিস
وَعَنِ ابْنِ عَبَّاسٍ رَضِيَ اللَّهُ عَنْهُمَا قَالَ: قَالَ رَسُولُ اللَّهِ - صلى الله عليه وسلم -: «إِذَا أَكَلَ أَحَدُكُمْ طَعَامًا، فَلَا يَمْسَحْ يَدَهُ، حَتَّى يَلْعَقَهَا، أَوْ يُلْعِقَهَا» مُتَّفَقٌ عَلَيْهِ

ইবনু ‘আব্বাস (রাঃ) থেকে বর্ণিতঃ

রাসূলুল্লাহ (সাল্লাল্লাহু ‘আলাইহি ওয়া সাল্লাম) বলেছেন : তোমাদের কেউ যখন আহার করে সে যেন তার হাত না মোছে, যতক্ষণ না সে চেটে খায় কিংবা অন্যের দ্বারা চাটিয়ে নেয় । [১৫৫৩]
[১৫৫৩] মুসলিম ৫৪৫৬, মুসলিম ২০৩১, আবূ দাউদ ৩৮৪৭, ইবনু মাজাহ ৩২৬৯, আহমাদ ২৭৭৭৩, দারেমী ২০২৬ ।

১৪৪১

সহিহ হাদিস
وَعَنِ ابْنِ عُمَرَ رَضِيَ اللَّهُ عَنْهُمَا قَالَ: قَالَ رَسُولُ اللَّهِ - صلى الله عليه وسلم -: «لَا يُقِيمُ الرَّجُلُ الرَّجُلَ مِنْ مَجْلِسِهِ، ثُمَّ يَجْلِسُ فِيهِ، وَلَكِنْ تَفَسَّحُوا، وَتَوَسَّعُوا» مُتَّفَقٌ عَلَيْهِ

ইবনু ‘উমার (রাঃ) থেকে বর্ণিতঃ

তিনি বলেন, রাসূলুল্লাহ (সাল্লাল্লাহু ‘আলাইহি ওয়া সাল্লাম) বলেছেন, কোন লোক যেন কোন লোককে তার বসার স্থান হতে উঠিয়ে দিয়ে সেখানে না বসে । বরং তোমরা বসার ক্ষেত্রকে উন্মুক্ত ও সম্প্রসারিত কর । [১৫৫২]
[১৫৫২] বুখারী ৯১১, ৬২৬৯, মুসলিম ২১৭৭, তিরমিযী ২৭৪৯, ২৭৫০, আবূ দাউদ ৪৮২৮, আহমাদ ৪৬৪৫, ৪৬৫০, ৪৭২১, দারেমী ২৬৫৩ ।

১৪৩৮

সহিহ হাদিস
وَعَنْ أَبِي هُرَيْرَةَ - رضي الله عنه - قَالَ: قَالَ رَسُولُ اللَّهِ - صلى الله عليه وسلم -: «انْظُرُوا إِلَى مَنْ هُوَ أَسْفَلَ مِنْكُمْ، وَلَا تَنْظُرُوا إِلَى مَنْ هُوَ فَوْقَكُمْ، فَهُوَ أَجْدَرُ أَنْ لَا تَزْدَرُوا نِعْمَةَ اللَّهِ عَلَيْكُمْ» مُتَّفَقٌ عَلَيْهِ

আবূ হুরাইরা (রাঃ) থেকে বর্ণিতঃ

তিনি বলেন, রাসূলুল্লাহ (সাল্লাল্লাহু ‘আলাইহি ওয়া সাল্লাম) বলেছেন : (পার্থিব ব্যাপারে) তুমি তোমার চেয়ে দুর্বলের উপর দৃষ্টি রাখবে, কিন্তু যে ব্যক্তি তোমার চেয়ে উচুঁ তার উপর দৃষ্টি রাখবে না । এরূপ করলে তুমি আল্লাহ প্রদত্ত নি‘আমতের প্রতি অবহেলা ও তাচ্ছিল্য প্রকাশ করার অপরাধ হতে বেঁচে যাবে । [১৫৪৯]
[১৫৪৯] বুখারী এবং মুসলিমের বর্ণনায় রয়েছে, আবূ হুরাইরাহ (রাঃ) হতে বর্ণিত । রসূলুল্লাহ (সাল্লাল্লাহু ‘আলাইহি ওয়া সাল্লাম) বলেছেনঃ (আরবী) তোমাদের কারো নজর যদি এমন লোকের উপর পড়ে, যাকে মাল-ধন ও দৈহিক গঠনে অধিক মর্যাদা দেয়া হয়েছে তবে সে যেন এমন লোকের দিকে নজর দেয়, যে তার চেয়ে নিম্ন স্তরে রয়েছে । বুখারী ৬৪৯০, মুসলিম ২৯৬৩, আহমাদ ২৭৩৬৪, ৯৮৮৬ ।

১৪৩৭

সহিহ হাদিস
عَنْ أَبِي هُرَيْرَةَ - رضي الله عنه - قَالَ: قَالَ: رَسُولُ اللَّهِ - صلى الله عليه وسلم -: «حَقُّ الْمُسْلِمِ عَلَى الْمُسْلِمِ سِتٌّ: إِذَا لَقِيتَهُ فَسَلِّمْ عَلَيْهِ، وَإِذَا دَعَاكَ فَأَجِبْهُ، وَإِذَا اسْتَنْصَحَكَ فَانْصَحْهُ، وَإِذَا عَطَسَ فَحَمِدَ اللَّهَ فَشَمِّتْهُ، وَإِذَا مَرِضَ فَعُدْهُ، وَإِذَا مَاتَ فَاتْبَعْهُ» رَوَاهُ مُسْلِمٌ

আবূ হুরাইরা (রাঃ) থেকে বর্ণিতঃ

তিনি বলেন, রাসূলুল্লাহ (সাল্লাল্লাহু ‘আলাইহি ওয়া সাল্লাম) বলেছেনঃ এক মুসলিমের উপর অন্য মুসলিমের ৬ টি হাক্ব রয়েছে – ১. কারো সাথে সাক্ষাৎ হলে সালাম দেবে; ২. আমন্ত্রন করলে তা ক্ববূল করবে; ৩. পরামর্শ চাইলে সৎ পরামর্শ দেবে; ৪. হাঁচি দিয়ে আল-হামদুলিল্লাহ পড়লে তার জবাব দেবে (ইয়ারহামুকাল্লাহ বলবে)। [১৫৪৭] ৫. পীড়িত হলে তার কাছে গিয়ে তার খবরাখবর নেবে; ৬. সে ইন্তিকাল করলে তার জানাযা সলাতে অংশগ্রহণ করবে । [১৫৪৮]
[১৫৪৮] মুসলিম ২১৬২, বুখারী ১২৪০, তিরমিযী ২৭৩৭, নাসায়ী ১৯৩৮, আবূ দাউদ ৫০৩০, ইবনু মাজাহ ১৪৩৫, আহমাদ ২৭১৫৫ ।

১৪৪৩

সহিহ হাদিস
وَعَنْ أَبِي هُرَيْرَةَ - رضي الله عنه - قَالَ: قَالَ رَسُولُ اللَّهِ - صلى الله عليه وسلم -: «لِيُسَلِّمِ الصَّغِيرُ عَلَى الْكَبِيرِ، وَالْمَارُّ عَلَى الْقَاعِدِ، وَالْقَلِيلُ عَلَى الْكَثِيرِ» مُتَّفَقٌ عَلَيْهِ (1)، وَفِي رِوَايَةٍ لِمُسْلِمٍ: «وَالرَّاكِبُ عَلَى الْمَاشِي» (1).

আবূ হুরাইরা (রাঃ) থেকে বর্ণিতঃ

তিনি বলেন, রাসূলুল্লাহ (সাল্লাল্লাহু ‘আলাইহি ওয়া সাল্লাম) বলেছেন : বয়োকনিষ্ঠ বয়োজ্যেষ্ঠকে, পদচারী উপবিষ্টকে এবং অল্প সংখ্যক অধিক সংখ্যককে সালাম দিবে ।
মুসলিমের অন্য বর্ণনায় আছে, আরোহী পদব্রজে যাওয়া ব্যক্তিকে সালাম দিবে । [১৫৫৪]
[১৫৫৪] বুখারী এবং মুসলিমের বর্ণনায় সম্পূর্ণ হাদীসটি হচ্ছে, পদব্রজে চলাচলকারী ব্যক্তি উপবিষ্ট ব্যক্তিকে এবং কমসংখ্যক লোক অধিকসংখ্যক লোকদের সালাম দেবে। বুখারী ৬২৩১, ৬২৩২, ৬২৩৪, তিরমিযী ২৭০৩, ২৭০৪, আবূ দাউদ ৫১৯৮, আহমাদ ২৭৩৭৯, ৮১১৩।

১৪৪৪

অন্যান্য
وَعَنْ عَلِيٍّ - رضي الله عنه - قَالَ: قَالَ رَسُولُ اللَّهِ - صلى الله عليه وسلم -: «يُجْزِئُ عَنِ الْجَمَاعَةِ إِذَا مَرُّوا أَنْ يُسَلِّمَ أَحَدُهُمْ، وَيُجْزِئُ عَنِ الْجَمَاعَةِ أَنْ يَرُدَّ أَحَدُهُمْ» رَوَاهُ أَحْمَدُ وَالْبَيْهَقِيُّ

আলী (রাঃ) থেকে বর্ণিতঃ

তিনি বলেন, রাসূলুল্লাহ (সাল্লাল্লাহু ‘আলাইহি ওয়া সাল্লাম) বলেছেন, যাত্রীদের মধ্যে থেকে একজনের সালামের উত্তর দেয়া সকলের পক্ষ হতে যথেষ্ট হবে । এর সমার্থক হাদীস থাকায় এটি হাসান । [১৫৫৫]
[১৫৫৫] আবূ দাউদ ৫২১০। বহুসংখ্যক সূত্রের ভিত্তিতে হাদিসটি হাসান; তাওযিহুল আহকাম ৭/৩০১

১৪৪৫

সহিহ হাদিস
وَعَنْهُ قَالَ: قَالَ رَسُولُ اللَّهِ - صلى الله عليه وسلم -: «لَا تَبْدَؤُوا الْيَهُودَ وَالنَّصَارَى بِالسَّلَامِ، وَإِذَا لَقَيْتُمُوهُمْ فِي طَرِيقٍ، فَاضْطَرُّوهُمْ إِلَى أَضْيَقِهِ» أَخْرَجَهُ مُسْلِمٌ

আলী (রাঃ) থেকে বর্ণিতঃ

তিনি বলেন, রাসূলুল্লাহ (সাল্লাল্লাহু ‘আলাইহি ওয়া সাল্লাম) বলেছেন, তোমরা ইয়াহূদী ও নাসারাদেরকে আগে সালাম দিবে না । আর যখন তোমরা তাদের সাথে রাস্তায় মিলবে তখন তাদেরকে রাস্তায় সংকীর্ণতম দিকে যেতে বাধ্য করবে । [১৫৫৬]
[১৫৫৬] সহীহ তিরমিযী ১৬০২, সহীহুল জামে ৭২০৪। মুসলিম ২১৬৭।

১৪৪৬

সহিহ হাদিস
وَعَنْه، عَنِ النَّبِيِّ - صلى الله عليه وسلم - قَالَ: «إِذَا عَطَسَ أَحَدُكُمْ فَلْيَقُلِ: الْحَمْدُ لِلَّهِ، وَلْيَقُلْ لَهُ أَخُوهُ يَرْحَمُكَ اللَّهُ، فَإِذَا قَالَ لَهُ: يَرْحَمُكَ اللَّهُ، فَلْيَقُلْ: يَهْدِيكُمُ اللَّهُ، وَيُصْلِحُ بَالَكُمْ» أَخْرَجَهُ الْبُخَارِيُّ

আলী (রাঃ) থেকে বর্ণিতঃ

নাবী (সাল্লাল্লাহু ‘আলাইহি ওয়া সাল্লাম) বলেছেন : যখন তোমাদের কোন ব্যক্তি হাঁচি দেয়, তখন সে যেন বলে । আর তার মুসলিম ভাই যেন এর জবাবে বলে । আর যখন সে বলবে, তখন হাচিঁদাতা তাকে বলবেঃ (আরবী) । [১৫৫৭]
[১৫৫৭] বুখারী ৬২২৪, আবূ দাউদ ৫০৩৩, আহমাদ ৪৮১৭।

১৪৪৭

সহিহ হাদিস
وَعَنْهُ قَالَ: قَالَ رَسُولُ اللَّهِ - صلى الله عليه وسلم -: «لَا يَشْرَبَنَّ أَحَدٌ مِنْكُمْ قَائِمًا» أَخْرَجَهُ مُسْلِمٌ

আলী (রাঃ) থেকে বর্ণিতঃ

তিনি বলেন, রাসূলুল্লাহ (সাল্লাল্লাহু ‘আলাইহি ওয়া সাল্লাম) বলেছেনঃ তোমাদের কেউ যেন কখনও দাঁড়িয়ে (পানি) পান না করে। [১৫৫৮]
[১৫৫৮] মুসলিম ২০২৬, আহমাদ ৮১৩৫।

১৪৪৮

সহিহ হাদিস
وَعَنْهُ قَالَ: قَالَ رَسُولُ اللَّهِ - صلى الله عليه وسلم -: «إِذَا انْتَعَلَ أَحَدُكُمْ فَلْيَبْدَأْ بِالْيَمِينِ، وَإِذَا (1) نَزَعَ فَلْيَبْدَأْ بِالشِّمَالِ، وَلْتَكُنِ الْيُمْنَى أَوَّلَهُمَا تُنْعَلُ، وَآخِرَهُمَا تُنْزَعُ»

‘আলী (রাঃ) থেকে বর্ণিতঃ

রসূলুল্লাহ (সাল্লাল্লাহু ‘আলাইহি ওয়া সাল্লাম) বলেছেনঃ যখন তোমাদের কেউ জুতা পরে তখন সে যেন ডান দিক থেকে শুরু করে, আর যখন খোলে তখন সে যেন বাম দিকে শুরু করে, যাতে পরার সময় উভয় পায়ের মধ্যে ডান পা প্রথমে হয় এবং খোলার সময় শেষে হয়। [১৫৫৯]
[১৫৫৯] বুখারী ৫৮৫৫, মুসলিম ২০৯৭, তিরমিযী ১৭৭৪, আবূ দাউদ ৪১৩৬, ইবনু মাজাহ ৩৬১৭, আহমাদ ৭৩০২, ৯২৭৩, ৯৪২২, মালেক ১৭০১।

১৪৫০

সহিহ হাদিস
وَعَنْهُ قَالَ: قَالَ رَسُولُ اللَّهِ - صلى الله عليه وسلم -: «لَا يَمْشِ أَحَدُكُمْ فِي نَعْلٍ وَاحِدٍ، وَلْيُنْعِلْهُمَا جَمِيعًا، أَوْ لِيَخْلَعْهُمَا جَمِيعًا» مُتَّفَقٌ عَلَيْهِمَا

‘আলী (রাঃ) থেকে বর্ণিতঃ

রসূলুল্লাহ (সাল্লাল্লাহু ‘আলাইহি ওয়া সাল্লাম) বলেছেনঃ তোমাদের কেউ যেন এক পায়ে জুতা পরে না হাঁটে। হয় দু’পা-ই খোলা রাখবে অথবা দু’পায়ে পরবে। [১৫৬১]
[১৫৬০] শাইখ সুমাইর আয যুহাইরী সম্পাদিত বুলগুল মারামে ভুলক্রমে হাদীসের ক্রমধারা লিখতে গিয়ে ১৪৪৮ এর পরে ১৪৫০ লেখা হয়েছে, যদিও হাদিসের ধারাবাহিকতা ঠিকই আছে, অর্থাৎ কোন হাদীস ছুটে যায়নি।
[১৫৬১] বুখারী ৫৮৫৫, মুসলিম ২০৯৭, তিরমিযী ১৭৭৪, আবূ দাউদ ৪১৩৬, ইবনু মাজাহ ৩৬১৭, আহমাদ ৭৩০২, ৯২৭৩, ৯৪২২, মালেক ১৭০১।

১৪৫১

সহিহ হাদিস
وَعَنِ ابْنِ عُمَرَ رَضِيَ اللَّهُ عَنْهُمَا قَالَ: قَالَ رَسُولُ اللَّهِ - صلى الله عليه وسلم -: «لَا يَنْظُرُ اللَّهُ إِلَى مَنْ جَرَّ ثَوْبَهُ خُيَلَاءَ» مُتَّفَقٌ عَلَيْهِ

ইবনু ‘উমার (রাঃ) থেকে বর্ণিতঃ

রসূলুল্লাহ (সাল্লাল্লাহু ‘আলাইহি ওয়া সাল্লাম) বলেছেনঃ আল্লাহ সে লোকের দিকে (দয়ার দৃষ্টিতে) দেখবেন না, যে অহংকারের সাথে তার (পরিধেয়) পোশাক টেনে চলে। [১৫৬২]
[১৫৬২] বুখারী ৩৪৮৫, ৩৬৬৫, ৫৭৮৩, ৫৭৮৪, ৫৭৯১, মুসলিম ২০৮৫, তিরমিযী ১৭৩০, ১৭৩১, নাসায়ী ৫৩২৭, ৫৩২৮, আবূ দাউদ ৪০৮৫, ইবনু মাজাহ ৩৫৬৯, আহমাদ ৪৪৭৫, ৪৫৫৩, মালেক ১৬৯৬, ১৬৯৮।

১৪৫৩

সহিহ হাদিস
وَعَنْ عَمْرِو بْنِ شُعَيْبٍ، عَنْ أَبِيهِ، عَنْ جَدِّهِ قَالَ: قَالَ رَسُولُ اللَّهِ - صلى الله عليه وسلم -: «كُلْ، وَاشْرَبْ، وَالْبَسْ، وَتَصَدَّقْ فِي غَيْرِ سَرَفٍ، وَلَا مَخِيلَةٍ» أَخْرَجَهُ أَبُو دَاوُدَ وَأَحْمَدُ، وَعَلَّقَهُ الْبُخَارِيُّ

আমর ইবনু শু’আইব (রাঃ) থেকে বর্ণিতঃ

তিনি তাঁর পিতা হতে, তিনি তাঁর দাদা হতে বর্ণনা করেন, রাসূলুল্লাহ (সাল্লাল্লাহু ‘আলাইহি ওয়া সাল্লাম) বলেনঃ ব্যয়বাহুল্য ও অহংকার হতে দূর থেকে- খাও, পান কর, পর এবং সাদাক্বাহ কর। [১৫৬৪]
[১৫৬৪] আহমাদ ৬৬৯৫, ৬৭০৮।

১৪৫২

সহিহ হাদিস
وَعَنْهُ أَنَّ رَسُولَ اللَّهِ - صلى الله عليه وسلم - قَالَ: «إِذَا أَكَلَ أَحَدُكُمْ فَلْيَأْكُلْ بِيَمِينِهِ، وَإِذَا شَرِبَ فَلْيَشْرَبْ بِيَمِينِهِ، فَإِنَّ الشَّيْطَانَ يَأْكُلُ بِشِمَالِهِ، وَيَشْرَبُ بِشِمَالِهِ» أَخْرَجَهُ مُسْلِمٌ

ইবনু ‘উমার (রাঃ) থেকে বর্ণিতঃ

তিনি বলেন, রাসূলুল্লাহ (সাল্লাল্লাহু ‘আলাইহি ওয়া সাল্লাম) বলেছেনঃ তোমাদের কেউ যখন খাবে তখন সে যেন ডান হাতে খায় আর যখন পান করবে তখন ডান হাতে পাত্র ধরে পান করবে। কেননা, শাইত্বান বাম হাতে খায় ও বাম হাতে পান করে। [১৫৬৩]
[১৫৬৩] মুসলিম ২০২০, তিরমিযী ১৭৯৯, ১৮০০, আবূ দাউদ ৩৭৭৬, আহমাদ ৪৫২৩, ৪৮৭১, মালেক ১৭১২, দারেমী ২০৩০।
১৬/ পরিচ্ছেদঃ কল্যাণ সাধন ও আত্নীয়তার হক্ব আদায়

১৪৫৪

সহিহ হাদিস
عَنْ أَبِي هُرَيْرَةَ - رضي الله عنه - قَالَ: قَالَ رَسُولُ اللَّهِ - صلى الله عليه وسلم -: «مَنْ أَحَبَّ أَنْ يُبْسَطَ عَلَيْهِ فِي رِزْقِهِ، وَأَنْ يُنْسَأَ لَهُ فِي أَثَرِهِ، فَلْيَصِلْ رَحِمَهُ» أَخْرَجَهُ الْبُخَارِيُّ

আবূ হুরাইরাহ (রাঃ) থেকে বর্ণিতঃ

তিনি বলেন, রাসূলুল্লাহ (সাল্লাল্লাহু ‘আলাইহি ওয়া সাল্লাম) বলেছেনঃ যে লোক তার জীবিকা প্রশস্ত করতে এবং আয়ু বৃদ্ধি করতে চায়, সে যেন আত্নীয়তার সম্পর্ক রক্ষা করে। [১৫৬৫]
[১৫৬৫] বুখারী ৫৯৮৫, তিরমিযী ১৯৭৯, আহমাদ ৮৬৫১।

১৪৫৫

সহিহ হাদিস
وَعَنْ جُبَيْرِ بْنِ مُطْعِمٍ - رضي الله عنه - قَالَ: قَالَ رَسُولُ اللَّهِ - صلى الله عليه وسلم -: «لَا يَدْخُلُ الْجَنَّةَ قَاطِعٌ» يَعْنِي: قَاطِعَ رَحِمٍ. مُتَّفَقٌ عَلَيْهِ

যুবায়ের ইবনু মুত’ইম (রাঃ) থেকে বর্ণিতঃ

তিনি নাবী রাসূলুল্লাহ (সাল্লাল্লাহু ‘আলাইহি ওয়া সাল্লাম) বলেনঃ আত্নীয়তার সম্পর্ক ছিন্নকারী জান্নাতে প্রবেশ করবে না। [১৫৬৬]
[১৫৬৬] বুখারী ৫৯৮৪, মুসলিম ২৫৫৬, তিরমিযী ২৫০৯, আবূ দাউদ ১৬৯৬, আহমাদ ১৬২৯১, ১৬৩২২ ।

১৪৫৭

সহিহ হাদিস
وَعَنْ عَبْدِ اللَّهِ بْنِ عَمْرٍو رَضِيَ اللَّهُ عَنْهُمَا، عَنِ النَّبِيِّ - صلى الله عليه وسلم - قَالَ: «رِضَا اللَّهِ فِي رِضَا الْوَالِدَيْنِ، وَسَخَطُ اللَّهِ فِي سَخَطِ الْوَالِدَيْنِ» أَخْرَجَهُ التِّرْمِذِيُّ، وَصَحَّحَهُ ابْنُ حِبَّانَ وَالْحَاكِمُ

আব্দুল্লাহ ইবনু ‘আমর ইবনুল আস (রাঃ) থেকে বর্ণিতঃ

নাবী (সাল্লাল্লাহু ‘আলাইহি ওয়া সাল্লাম) বলেছেন, মাতা-পিতার সন্তুষ্টিতে আল্লাহর সন্তুটি (লাভ হয়), তাঁদের অসন্তুষ্টিতে আল্লাহর অসন্তুষ্টি রয়েছে। [১৫৬৮]
[১৫৬৮] তিরমিযী ১৯০০, ইবনু মাজাহ ২০৮৯, ৩৬৬৩, আহমাদ ২১২১০, ২৬৯৮০।

১৪৫৮

সহিহ হাদিস
وَعَنْ أَنَسٍ - رضي الله عنه - عَنِ النَّبِيِّ - صلى الله عليه وسلم - قَالَ: «وَالَّذِي نَفْسِي بِيَدِهِ لَا يُؤْمِنُ عَبْدٌ حَتَّى يُحِبَّ لِجَارِهِ - أَوْ لِأَخِيهِ- مَا يُحِبُّ لِنَفْسِهِ» مُتَّفَقٌ عَلَيْهِ

আনাস (রাঃ) থেকে বর্ণিতঃ

নাবী (সাল্লাল্লাহু ‘আলাইহি ওয়া সাল্লাম) বলেনঃ সেই সত্ত্বার কসম যার হাতে আমার প্রাণ! তোমাদের কেউ প্রকৃত মু’মিন হতে পারবে না, যতক্ষণ না সে তার প্রতিবেশী বা ভাইয়ের জন্য সেটাই পছন্দ করবে, যা তার নিজের জন্য পছন্দ করে। [১৫৬৯]
[১৫৬৯] বুখারী ১৩, মুসলিম ৪৫, তিরমিযী ২৫১৫, নাসায়ী ৫০১৬, ৫০১৭, ইবনু মাজাহ ৬৬, আহমাদ ১১৫৯১, ১২৩৮৮, দারেমী ২৭৪০।

১৪৫৯

সহিহ হাদিস
وَعَنِ ابْنِ مَسْعُودٍ - رضي الله عنه - قَالَ سَأَلْتُ رَسُولَ اللَّهِ - صلى الله عليه وسلم - أَيُّ الذَّنْبِ أَعْظَمُ? قَالَ: «أَنْ تَجْعَلَ لِلَّهِ نِدًّا، وَهُوَ خَلَقَكَ». قُلْتُ: ثُمَّ أَيُّ? قَالَ: «ثُمَّ أَنْ تَقْتُلَ وَلَدَكَ خَشْيَةَ أَنْ يَأْكُلَ مَعَكَ» قُلْتُ: ثُمَّ أَيُّ? قَالَ: «ثُمَّ أَنْ تُزَانِيَ حَلِيلَةَ جَارِكَ» مُتَّفَقٌ عَلَيْهِ

আবদুল্লাহ (ইবনু মাস’ঊদ) (রাঃ) থেকে বর্ণিতঃ

তিনি বলেন, আমি নাবী (সাল্লাল্লাহু ‘আলাইহি ওয়া সাল্লাম)-কে জিজ্ঞেস করলাম যে, কোন্‌গুনাহ আল্লাহর কাছে সবচেয়ে বড়? তিনি বললেন, আল্লাহর জন্য অংশীদার দাঁড় করান। অথচ তিনি তোমাকে সৃষ্টি করেছেন। আমি বললাম, এতো সত্যিই বড় গুনাহ। আমি বললাম, তারপর কোন গুনাহ? তিনি উত্তর দিলেন, তুমি তোমার সন্তানকে এই ভয়ে হত্যা করবে যে, সে তোমার সঙ্গে আহার করবে। আমি আরয করলাম, এরপর কোন্‌টি? তিনি উত্তর দিলেন, তোমার প্রতিবেশীর স্ত্রীর সঙ্গে তোমার ব্যভিচার করা। [১৫৭০]
[১৫৭০] বুখারী ৪৪৭৭, ৪৭৬১, ৬০০১, ৬৮১১, ৬৮৬১, ৭৫২০, মুসলিম ৮৬, তিরমিযী ৩১৮২, ৩১৮৩, নাসায়ী ৪০১৩, ৪০১৪, ৪০১৫, আবূ দাঊদ ২৩১০, আহমাদ ৩৬০১, ৪০৯১।

১৪৫৬

সহিহ হাদিস
وَعَنِ الْمُغِيرَةِ بْنِ شُعْبَةَ - رضي الله عنه - عَنْ رَسُولِ اللَّهِ - صلى الله عليه وسلم - قَالَ: «إِنَّ اللَّهَ حَرَّمَ عَلَيْكُمْ عُقُوقَ الْأُمَّهَاتِ، وَوَأْدَ الْبَنَاتِ، وَمَنْعًا وَهَاتِ، وَكَرِهَ لَكُمْ قِيلَ وَقَالَ، وَكَثْرَةَ السُّؤَالِ، وَإِضَاعَةَ الْمَالِ» مُتَّفَقٌ عَلَيْهِ

মুগীরাহ বিন সাঈদ থেকে বর্ণিতঃ

রাসূলুল্লাহ (সাল্লাল্লাহু ‘আলাইহি ওয়া সাল্লাম) হতে বর্ণিত। তিনি বলেনঃ আল্লাহ তা’আলা তোমাদের উপর হারাম করেছেন, মা-বাপের নাফরমানী করা, কন্যা সন্তানকে জীবিত ক্ববর দেয়া, সৎ পথে দান বন্ধ করা এবং দাও দাও বলাকে (বেশি বেশি চাওয়া)। আর তিনি তোমাদের জন্য অপছন্দ করেছেন যে, বলা হয়েছে, বলেছে, (এইরূপ বলা) এবং অতিরিক্ত প্রশ্ন করা ও সম্পদ অপচয় করা। [১৫৬৭]
[১৫৬৭] বুখারী ৫৯৭৫, ৮৪৪, ১৪৭৭, ২৪০৮, মুসলিম ৫৯৩, নাসায়ী ১৩৪১, ১৩৪২, ১৩৪৫, আবূ দাউদ ১৫০৫, ৩০৭৯, আহমাদ ১৭৬৭৩, ১৭৬৮১, দারেমী ১৩৪৯, ২৭৫১।

১৪৬০

সহিহ হাদিস
وَعَنْ عَبْدِ اللَّهِ بْنِ عَمْرِو بْنِ الْعَاصِ رَضِيَ اللَّهُ عَنْهُمَا أَنَّ رَسُولَ اللَّهِ - صلى الله عليه وسلم - قَالَ: «مِنَ الْكَبَائِرِ شَتْمُ الرَّجُلِ وَالِدَيْهِ» قِيلَ: وَهَلْ يَسُبُّ الرَّجُلُ وَالِدَيْهِ? قَالَ: «نَعَمْ. يَسُبُّ أَبَا الرَّجُلِ، فَيَسُبُّ أَبَاهُ، وَيَسُبُّ أُمَّهُ، فَيَسُبُّ أُمَّهُ» مُتَّفَقٌ عَلَيْهِ

আবদুল্লাহ ইবনু ‘আমর (রাঃ) থেকে বর্ণিতঃ

তিনি বলেন, রাসূলুল্লাহ (সাল্লাল্লাহু ‘আলাইহি ওয়া সাল্লাম) বলেছেনঃ কবীরা গুনাহসমূহের মধ্যে সবচেয়ে বড় হলো নিজের পিতা-মাতাকে গাল-মন্দ করা। জিজ্ঞেস করা হলোঃ হে আল্লাহ রসূল! আপন পিতা-মাতাকে কোন লোক কিভাবে গাল-মন্দ করতে পারে? তিনি বললেনঃ অন্যের পিতাকে গালি দেয়, তখন সে তার পিতাকে গালি দেয় এবং সে অন্যের মাকে গালি দেয়, তখন সে তার মাকে গালি দেয়। [১৫৭১]
[১৫৭১] বুখারী ৫৯৭৩, মুসলিম ৯০, তিরমিযী ১৯২, আবূ দাঊদ ৫১৪১, আহমাদ ৬৪৯৩, ৬৮০১।

১৪৬১

সহিহ হাদিস
وَعَنْ أَبِي أَيُّوبَ - رضي الله عنه - أَنَّ رَسُولَ اللَّهِ - صلى الله عليه وسلم - قَالَ: «لَا يَحِلُّ لِمُسْلِمٍ أَنْ يَهْجُرَ أَخَاهُ فَوْقَ ثَلَاثِ لَيَالٍ؛ يَلْتَقِيَانِ، فَيُعْرِضُ هَذَا وَيُعْرِضُ هَذَا، وَخَيْرُهُمَا الَّذِي يَبْدَأُ بِالسَّلَامِ» مُتَّفَقٌ عَلَيْهِ

আবূ আইউব (রাঃ) থেকে বর্ণিতঃ

রাসূলুল্লাহ (সাল্লাল্লাহু ‘আলাইহি ওয়া সাল্লাম) বলেছেনঃ কোন লোকের জন্য বৈধ নয় যে, সে তাই ভাই-এর সাথে তিন দিনের অধিক এমনভাবে সম্পর্ক ছিন্ন করে রাখবে যে, দু’জনে দেখা হলেও একজন এদিকে আরেকজন ওদিকে মুখ ঘুরিয়ে রাখবে। তাদের মধ্যে যে আগে সালাম দিবে, সেই উত্তম লোক। [১৫৭২]
[১৫৭২] বুখারী ৬২৩৭, ৬০৭৭ মুসলিম ২৫৬০, তিরমিযী ১৯৩২, আবূ দাঊদ ৪৯১১, আহমাদ ২৩০১৭, মালেক ১৬৮২।

১৪৬২

সহিহ হাদিস
وَعَنْ جَابِرٍ - رضي الله عنه - قَالَ: قَالَ رَسُولُ اللَّهِ - صلى الله عليه وسلم -: «كُلُّ مَعْرُوفٍ صَدَقَةٌ» أَخْرَجَهُ الْبُخَارِيُّ

জাবির (রাঃ) থেকে বর্ণিতঃ

তিনি বলেন রাসূলুল্লাহ (সাল্লাল্লাহু ‘আলাইহি ওয়া সাল্লাম) বলেছেন: প্রত্যেক সৎকর্ম সাদাক্বাহ সমতুল্য পূণ্য কাজ। [১৫৭৩]
[১৫৭৩] বুখারী ৬০২১, তিরমিযী ১৯৭০, আহমাদ ১৪২৯৯, ১৪৪৬৩।

১৪৬৩

সহিহ হাদিস
وَعَنْ أَبِي ذَرٍّ - رضي الله عنه - قَالَ: قَالَ رَسُولُ اللَّهِ - صلى الله عليه وسلم -: «لَا تَحْقِرَنَّ مِنَ الْمَعْرُوفِ شَيْئًا، وَلَوْ أَنْ تَلْقَى أَخَاكَ بِوَجْهٍ طَلْقٍ»

আবূ যার্ (রাঃ) থেকে বর্ণিতঃ

তিনি বলেন, রাসূলুল্লাহ (সাল্লাল্লাহু ‘আলাইহি ওয়া সাল্লাম) বলেছেন: কোন সৎ কাজকে কখনও তুচ্ছ মনে করবে না, যদিও সো তোমার কোন (মুসলিম) ভাই-এর সাথে আনন্দের সাথে সাক্ষাৎকার হয়। (এটাকেও সৎকর্মের দিক থেকে তুচ্ছ মনে করা উচিৎ নয়।) [১৫৭৪]
[১৫৭৪] মুসলিম ২৬২৬, তিরমিযী ১৮৩৩, ইবনু মাজাহ ৩৬৬২, দারেমী ২০৭৯।

১৪৬৪

সহিহ হাদিস
وَعَنْهُ قَالَ: قَالَ رَسُولُ اللَّهِ - صلى الله عليه وسلم -: «إِذَا طَبَخْتَ مَرَقَةً، فَأَكْثِرْ مَاءَهَا، وَتَعَاهَدْ جِيرَانَكَ» أَخْرَجَهُمَا مُسْلِمٌ

আবূ যার্ (রাঃ) থেকে বর্ণিতঃ

তিনি বলেন, রাসূলুল্লাহ (সাল্লাল্লাহু ‘আলাইহি ওয়া সাল্লাম) বলেছেনঃ যখন কোন তরকারী রান্না করবে তখন তাতে পানি বেশি দিয়ে প্রতিবেশীর খবরগিরি করবে। (অর্থাৎ প্রতিবেশীকে দিয়ে খাওয়ার ব্যাপারে সর্বদা সচেতন ও সচেষ্ট থাকবে। [১৫৭৫]
[১৫৭৫] বুখারী ৬০১৫, মুসলিম ২৬২৫, আহমাদ ৫৫৫২। মুসলিমের বর্ণনায়, হাদীসের প্রথমে হে আবূ যার! কথাটির উল্লেখ আছে।

১৪৬৫

সহিহ হাদিস
وَعَنْ أَبِي هُرَيْرَةَ - رضي الله عنه - قَالَ: قَالَ رَسُولُ اللَّهِ - صلى الله عليه وسلم -: «مَنْ نَفَّسَ عَنْ مُؤْمِنٍ كُرْبَةً مِنْ كُرَبِ الدُّنْيَا، نَفَّسَ اللَّهُ عَنْهُ كُرْبَةً مِنْ كُرَبِ يَوْمِ الْقِيَامَةِ، وَمَنْ يَسَّرَ عَلَى مُعْسِرٍ، يَسَّرَ اللَّهُ عَلَيْهِ فِي الدُّنْيَا وَالْآخِرَةِ، وَمَنْ سَتَرَ مُسْلِمًا، سَتَرَهُ اللَّهُ فِي الدُّنْيَا وَالْآخِرَةِ (1)، وَاللَّهُ فِي عَوْنِ الْعَبْدِ مَا كَانَ الْعَبْدُ فِي عَوْنِ أَخِيهِ» أَخْرَجَهُ مُسْلِمٌ

আবূ হুরাইরাহ (রাঃ) থেকে বর্ণিতঃ

তিনি বলেন, রাসূলুল্লাহ (সাল্লাল্লাহু ‘আলাইহি ওয়া সাল্লাম) বলেছেন: যে ব্যক্তি কোন মুসলিমের কোন পার্থিব বিপদ দূর করবে আল্লাহ তা’আলা তার পরকালের বিপদ হতে কোন বিপদ দূর করবেন। কেউ যদি কোন অভাবগ্রস্তকে সহযোগিতা দান করে তবে আল্লাহ তার ইহ ও পরকালের উভয় ক্ষেত্রে সহযোগিতা দান করবে। আর যে ব্যক্তি তার মুসলিম ভাই-এর দোষ-ত্রুটি গোপন করবে আল্লাহ তা’আলা ইহকালে ও পরকালে তার দোষ-ত্রুটি গোপন করবেন। আল্লাহ বান্দার সাহায্যে থাকেন যতক্ষণ বান্দা তার মুসলিম ভাইয়ের সাহায্যে রত থাকে। [১৫৭৬]
[১৫৭৬] মুসলিম ২৬৯৯, ২৭০০, তিরমিযী ১৪২৫, ১৯৩০, ২৬৪৬, আবূ দাঊদ ১৪৫৫, ৪৯৪৬, ইবনু মাজাহ ২২৫, আহমাদ ৭৩৭৯, ৭৮৮২ দারেমী ৩৪৪।

১৪৬৬

সহিহ হাদিস
وَعَنْ أَبِي مَسْعُودٍ (1) - رضي الله عنه - قَالَ: قَالَ رَسُولُ اللَّهِ - صلى الله عليه وسلم -: «مَنْ دَلَّ عَلَى خَيْرٍ، فَلَهُ مِثْلُ أَجْرِ فَاعِلِهِ» أَخْرَجَهُ مُسْلِمٌ

আবূ মাসঊদ (রাঃ) থেকে বর্ণিতঃ

তিনি বলেন, রাসূলুল্লাহ (সাল্লাল্লাহু ‘আলাইহি ওয়া সাল্লাম) বলেন: যে ব্যক্তি কোন কল্যাণকর বস্তুর সন্ধান দান করে, তার জন্য এ কল্যাণ সম্পাদনকারীর অনুরূপ পূণ্য রয়েছে। [১৫৭৭]
[১৫৭৭] মুসলিম ১৮৯৩, তিরমিযী ২৬৭১, আবূ দাঊদ ৫১১৯, আহমাদ ২৭৫৮৫, ২১৮৩৪, ২১৮৪৬।

১৪৬৭

সহিহ হাদিস
وَعَنِ ابْنِ عُمَرَ رَضِيَ اللَّهُ عَنْهُمَا، عَنِ النَّبِيِّ - صلى الله عليه وسلم - قَالَ: «مَنِ اسْتَعَاذَكُمْ بِاللَّهِ فَأَعِيذُوهُ، وَمَنْ سَأَلَكُمْ بِاللَّهِ فَأَعْطُوهُ، وَمَنْ أَتَى إِلَيْكُمْ مَعْرُوفًا فَكَافِئُوهُ، فَإِنْ لَمْ تَجِدُوا، فَادْعُوا لَهُ» أَخْرَجَهُ الْبَيْهَقِيُّ

ইবনু ‘উমার (রাঃ) থেকে বর্ণিতঃ

তিনি বলেন, রাসূলুল্লাহ (সাল্লাল্লাহু ‘আলাইহি ওয়া সাল্লাম) বলেন: যে ব্যক্তি তোমাদের কাছে (আল্লাহর নামে) আশ্রয়প্রার্থী হয় তাকে আশ্রয় প্রদান কর। আর যে আল্লাহর নাম নিয়ে (শারী’আত সম্মতভাবে) তোমাদের কাছে সাহায্য চায় তাকে সাহায্য কর। আর যে ব্যক্তি তোমার প্রতি কোন কল্যাণ করে তাকে তুমি তার প্রতিদান যথারীতি দাও আর তাতে সক্ষম না হলে তার জন্য নেক দু’আ কর। [১৫৭৮]
[১৫৭৮] নাসায়ী ২৫৬৭, আবূ দাঊদ ১৬৭২, ৫১০৯, আহমাদ ৫৩৪২, বাইহাকী ৪র্থ খণ্ড ১৯৯ পৃষ্ঠা।
১৬/ পরিচ্ছেদঃ দুনিয়া বিমুখীতা ও পরহেযগারীতা

১৪৬৯

সহিহ হাদিস
وَعَنْ أَبِي هُرَيْرَةَ - رضي الله عنه - قَالَ: قَالَ رَسُولُ اللَّهِ - صلى الله عليه وسلم -: «تَعِسَ عَبْدُ الدِّينَارِ، وَالدِّرْهَمِ، وَالْقَطِيفَةِ، إِنْ أُعْطِيَ رَضِيَ، وَإِنْ لَمْ يُعْطَ لَمْ يَرْضَ» أَخْرَجَهُ الْبُخَارِيُّ

আবূ হুরাইরাহ (রাঃ) থেকে বর্ণিতঃ

তিনি বলেন, রাসূলুল্লাহ (সাল্লাল্লাহু ‘আলাইহি ওয়া সাল্লাম) বলেছেন, লাঞ্ছিত হোক দীনার ও দিরহামের গোলাম এবং চাদর ও শালের গোলাম। তাকে দেয়া হলে সন্তুষ্ট হয়, না দেয়া হয়ে অসন্তুষ্ট হয়। [১৫৮০]
[১৫৮০] বুখারী ২৮৮৫, ২৮৮৬, ৬৪৩৫, তিরমিযী ২৩৭৫, ইবনু মাজাহ ৪১৩৬।

১৪৭১

হাসান হাদিস
وَعَنِ ابْنِ عُمَرَ رَضِيَ اللَّهُ عَنْهُمَا قَالَ: قَالَ رَسُولُ اللَّهِ - صلى الله عليه وسلم -: «مَنْ تَشَبَّهَ بِقَوْمٍ، فَهُوَ مِنْهُمْ» أَخْرَجَهُ أَبُو دَاوُدَ، وَصَحَّحَهُ ابْنُ حِبَّانَ

ইবনু ‘উমার (রাঃ) থেকে বর্ণিতঃ

তিনি বলেন, রাসূলুল্লাহ (সাল্লাল্লাহু ‘আলাইহি ওয়া সাল্লাম) বলেছেন: যে ব্যাক্তি কোন সম্প্রদায়ের অনুকরণ করবে সে এ সম্প্রদায়ের বলেই গণ্য হবে। [১৫৮২]
[১৫৮২] আবূ দাঊদ ৪০৩১।

১৪৬৮

সহিহ হাদিস
عَنِ النُّعْمَانِ بْنِ بَشِيرٍ رَضِيَ اللَّهُ عَنْهُمَا قَالَ: سَمِعْتُ رَسُولَ اللَّهِ - صلى الله عليه وسلم - يَقُولُ -وَأَهْوَى النُّعْمَانُ بِإِصْبَعَيْهِ إِلَى أُذُنَيْهِ-: «إِنَّ الْحَلَالَ بَيِّنٌ، وَإِنَّ الْحَرَامَ بَيِّنٌ، وَبَيْنَهُمَا مُشْتَبِهَاتٌ، لَا يَعْلَمُهُنَّ كَثِيرٌ مِنَ النَّاسِ، فَمَنِ اتَّقَى الشُّبُهَاتِ، فَقَدِ اسْتَبْرَأَ لِدِينِهِ وَعِرْضِهِ، وَمَنْ وَقَعَ فِي الشُّبُهَاتِ وَقَعَ فِي الْحَرَامِ، كَالرَّاعِي يَرْعَى حَوْلَ الْحِمَى، يُوشِكُ أَنْ يَقَعَ فِيهِ، أَلَا وَإِنَّ لِكُلِّ مَلِكٍ حِمًى، أَلَا وَإِنَّ حِمَى اللَّهِ مَحَارِمُهُ، أَلَا وَإِنَّ فِي الْجَسَدِ مُضْغَةً، إِذَا صَلَحَتْ صَلَحَ الْجَسَدُ كُلُّهُ، وَإِذَا فَسَدَتْ فَسَدَ الْجَسَدُ كُلُّهُ، أَلَا وَهِيَ الْقَلْبُ» مُتَّفَقٌ عَلَيْهِ

নু’মান ইব্‌নু বশীর (রাঃ) থেকে বর্ণিতঃ

তিনি তাঁর দু’হাতের আঙ্গুলকে তাঁর কানের দিকে ঝুঁকিয়ে (ইঙ্গিত করে) বলেনঃ আমি আল্লাহর রসূল (সাল্লাল্লাহু ‘আলাইহি ওয়া সাল্লাম) –কে বলতে শুনেছি যে, ‘হালাল স্পষ্ট এবং হারামও স্পষ্ট। আর এ দু’য়ের মাঝে রয়েছে বহু সন্দেহজনক বিষয়- যা অনেকেই জানে না। যে ব্যক্তি সেই সন্দেহজনক বিষয়সমূহ হতে বেঁচে থাকবে, সে তার দ্বীন ও মর্যাদা রক্ষা করতে পারবে। আর যে সন্দেহজনক বিষয়সমূহে লিপ্ত হয়ে পড়ে, তার উদাহরণ সে রাখালের ন্যায়, যে তার পশু বাদশাহ্‌সংরক্ষিত চারণভূমির আশেপাশে চরায়, অচির্ সেগুলোর সেখাবে ঢুকে পড়ার আশংকা রয়েছে। জেনে রাখ যে, প্রত্যেক বাদশাহ্‌রই একটি সংরক্ষিত এলাকা রয়েছে। আরো জেনে রাখ যে, আল্লাহর যমীনে তাঁর সংরক্ষিত এলাকা হলো তাঁর নিষিদ্ধ কাজসমূহ। জেনে রাখ, শরীরের মধ্যে একটি গোশতের টুকরো আছে, তা যখন ঠিক হয়ে যায়, গোটা শরীরই তখন ঠিক হয়ে যায়। আর তা যখন খারাপ হয়ে যায়, গোটা শরীরই তখান খারাপ হয়ে যায়। জেনে রাখ, সে গোশতের টুকরোটি হল অন্তর। [১৫৭৯]
[১৫৭৯] বুখারী ৫২, ২০৫১, মুসলিম ১৫৯৯, তিরমিযী ১২০৫, নাসায়ী ৪৪৫৩, ৫৭১০, আবূ দাঊদ ৩৩২৯, ইবনু মাজাহ ৩৯৮৪, আহমাদ ১৭৮৮, ১৭৯০৩, দারেমী ২৫৩১।

১৪৭০

সহিহ হাদিস
وَعَنِ ابْنِ عُمَرَ رَضِيَ اللَّهُ عَنْهُمَا قَالَ: أَخَذَ رَسُولُ اللَّهِ - صلى الله عليه وسلم - بِمَنْكِبِي، فَقَالَ: «كُنْ فِي الدُّنْيَا كَأَنَّكَ غَرِيبٌ، أَوْ عَابِرُ سَبِيلٍ» وَكَانَ ابْنُ عُمَرَ يَقُولُ: إِذَا أَمْسَيْتَ فَلَا تَنْتَظِرِ الصَّبَاحَ، وَإِذَا أَصْبَحْتَ فَلَا تَنْتَظِرِ الْمَسَاءَ، وَخُذْ مِنْ صِحَّتِكَ لِسَقَمِك، وَمِنْ حَيَاتِكَ لِمَوْتِكَ. أَخْرَجَهُ الْبُخَارِيُّ

আবদুল্লাহ ইবনু ‘উমার (রাঃ) থেকে বর্ণিতঃ

তিনি বলেন, রসূলুল্লাহ (সাল্লাল্লাহু ‘আলাইহি ওয়া সাল্লাম) একবার আমার দু’কাঁধ ধরে বললেনঃ তুমি দুনিয়াতে থাক যেন তুমি একজন প্রবাসী অথবা পথচারী।
আর ইবনু ‘উমার (রাঃ) নিজে বলতেন, তুমি সন্ধ্যায় উপনীত হলে সকালের আর অপেক্ষা করো না এবং সকালে উপনীত হলে সন্ধ্যার আর অপেক্ষা করো না। তোমার সুস্থতার সময় তোমার পীড়িত অবস্থান জন্য প্রস্তুতি লও। আর তোমার জীবিত অবস্থায় তোমার মৃত্যুর জন্য প্রস্তুতি লও। [১৫৮১]
[১৫৮১] বুখারী ৬৪১৬, তিরমিযী ২৩৩৩, ইবনু মাজাহ ৪১১৪, আহমাদ ৪৭৫০, ৪৯৮২।

১৪৭২

হাসান হাদিস
وَعَنِ ابْنِ عَبَّاسٍ قَالَ: كُنْتُ خَلْفَ النَّبِيِّ - صلى الله عليه وسلم - يَوْمًا، فَقَالَ: «يَا غُلَامُ! احْفَظِ اللَّهَ يَحْفَظْكَ، احْفَظِ اللَّهَ تَجِدْهُ تُجَاهَكَ (1)، إِذَا سَأَلْتَ فَاسْأَلِ اللَّهَ، وَإِذَا اسْتَعَنْتَ فَاسْتَعِنْ بِاللَّهِ» رَوَاهُ التِّرْمِذِيُّ، وَقَالَ: حَسَنٌ صَحِيحٌ

আবদুল্লাহ ইবনু ‘আব্বাস (রাঃ) থেকে বর্ণিতঃ

তিনি বলেন, আমি একদিন নাবী (সাল্লাল্লাহু ‘আলাইহি ওয়া সাল্লাম) এর পিছনে ছিলাম তিনি বললেন, হে বালক! তুমি আল্লাহর হাক্ব রক্ষা কর, আল্লাহর তোমার হিফাযাত করবেন। আল্লাহকে ধ্যানে রাখ, তাঁকে তোমার সামনে পাবে (তোমার সহযোগী থাকবেন)। আর যখন প্রার্থনা কর আল্লাহর নিকটেই প্রার্থনা করবে। আর যখন সাহায্য চাবে তখন আল্লাহর নিকটেই সাহায্য চাবে। [১৫৮৩]
[১৫৮৩] তিরমিযী ২৫১৬, আহমাদ ২৬৬৪, ২৭৫৮, ২৮০০।

১৪৭৩

হাসান হাদিস
وَعَنْ سَهْلِ بْنِ سَعْدٍ قَالَ: جَاءَ رَجُلٌ إِلَى النَّبِيِّ - صلى الله عليه وسلم - فَقَالَ: يَا رَسُولَ اللَّهِ! دُلَّنِي عَلَى عَمَلٍ إِذَا عَمِلْتُهُ أَحَبَّنِي اللَّهُ، وَأَحَبَّنِي النَّاسُ، فقَالَ: «ازْهَدْ فِي الدُّنْيَا يُحِبُّكَ اللَّهُ، وَازْهَدْ فِيمَا عِنْدَ النَّاسِ يُحِبُّكَ النَّاسُ» رَوَاهُ ابْنُ مَاجَه، وَسَنَدُهُ حَسَنٌ

সাহল ইবনু সাদ-সাইদী (রাঃ) থেকে বর্ণিতঃ

তিনি বলেন, এক ব্যক্তি নাবী (সাল্লাল্লাহু ‘আলাইহি ওয়া সাল্লাম) এর নিকট উপস্থিত হয়ে বললো, হে আল্লাহর রাসূল! আমাকে এমন একটি কাজের কথা বলে দিন যা আমি করলে আল্লাহ আমাকে ভালোবাসবেন এবং লোকেরাও আমাকে ভালোবাসবেন। রাসূলুল্লাহ (সাল্লাল্লাহু ‘আলাইহি ওয়া সাল্লাম) বলেনঃ তুমি দুনিয়ার প্রতি অনাসস্তি অবলম্বন করো তাহলে আল্লাহ তোমাকে ভালোবাসবেন। মানুষের নিকট যা আছে, তুমি তার প্রতি অনাসক্ত হয়ে যাও, তাহলে তারাও তোমাকে ভালোবাসবে। [১৫৮৪]
[১৫৮৪] ইবনু মাজাহ ৪১০২। সমার্থক হাদিসের ভিত্তিতে হাদিসটি হাসান; তাওযিহুল আহকাম ৭/৩৬৯

১৪৭৪

সহিহ হাদিস
وَعَنْ سَعْدِ بْنِ أَبِي وَقَّاصٍ - رضي الله عنه - قَالَ: سَمِعْتُ رَسُولَ اللَّهِ - صلى الله عليه وسلم - يَقُولُ: «إِنَّ اللَّهَ يُحِبُّ الْعَبْدَ التَّقِيَّ، الْغَنِيَّ، الْخَفِيَّ» أَخْرَجَهُ مُسْلِمٌ

সা’দ ইবনু আবূ ওয়াক্কাস (রাঃ) থেকে বর্ণিতঃ

তিনি বলেন: আমি রাসূলুল্লাহ (সাল্লাল্লাহু ‘আলাইহি ওয়া সাল্লাম) কে বলতে শুনেছি, নিশ্চয়ই আল্লাহ ঐ বান্দাকে ভালবাসেন যে বান্দাহ ধর্মভীরু (পাপ কাজ হতে বিরত থাকে,) মুখাপেক্ষীহীন (আল্লাহ ছাড়া কারো উপর নির্ভরশীল নয়) ও আত্মগোপনকারী (নিজের গুণ প্রকাশে অনিচ্ছুক)। [১৫৮৫]
[১৫৮৫] মুসলিম ২৯৬৫, আহমাদ ১৪৪৪, ১৫৩২।

১৪৭৫

মুরসাল
وَعَنْ أَبِي هُرَيْرَةَ - رضي الله عنه - قَالَ: قَالَ رَسُولُ اللَّهِ - صلى الله عليه وسلم -: «مِنْ حُسْنِ إِسْلَامِ الْمَرْءِ، تَرْكُهُ مَا لَا يَعْنِيهِ» رَوَاهُ التِّرْمِذِيُّ وَقَالَ: «حَسَنٌ»

আবূ হুরাইরাহ (রাঃ) থেকে বর্ণিতঃ

তিনি বলেন, রাসূলুল্লাহ (সাল্লাল্লাহু ‘আলাইহি ওয়া সাল্লাম) বলেছেন, মুসলি ব্যক্তির অপ্রয়োজনীয় বস্তু পরিহার করার মধ্যেই ইসলামের সৌন্দর্য বিরাজ করছে। [১৫৮৬]
[১৫৮৬] তিরমিযী ২৩১৮, মালেক ১৬৭২। হাদিসটি মুরসাল; তাওযিহুল আহকাম ৭/৩৭৪

১৪৭৬

হাসান হাদিস
وَعَنِ الْمِقْدَامِ بْنِ مَعْدِي كَرِبَ - رضي الله عنه - قَالَ: قَالَ رَسُولُ اللَّهِ - صلى الله عليه وسلم -: «مَا مَلَأَ ابْنُ آدَمَ وِعَاءً شَرًّا مِنْ بَطْنٍ» أَخْرَجَهُ التِّرْمِذِيُّ وَحَسَّنَهُ

মিক্বদাম ইবনু মা’দী কারিব (রাঃ) থেকে বর্ণিতঃ

তিনি বলেন: রাসূলু্ল্লাহ (সাল্লাল্লাহু ‘আলাইহি ওয়া সাল্লাম) বলেছেন: মানুষ যে পাত্র ভর্তি করে তন্মধ্যে পেট হচ্ছে সবচেয়ে মন্দ পাত্র। [১৫৮৭]
[১৫৮৭] তিরমিযী ২৩৮০, ইবনু মাজাহ ৩৩৪৯, আহমাদ ১৬৭৩৫।

১৪৭৭

হাসান হাদিস
وَعَنْ أَنَسٍ - رضي الله عنه - قَالَ: قَالَ رَسُولُ اللَّهِ - صلى الله عليه وسلم -: «كُلُّ بَنِي آدَمَ خَطَّاءٌ، وَخَيْرُ الْخَطَّائِينَ التَّوَّابُونَ» أَخْرَجَهُ التِّرْمِذِيُّ وَابْنُ مَاجَهْ، وَسَنَدُهُ قَوِيٌّ

আনাস (রাঃ) থেকে বর্ণিতঃ

তিনিবলেন ,রাসুলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু ‘আলাইহি ওয়া সাল্লাম বলেছেন, প্রত্যেক মানুষই ভুল- ত্রুটিকারী আর ভুল- ত্রুটিকারীদের মধ্যে যারা তাওবাহ করে তারাই উত্তম । [১৫৮৮]
[১৫৮৮] তিরমিযী ২৪৯৯, ইবনু মাজাহ ৪২৫১, আহমাদ ১২৬৭, দারেমী ২৭২৭।

১৪৭৮

অন্যান্য
وَعَنْ أَنَسٍ - رضي الله عنه - قَالَ: قَالَ رَسُولُ اللَّهِ - صلى الله عليه وسلم -: «الصَّمْتُ حُكْمٌ (1)، وَقَلِيلٌ فَاعِلُهُ» أَخْرَجَهُ الْبَيْهَقِيُّ فِي «الشُّعَبِ» بِسَنَدٍ ضَعِيفٍ، وَصَحَّحَ أَنَّهُ مَوْقُوفٌ مِنْ قَوْلِ لُقْمَانَ الْحَكِيمِ

আনাস (রাঃ) থেকে বর্ণিতঃ

তিনি বলেন, রাসুলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু ‘আলাইহি ওয়া সাল্লাম বলেছেন, নীরবতা অবলম্বন বুদ্ধিমত্তার পরিচায়ক কিন্তু এটা পালনকারীর সংখ্যা খুব অল্প। [১৫৮৯]
[১৫৮৯] আবূ দাউদ ৪৯০৩। ইবনু উসাইমীন তাঁর শরহে বুলুগুল মারামে ৬/৩৪৯ গ্রন্থে বলেন, এটি আল্লাহ্‌র রাসূলের কথা নয়, বরং এটি লুকমান হাকীম বা অন্য কারো কথা। ইমাম বাইহাকী তাঁর শুআবুল ইমাম গ্রন্থে বলেন,......এতে উসমান বিন সাঈদ আল কাতিব রয়েছেন। শাইখ আলবানী সিলসিলা যঈফা ২৪২৪, যঈফুল জামে’ ৩৫৫৫ এ হাদীসটিকে যঈফ বলেছেন। বাইহাকী শু’আবুল ঈমান ৫০২৭, হাকিম ২য় খণ্ড ৪২২-৪২৩ পৃষ্ঠা।
১৬/ পরিচ্ছেদঃ মন্দ চরিত্র সম্পর্কে ভীতি প্রদর্শন

১৪৮০

দুর্বল হাদিস
وَلِابْنِ مَاجَهْ مِنْ حَدِيثِ أَنَسٍ نَحْوُهُ

ইবনু মাজাতে আনাস (রাঃ) থেকে বর্ণিতঃ

এর সনদে একজন মাতরূক রাবী রয়েছে।

১৪৮১

সহিহ হাদিস
وَعَنْهُ قَالَ: قَالَ رَسُولُ اللَّهِ - صلى الله عليه وسلم -: «لَيْسَ الشَّدِيدُ بِالصُّرَعَةِ، إِنَّمَا الشَّدِيدُ الَّذِي يَمْلِكُ نَفْسَهُ عِنْدَ الْغَضَبِ» مُتَّفَقٌ عَلَيْهِ

আবূ হুরাইরাহ (রাঃ) থেকে বর্ণিতঃ

তিনি বলেনঃ রাসূলুল্লাহ (সাল্লাল্লাহু ‘আলাইহি ওয়া সাল্লাম) বলেছেনঃ প্রকৃত বীর সে নয়, যে কাউকে কুস্তিতে হারিয়ে দেয়। বরং সেই আসল বীর, যে রাগের সময় নিজেকে নিয়ন্ত্রণে রাখতে পারে। [১৫৯১]
[১৫৯১] বুখারী ৬১১৪, মুসলিম ২৬০৯, আহমাদ ৭১৭৮, ৭৬৮৪, ১০৩২৪, মালেক।

১৪৮৩

সহিহ হাদিস
وَعَنْ جَابِرٍ - رضي الله عنه - قَالَ: قَالَ رَسُولُ اللَّهِ: «اتَّقُوا الظُّلْمَ، فَإِنَّ الظُّلْمَ ظُلُمَاتٌ يَوْمَ الْقِيَامَةِ، وَاتَّقُوا الشُّحَّ، فَإِنَّهُ أَهْلَكَ مَنْ كَانَ قَبْلَكُمْ» أَخْرَجَهُ مُسْلِمٌ

জাবির (রাঃ) থেকে বর্ণিতঃ

রাসূলুল্লাহ (সাল্লাল্লাহু ‘আলাইহি ওয়া সাল্লাম) বলেছেনঃ যুলুম করা হতে নিজেকে বাঁচাও, কেননা, ক্বিয়ামতের কঠিন দিনে যুলুম কঠিন অন্ধকাররূপে আত্মপ্রকাশ করবে। আর কৃপনতা হতেও নিজেকে বাঁচাও, কারণ ওটা আগের জাতিগুলোকে ধ্বংস করেছে। [১৫৯৩]
[১৫৯৩] মুসলিম ২৫৭৮, আহমাদ ১৪০৫২ ।

১৪৮৪

অন্যান্য
وَعَنْ مَحْمُودِ بْنِ لَبِيدٍ - رضي الله عنه - قَالَ: قَالَ رَسُولُ اللَّهِ - صلى الله عليه وسلم -: «إِنَّ أَخْوَفَ مَا أَخَافُ عَلَيْكُمُ الشِّرْكُ الْأَصْغَرُ: الرِّيَاءُ» أَخْرَجَهُ أَحْمَدُ بِسَنَدٍ حَسَنٍ

মাহমূদ ইবনু লাবীদ (রাঃ) থেকে বর্ণিতঃ

তিনি বলেন, রাসূলুল্লাহ (সাল্লাল্লাহু ‘আলাইহি ওয়া সাল্লাম) বলেছেনঃ তোমাদের ব্যাপারে আমার সর্বাপেক্ষা ভয়ের বস্তু যা আমি ভয় পাচ্ছি তা হচ্ছে ছোট শির্ক- রিয়া (অর্থাৎ লোক দেখানো ধর্মকর্ম)। [১৫৯৪]
[১৫৯৪] আহমাদ ২৩১১৯,২৭৭৪২। হাদিসটির সানাদ উত্তম; তাওযিহুল আহকাম ৭/৪০০

১৪৮২

সহিহ হাদিস
وَعَنِ ابْنِ عُمَرَ رَضِيَ اللَّهُ عَنْهُمَا قَالَ: قَالَ رَسُولُ اللَّهِ - صلى الله عليه وسلم -: «الظُّلْمُ ظُلُمَاتٌ يَوْمَ الْقِيَامَةِ» مُتَّفَقٌ عَلَيْهِ

আবদুল্লাহ ইবনু ‘উমার (রাঃ) থেকে বর্ণিতঃ

তিনি বলেন, রাসূলুল্লাহ (সাল্লাল্লাহু ‘আলাইহি ওয়া সাল্লাম) বলেছেন, যুল্‌ম কিয়ামতের দিন অনেক অন্ধকারের রূপ ধারণ করবে। [১৫৯২]
[১৫৯২] মুসলিম তাঁর বর্ণনায় (আরবী) শব্দটি বৃদ্ধি করেছনে। বুখারী ২৪৪৭, মুসলিম ২৫৭৯, তিরমিযী ২০৩০, আহমাদ ৫৬২৯, ৬১৭৫ ।

১৪৭৯

দুর্বল হাদিস
عَنْ أَبِي هُرَيْرَةَ - رضي الله عنه - قَالَ: قَالَ رَسُولُ اللَّهِ - صلى الله عليه وسلم -: «إِيَّاكُمْ وَالْحَسَدَ، فَإِنَّ الْحَسَدَ يَأْكُلُ الْحَسَنَاتِ، كَمَا تَأْكُلُ النَّارُ الْحَطَبَ» أَخْرَجَهُ أَبُو دَاوُدَ

আবূ হুরাইরা (রাঃ) থেকে বর্ণিতঃ

তিনি বলেন ,রাসুলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু ‘আলাইহি ওয়া সাল্লাম বলেছেন,তোমরা নিজেদেরকে হিংসার অনিষ্ট হতে রক্ষা কর। কারন হিংসা সৎ কর্মগুলোকে ঐভাবেই খেয়ে ফেলে ( বিনষ্টকরে) যেভাবে আগুন কাঠ , খড় পুড়িয়ে ধ্বংস করে। [১৫৯০]
[১৫৯০] ইমাম সুয়ূত্বী তাঁর আল জামেউস সগীর ২৯০৮ এ হাদীসটিকে যঈফ বলেছেন। শাইখ বিন বায তাঁর হাশিয়া বুলুগুল মারাম ৭৯১ গ্রন্থেও অনুরূপ বলেছেন। তিনি তাঁর আত্‌ তুহফাতুল কারীমাহ ১৩৯ গ্রন্থে বলেন, এখানে একজন অপরিচিত ব্যক্তি রয়েছে। এতে ঈসা বিন আবূ ঈসা আল হান্নাত রয়েছে যিনি মাতরূক। শাইখ আলবানী যঈফ আবূ দাউদ, ৪৯০৩, সিলসিলা যঈফা ১৯০২, যঈফা জামে’ ৩৯৩৫এ হাদীসটিকে দুর্বল বলেছেন। শাইখ আলবানী আবূ হুরাইরাহ সূত্রে বর্ণিত একটি হাদীসকে তাহকীক রিয়াযুস স্বলিহীন ১৫৭৭ গ্রন্থে বলেন, এতে একজন বর্ণনাকারী আছে যার নাম উল্লেখ করা হয়নি।

১৪৮৫

সহিহ হাদিস
وَعَنْ أَبِي هُرَيْرَةَ - رضي الله عنه - قَالَ: قَالَ رَسُولُ اللَّهِ - صلى الله عليه وسلم -: «آيَةُ الْمُنَافِقِ ثَلَاثٌ: إِذَا حَدَّثَ كَذَبَ، وَإِذَا وَعَدَ أَخْلَفَ، وَإِذَا ائْتُمِنَ خَانَ» مُتَّفَقٌ عَلَيْهِ

আবূ হুরাইরাহ (রাঃ) থেকে বর্ণিতঃ

তিনি বলেন, রাসূলুল্লাহ (সাল্লাল্লাহু ‘আলাইহি ওয়া সাল্লাম) বলেছেনঃ মুনাফিকের চিহ্ন তিনটিঃ ১. যখন কথা বলে মিথ্যা বলে; ২. যখন অঙ্গীকার করে ভঙ্গ করে এবং ৩. আমানত রাখা হলে খিয়ানত করে। [১৫৯৫]
[১৫৯৫] বুখারী ৩৩, ২৬৮২, ২৭৪৯, ৬০৯৫, মুসলিম ৫৯, তিরমিযী ২৬৩১, নাসায়ী ৫০২১, আহমাদ ৮৪৭০, ৮৯১৩ ।

১৪৮৬

সহিহ হাদিস
وَلَهُمَا مِنْ حَدِيثِ عَبْدِ اللَّهِ بْنِ عَمْرٍو: «وَإِذَا خَاصَمَ فَجَرَ»

আবদুল্লাহ্‌ ইবনু ‘উমার (রাঃ) থেকে বর্ণিতঃ

সহীহ হাদীস গ্রন্থ দু’টিতে আছে, ঝগড়া করলে অশ্লীল ভাষা ব্যবহার করে। [১৫৯৬]
[১৫৯৬] বুখারীর বর্ণনায় রয়েছে, নাবী (সাল্লাল্লাহু ‘আলাইহি ওয়া সাল্লাম) বলেনঃ (আরবী)
চারটি স্বভাব যার মধ্যে বিদ্যমান সে হচ্ছে খাঁটি মুনাফিক। যার মধ্যে এর কোন একটি স্বভাব থাকবে, তা পরিত্যাগ না করা পর্যন্ত তার মধ্যে মুনাফিকের একটি স্বভাব থেকে যায়। ১. আমানত রাখা হলে খিয়ানত করে; ২. কথা বললে মিথ্যা বলে; ৩ অঙ্গীকার করলে ভঙ্গ করে; ৪. বিবাদে লিপ্ত অশ্লীলভাবে গালাগালি দেয়। বুখারী ৩৪, ২৪৫৯; ৩১৭৮, মুসলিম ৫৮, তিরমিযী ২৬৩২, নাসায়ী ৫০২০, আবূ দাঊদ ৪৬৮৮, আহমাদ ৬৭২৯, ৬৮২৫ ।

১৪৮৭

সহিহ হাদিস
وَعَنِ ابْنِ مَسْعُودٍ - رضي الله عنه - قَالَ: قَالَ رَسُولُ اللَّهِ - صلى الله عليه وسلم -: «سِبَابُ الْمُسْلِمِ فُسُوقٌ، وَقِتَالُهُ كُفْرٌ» مُتَّفَقٌ عَلَيْهِ

আবদুল্লাহ ইবনু মাস’ঊদ (রাঃ) থেকে বর্ণিতঃ

তিনি বলেছেন যে, রসূলুল্লাহ (সাল্লাল্লাহু ‘আলাইহি ওয়া সাল্লাম) বলেছেনঃ মুসলিমকে গালি দেয়া ফাসিকী এবং তাকে হত্যা করা কুফুরী। [১৫৯৭]
[১৫৯৭] বুখারী ৪৮, ৭০৭৬, ৬০৪৪, মুসলিম ৬৪, তিরমিযী ১৯৮০, ২৬৩৪, ২৬৩৫, নাসায়ী ৩১০৫, ৪১০৬, ৪১০৮। ইবনু মাজাহ ৬৯, ৩৯৩৯, ৩৮৯৩ ।

১৪৮৮

সহিহ হাদিস
وَعَنْ أَبِي هُرَيْرَةَ - رضي الله عنه - قَالَ: قَالَ رَسُولُ اللَّهِ - صلى الله عليه وسلم -: «إِيَّاكُمْ وَالظَّنَّ، فَإِنَّ الظَّنَّ أَكْذَبُ الْحَدِيثِ» مُتَّفَقٌ عَلَيْهِ

আবূ হুরাইরাহ (রাঃ) থেকে বর্ণিতঃ

তিনি বলেন, রাসূলুল্লাহ (সাল্লাল্লাহু ‘আলাইহি ওয়া সাল্লাম) বলেছেনঃ তোমরা কারো প্রতি খারাপ ধারণা পোষণ করো না। কেননা, খারাপ ধারণা সবচেয়ে বড় মিথ্যা। [১৫৯৮]
[১৫৯৮] বুখারী ৫১৪৩, ৬০৬৪, ৬০৬৬, ৬৭২৫, মুসলিম ১৪১৩, ২৫৬৩, তিরমিযী ১৯৮৮, নাসায়ী ৩২৩৯, ৩২৪০, আবূ দাউদ ২০৮০, ইবনু মাজাহ ১৮৬৭, ২১৭৪, আহমাদ ৭২৯২, ৭৬৪৩, মালেক ১১১১, ১৬৮৪, দারেমী ২১৭৫।

১৪৮৯

সহিহ হাদিস
وَعَنْ مَعْقِلِ بْنِ يَسَارٍ - رضي الله عنه - قَالَ: سَمِعْتُ رَسُولَ اللَّهِ - صلى الله عليه وسلم - يَقُولُ: «مَا مِنْ عَبْدٍ يَسْتَرْعِيهِ اللَّهُ رَعِيَّةً، يَمُوتُ يَوْمَ يَمُوتُ (1)، وَهُوَ غَاشٌّ لِرَعِيَّتِهِ، إِلَّا حَرَّمَ اللَّهُ عَلَيْهِ الْجَنَّةَ» مُتَّفَقٌ عَلَيْهِ

মা’কিল ইব্‌নু ইয়াসার থেকে বর্ণিতঃ

তিনি বলেন, আমি রাসূলুল্লাহ (সাল্লাল্লাহু ‘আলাইহি ওয়া সাল্লাম) কে বলতে শুনেছি, কোন দায়িত্বশীল ব্যক্তি মুসলিম জনসাধারণের দায়িত্ব লাভ করল এবং তাঁর মৃত্যু হল এ হালতে যে, সে তার বিষয়ে ছিল খিয়ানতকারী, তাহলে আল্লাহ তার জন্য জান্নাত হারাম করে দেবেন। [১৫৯৯]
[১৫৯৯] বুখারী ৬৯২, ৭১৭৫, আবূ দাউদ ৫৮৮।

১৪৯০

সহিহ হাদিস
وَعَنْ عَائِشَةَ رَضِيَ اللَّهُ عَنْهَا قَالَتْ: قَالَ رَسُولُ اللَّهِ - صلى الله عليه وسلم -: «اللَّهُمَّ مَنْ وَلِيَ مِنْ أَمْرِ أُمَّتِي شَيْئًا، فَشَقَّ عَلَيْهِمْ، فَاشْقُقْ عَلَيْهِ» أَخْرَجَهُ مُسْلِمٌ

আয়িশাহ (রাঃ) থেকে বর্ণিতঃ

তিনি বলেনঃ রাসূলুল্লাহ (সাল্লাল্লাহু ‘আলাইহি ওয়া সাল্লাম) বলেছেনঃ হে আল্লাহ! যে ব্যক্তি আমার উম্মাতের উপর শাসন কর্তৃত্বের অধিকারী হওয়ার পর তাদের প্রতি কঠোরতা অবলম্বন করবে, তুমিও তার প্রতি কঠোরতা অবলম্বন কর। [১৬০০]
[১৬০০] মুসলিম ১৮২৮, আমমাদ ২৩৮১৬, ২৪১০১, ২৫৭০৫ ।

১৪৯১

সহিহ হাদিস
وَعَنْ أَبِي هُرَيْرَةَ - رضي الله عنه - قَالَ: قَالَ رَسُولُ اللَّهِ - صلى الله عليه وسلم -: «إِذَا قَاتَلَ أَحَدُكُمْ، فَلْيَتَجَنَّبِ الْوَجْهَ» مُتَّفَقٌ عَلَيْهِ

আবু হুরাইরাহ্‌ (রাঃ) থেকে বর্ণিতঃ

তিনি বলেন, রাসূলুল্লাহ্‌ (সাল্লাল্লাহু ‘আলাইহি ওয়া সাল্লাম) বলেছেনঃ তোমাদের মধ্যে কেউ যখন যুদ্ধ করবে, তখন সে যেন মুখমন্ডলে আঘাত করা হতে বিরত থাকে। [১৬০১]
[১৬০১] বুখারী ২৫৫৯, মুসলিম ২৬১২, আহমাদ ৭২৭৯, ৭৩৭২, ২৭৩৪১ ।

১৪৯২

সহিহ হাদিস
وَعَنْهُ أَنَّ رَجُلاً قَالَ: يَا رَسُولَ اللَّهِ! أَوْصِنِي، قَالَ: «لَا تَغْضَبْ»، فَرَدَّدَ مِرَارًا، قَالَ: «لَا تَغْضَبْ» أَخْرَجَهُ الْبُخَارِيُّ

আবূ হুরাইরাহ (রাঃ) থেকে বর্ণিতঃ

এক ব্যক্তি নাবী (সাল্লাল্লাহু ‘আলাইহি ওয়া সাল্লাম)-এর নিকট বললঃ আপনি আমাকে অসিয়ত করুন। তিনি বললেনঃ তুমি রাগ করো না। লোকটি কয়েকবার তা বললেন, নাবী (সাল্লাল্লাহু ‘আলাইহি ওয়া সাল্লাম) প্রত্যেক বারেই বললেনঃ রাগ করো না। [১৬০২]
[১৬০২] বুখারী ৬১১৬, তিরমিযী ২০২০, আহমাদ ২৭৩১১, ৯৬৮২।

১৪৯৩

সহিহ হাদিস
وَعَنْ خَوْلَةَ الْأَنْصَارِيَّةَ رَضِيَ اللَّهُ عَنْهَا قَالَتْ: قَالَ رَسُولُ اللَّهِ - صلى الله عليه وسلم -: «إِنَّ رِجَالاً يَتخوَّضون فِي مَالِ اللَّهِ بِغَيْرِ حَقٍّ، فَلَهُمُ النَّارُ يَوْمَ الْقِيَامَةِ» أَخْرَجَهُ الْبُخَارِيُّ

খাওলাহ্‌ আনসারীয়া (রাঃ) থেকে বর্ণিতঃ

তিনি বলেন, ‘আমি রাসূলুল্লাহ (সাল্লাল্লাহু ‘আলাইহি ওয়া সাল্লাম)-কে বলতে শুনেছি যে, কিছু লোক আল্লাহ্‌র দেয়া সম্পদ অন্যায়ভাবে ব্যয় করে, কিয়ামতের দিন তাদের জন্য জাহান্নাম নির্ধারিত।’ [১৬০৩]
[১৬০৩] বুখারী ৩১১৮, তিরমিযী ২৩৭৪, আমমাদ ২৬৫১৪, ২৬৫৮৩ । (আরবী) এর অর্থঃ অন্যায়ভাবে মুসলমানদের সম্পদ হস্তক্ষেপ করে। উক্ত হাদীসে পৃষ্ঠপোষকদের অন্যায়ভাবে কোন সম্পদ গ্রহণ করা এবং এর হকদারদের মানা করা থেকে নিবারণ করা হচ্ছে।

১৪৯৪

সহিহ হাদিস
وَعَنْ أَبِي ذَرٍّ - رضي الله عنه - عَنِ النَّبِيِّ - صلى الله عليه وسلم - فِيمَا يَرْوِي عَنْ رَبِّهِ عَزَّ وَجَلَّ- قَالَ: «يَا عِبَادِي! إِنِّي حَرَّمْتُ الظُّلْمَ عَلَى نَفْسِي، وَجَعَلْتُهُ بَيْنَكُمْ مُحَرَّمًا، فَلَا تَظَالَمُوا» أَخْرَجَهُ مُسْلِمٌ

আবূ যার্‌ (রাঃ) থেকে বর্ণিতঃ

নাবী (সাল্লাল্লাহু ‘আলাইহি ওয়া সাল্লাম) বলেন, তাঁর প্রভু আল্লাহ্‌ তা’আলা বলেছেনঃ হে আমার বান্দাগণ! আমি যুলুম করাকে নিজের উপর হারাম করেছি! এবং ওটা তোমাদের মধ্যেও হারাম করে দিয়েছি। অতএব, তোমরা পরস্পরের প্রতি যুলুম করো না। [১৬০৪]
[১৬০৪] মুসলিম ২৫৭৭, তিরমিযী ২৪৯৫, ইবনু মাজাহ ৪২৫৭, আহমাদ ২০৮৬০, ২০৯১১, দারেমী ২৭৮৮ ।

১৪৯৫

সহিহ হাদিস
وَعَنْ أَبِي هُرَيْرَةَ - رضي الله عنه - أَنَّ رَسُولَ اللَّهِ - صلى الله عليه وسلم - قَالَ: «أَتَدْرُونَ مَا الْغِيبَةُ» ? قَالُوا: اللَّهُ وَرَسُولُهُ أَعْلَمُ. قَالَ: «ذِكْرُكَ أَخَاكَ بِمَا يَكْرَهُ». قِيلَ: أَفَرَأَيْتَ إِنْ كَانَ فِي أَخِي مَا أَقُولُ? قَالَ: «إِنْ كَانَ فِيهِ مَا تَقُولُ فَقَدِ اغْتَبْتَهُ، وَإِنْ لَمْ يَكُنْ فَقَدْ بَهَتَّهُ» أَخْرَجَهُ مُسْلِمٌ

আবূ হুরাইরাহ (রাঃ) থেকে বর্ণিতঃ

তিনি বলেনঃ রাসূলুল্লাহ (সাল্লাল্লাহু ‘আলাইহি ওয়া সাল্লাম) বলেছেনঃ তোমরা কি জান গীবাত কাকে বলে? উপস্থিত সাহাবীগণ বলেচেহ, আল্লাহ্‌ ও তাঁর রাসূল (সাল্লাল্লাহু ‘আলাইহি ওয়া সাল্লাম) অধিক জানেন। তিনি বললেনঃ তোমার ভাই যে কথা তার প্রসঙ্গে বলা অপছন্দ মনে করে তার অসাক্ষাতে তা বলার নাম গীবাত। কেউ বললোঃ আপনি কি মনে করেন আমি যা বলছি তা যদি তার মধ্যে বিদ্যমান থাকে? রাসূলুল্লাহ (সাল্লাল্লাহু ‘আলাইহি ওয়া সাল্লাম) বললেনঃ তুমি যা বলছ তা যদি তার মধ্য থাকে তাহলে তুমি তার গীবাত করলে, আর যদি তার মধ্যে তা না থাকে তুমি তার উপর মিথ্যা অপবাদ দিলে। [১৬০৫]
[১৬০৫] মুসলিম ২৫৮৯, তিরমিযী ১৯৩৪, আবূ দাউদ ৪৮৩৪, আহমাদ ৭১০৬, ৮৭৫৯, দারেমী ২৭১৪ ।

১৪৯৬

সহিহ হাদিস
وَعَنْهُ قَالَ: قَالَ رَسُولُ اللَّهِ - صلى الله عليه وسلم -: «لَا تَحَاسَدُوا وَلَا تَنَاجَشُوا، وَلَا تَبَاغَضُوا، وَلَا تَدَابَرُوا، وَلَا يَبِعْ بَعْضُكُمْ عَلَى بَيْعِ بَعْضٍ، وَكُونُوا عِبَادَ اللَّهِ إِخْوَانًا، الْمُسْلِمُ أَخُو الْمُسْلِمِ، لَا يَظْلِمُهُ، وَلَا يَخْذُلُهُ، وَلَا يَحْقِرُهُ، التَّقْوَى هَا هُنَا، -وَيُشِيرُ إِلَى صَدْرِهِ ثَلَاثَ مِرَارٍ-، بِحَسْبِ امْرِئٍ مِنَ الشَّرِّ أَنْ يَحْقِرَ أَخَاهُ الْمُسْلِمَ، كُلُّ الْمُسْلِمِ عَلَى الْمُسْلِمِ حَرَامٌ، دَمُهُ، وَمَالُهُ، وَعِرْضُهُ» أَخْرَجَهُ مُسْلِمٌ

আবূ হুরাইরা (রাঃ) থেকে বর্ণিতঃ

তিনি বলেন, রাসূলুল্লাহ (সাল্লাল্লাহু ‘আলাইহি ওয়া সাল্লাম) বলেছেনঃ তোমরা একে অপরের প্রতি হিংসা করো না, (ক্রয় করার ভান করে) মূল্য বৃদ্ধি করে ধোঁকা দিও না। একে অপরের প্রতি বিদ্বেষ পোষণ করবে না। একে অপরকে পৃষ্ঠ প্রদর্শন (অবজ্ঞা প্রকাশ) করবে না। তোমাদের একজনের সাওদা করা শেষ না হলে ঐ বস্তুর সাওদা বা কেনা-বেচার প্রস্তাব করবে না। হে আল্লাহ্‌র বান্দাগণ! তোমরা পরস্পর ভাই-ভাই হয়ে যাও। মুসলিম মুসলিমের ভাই। সে তার উপর অত্যাচার করবে না, অসম্মান করবে না, তুচ্ছ ভাববে না। ‘ধর্ম ভীরুতা এখানে’-এটা বলার সময় তিনি স্বীয় বক্ষস্থলের প্রতি তিনবার ইঙ্গিত করেছিলেন। কোন মুসলিম ভাইকে তুচ্ছ জ্ঞান করাটা মন্দ ব্যবহারের জন্য যথেষ্ট (অর্থাৎ এরূপ তুচ্ছ জ্ঞান প্রদর্শন দ্বারা পাপ কার্য হওয়া সুনিশ্চিত।) এক মুসলমান অন্য মুসলমানকে খুন করা, তাঁর মাল গ্রাস করা ও সম্মানে আঘাত দেয়া হারাম। [১৬০৬]
[১৬০৬] বুখারী ৫১৪৪, ৬০৬৬, ২৫৬৩, ২৫৬৪, মুসলিম ২৫৬৩, ২৫৬৪, তিরমিযী ১১৩৪, ১৯৮৮, নাসায়ী ৩২৩৯, ৪৪৯৬, আবূ দাউদ ৩৪৩৮, ৩৪৪৩, ইবনু মাজাহ ১৮৬৭, ২১৭২,২১৭৪, আহমাদ ৭৬৭০, ৭৮১৫, মালেক ১৩৯১, ১৬৮৪ ।

১৪৯৭

সহিহ হাদিস
وَعَنْ قُطْبَةَ بْنِ مَالِكٍ - رضي الله عنه - قَالَ: كَانَ رَسُولُ اللَّهِ - صلى الله عليه وسلم - يَقُولُ: «اللَّهُمَّ جَنِّبْنِي مُنْكَرَاتِ الْأَخْلَاقِ، وَالْأَعْمَالِ، وَالْأَهْوَاءِ، وَالْأَدْوَاءِ» أَخْرَجَهُ التِّرْمِذِيُّ، وَصَحَّحَهُ الْحَاكِمُ وَاللَّفْظُ لَهُ

কুত্ববাহ ইবনু মালিক (রাঃ) থেকে বর্ণিতঃ

তিনি বলেন, রাসূলুল্লাহ (সাল্লাল্লাহু ‘আলাইহি ওয়া সাল্লাম) বলতেনঃ হে আল্লাহ! আমাকে ইসলাম গর্হিত স্বভাব ও মন্দ কাজ হতে, মন্দ কামনা হতে ও ব্যাধি হতে দূর রাখো। [১৬০৭]
[১৬০৭] তিরমিযী ৩৫৯১, হাকিম ১ম ক্ষন্ড ৫৩২ পৃষ্ঠা। (আরবী) শব্দের বহুবচন। এর অর্থ হচ্ছেঃ রোগ-ব্যাধিসমূহ।

১৪৯৮

দুর্বল হাদিস
وَعَنِ ابْنِ عَبَّاسٍ رَضِيَ اللَّهُ عَنْهُمَا قَالَ: قَالَ رَسُولُ اللَّهِ - صلى الله عليه وسلم -: «لَا تُمَارِ أَخَاكَ، وَلَا تُمَازِحْهُ، وَلَا تَعِدْهُ مَوْعِدًا فَتُخْلِفَهُ» أَخْرَجَهُ التِّرْمِذِيُّ بِسَنَدٍ فِيهِ ضَعْفٌ

ইবনু ‘আবাস (রাঃ) থেকে বর্ণিতঃ

তিনি বলেন, রাসূলুল্লাহ (সাল্লাল্লাহু ‘আলাইহি ওয়া সাল্লাম) বলেছেনঃ তুমি তোমার মুসলিম ভাই এর সাথে ঝগড়া করবে না, তাকে ঠাট্টা করবে না ও তার সাথে ওয়াদা করে তা খিলাফ করবে না। [১৬০৮]
[১৬০৮] তিরমিযী ১৯৯৫ । আবূ নাইম তাঁর হুলইয়াতুল আউলিয়া ৩/৩৯৪ পৃষ্ঠায় বলেন, ইকরামার হাদীস গারীব। আবদুর রহমান মুবারকপুরী তাঁর তুহফাতুল আহওয়ারী ৫/৪০৩ পৃষ্ঠায় বলেন, এর সনদে লাইস বিন আবূ সুলাইম রয়েছে। তার সম্পর্কে ইবনু হাজার আসকালানী বলেন, শেষ জীবনে তিনি হাদীস এলোমেলোভাবে বর্ণনা করেছেন, পার্থক্য করা যায় না এ হাদীস তার জীবনের কোন সময়ের তাই তার হাদীস বর্জন করা হয়েছে। শাইখ আলবানী যঈফ আল আদাবুল মুফরাদ ৫৯, তাখরীফ মিশকাতুল মাসাবীহ ৪৮১৮, যঈফুল জামে ৬২৭৪, যঈফ তিরমিযী ১৯৯৫ গ্রন্থে হাদীসটিকে দুর্বল বলেছেন, ইমাম সুয়ূত্বী তাঁর আল জামেউস সগীর ৯৮৬৫ গ্রন্থেও অনুরূপ বলেছেন। ইবনে উসাইমীনও শরহে বুলুগুল মারাম ৬/৩৯১ গ্রন্থেও এর সনদকে দুর্বল বলেছেন।

১৪৯৯

দুর্বল হাদিস
وَعَنْ أَبِي سَعِيدٍ الْخُدْرِيِّ - رضي الله عنه - قَالَ: قَالَ رَسُولُ اللَّهِ - صلى الله عليه وسلم -: «خَصْلَتَانِ لَا يَجْتَمِعَانِ فِي مُؤْمِنٍ: الْبُخْلُ، وَسُوءُ الْخُلُقِ» أَخْرَجَهُ التِّرْمِذِيُّ، وَفِي سَنَدِهِ ضَعْفٌ

আবূ সাঈদ খুদরী (রাঃ) থেকে বর্ণিতঃ

তিনি বলেন, রাসূলুল্লাহ (সাল্লাল্লাহু ‘আলাইহি ওয়া সাল্লাম) বলেছেনঃ কোন মু’মিনের মধ্যে দুটো চরিত্র একত্রিত হয় না, কৃপনতা ও মন্দ চরিত্র। [১৬০৯]
[১৬০৯] এই হাদীসটির হুকুমে দুদল মুহাদ্দিসীন দু ধরনের মত পাওয়া যায়। এক দলের মধ্যে যারা রয়েছেন, তাদের মধ্যে ইমাম মুনযিরী তাঁর তারগীর ও তারহীর (৩/৩৩৯) গ্রন্থে হাদীসটিকে হাসান হওয়ার সম্ভাবনাকে উড়িয়ে দেয়া যায় না। ইমাম সুয়ূতী তাঁর আল জামেউস সগীর (৩৯১৫) গ্রন্থে হাদীসটিকে সহীহ বলেছেন। শাইখ আলবানী তাঁর সহীহ তারগীব (২৬০৮) গ্রন্থে হাদীসটিকে সহীহ লিগাইরিহী বলেছেন। পক্ষন্তরে দ্বিতীয় মতে হাদীসটিকে যারা দুর্বল বলেছেন তাদের মধ্যে শাইখ আলবানীই আবার সিলসিলা যঈফা (১১১৯), যঈফুল জামে’ (২৮৩৩), তাখরীফ মিশকাতুল মাসাবীহ (১৮১২), যঈফ তিরমিযী (১৯৬২) গ্রন্থসমূহে হাদীসটি দুর্বল বলেছেন। ইমাম দারাকুতনী তাঁর লিসানুল মীযানুল (২/৭৮) গ্রন্থে বলেন, এ হাদীসটি আবূ হুরাইরাহ (রাঃ) সূত্রে বর্ণনা করে বলেন, হাদীসটি প্রমাণিত নয়। ইবনু আবদুল বার তাঁর আত তামহীদ (১৬/২৫৪) গ্রন্থে আবূ হুরাইরাহ সূত্রে বর্ণিত এ হাদীসটিকে জাল বলে অভিহিত করেছেন। ইমাম মিযযী তাঁর তাহযীবুল কামাল (৯/৮৯) গ্রন্থে বলেন, এ হাদীসের বর্ণনাকারীদের মধ্যে সাদাকাহ বিন মূসা নামক বর্ণনাকারী রয়েছে, যাকে ইবনু মুঈন, ইমাম আবূ দাউদ, ইমাম নাসায়ী দূর্বল বলেছেন। ইবনু হাজারও তাখরীজ মিশকাতুল মাসাবীহ (২/২৮০) গ্রন্থে বলেছেন, এ হাদীসটি সাদাকাহ বিন মূসা এককভাবে বর্ণনা করেছেন, আর তিনি দুর্বল বর্ণনাকারী।

১৫০০

সহিহ হাদিস
وَعَنْ أَبِي هُرَيْرَةَ - رضي الله عنه - قَالَ: قَالَ رَسُولُ اللَّهِ - صلى الله عليه وسلم -: «الْمُسْتَبَّانِ مَا قَالَا، فَعَلَى الْبَادِئِ، مَا لَمْ يَعْتَدِ الْمَظْلُومُ» أَخْرَجَهُ مُسْلِمٌ

আবূ হুরাইরা (রাঃ) থেকে বর্ণিতঃ

তিনি বলেন, রাসূলুল্লাহ (সাল্লাল্লাহু ‘আলাইহি ওয়া সাল্লাম) বলেছেনঃ গালিদাতাদের মধ্যে প্রথম গালিদাতার উপর যাবতীয় গালির পাপ বর্তাকে থাকে, যতক্ষণ অত্যাচারিত দ্বিতীয় ব্যক্তি সীমালংঘন না করে। (গালিদানে প্রতিপক্ষকে ছাড়িয়ে না যায়।) [১৬১০]
[১৬১০] মুসলিম ২৪৮৭, ২৪৮৮, বুখারী ৪১৪১, ৪১৪৬ ।

১৫০১

হাসান হাদিস
وَعَنْ أَبِي صِرْمَةَ - رضي الله عنه - قَالَ: قَالَ رَسُولُ اللَّهِ - صلى الله عليه وسلم -: «مَنْ ضَارَّ مُسْلِمًا ضَارَّهُ اللَّهُ، وَمَنْ شَاقَّ مُسْلِمًا شَقَّ اللَّهُ عَلَيْهِ» أَخْرَجَهُ أَبُو دَاوُدَ وَالتِّرْمِذِيُّ وَحَسَّنَهُ

আবূ সিরমাহ (রাঃ) থেকে বর্ণিতঃ

রাসূলুল্লাহ (সাল্লাল্লাহু ‘আলাইহি ওয়া সাল্লাম) বলেছেনঃ যে ব্যক্তি কোন মুসলিমের ক্ষতি করবে প্রতিদানে আল্লাহ তা’আলাও তার ক্ষতি করবেন। আর যে ব্যক্তি কোন মুসলিমকে কষ্ট দেবে আল্লাহ্‌ তার প্রতিদানে তাকে কষ্ট দেবেন। [১৬১১]
[১৬১১] আবু দাউদ ৩৬৩৫, তিরমিযী ১৯৪০, ইবনি মাজাহ ২৩৪২, আহমাদ ১৫৩২৮ ।

১৫০২

সহিহ হাদিস
وَعَنْ أَبِي الدَّرْدَاءِ - رضي الله عنه - قَالَ: قَالَ رَسُولُ اللَّهِ - صلى الله عليه وسلم -: «إِنَّ اللَّهَ يُبْغِضُ الْفَاحِشَ الْبَذِيءَ» أَخْرَجَهُ التِّرْمِذِيُّ، وَصَحَّحَهُ

আবূ দারদা (রাঃ) থেকে বর্ণিতঃ

তিনি বলেন, রাসূলুল্লাহ (সাল্লাল্লাহু ‘আলাইহি ওয়া সাল্লাম) বলেছেনঃ আল্লাহ্‌ তা’আলা অশ্লীলভাষী, নির্লজ্জ ইতরকে ঘৃণা করে থাকেন। [১৬১২]
[১৬১২] তিরমিযী ২০০ ।

১৫০৪

সহিহ হাদিস
وَعَنْ عَائِشَةَ رَضِيَ اللَّهُ عَنْهَا قَالَتْ: قَالَ رَسُولُ اللَّهِ - صلى الله عليه وسلم -: «لَا تَسُبُّوا الْأَمْوَاتَ ; فَإِنَّهُمْ قَدْ أَفْضَوْا إِلَى مَا قَدَّمُوا» أَخْرَجَهُ الْبُخَارِيُّ

আয়িশাহ (রাঃ) থেকে বর্ণিতঃ

তিনি বলেন, নাবী (সাল্লাল্লাহু ‘আলাইহি ওয়া সাল্লাম) বলেছেনঃ তোমরা মৃতদের গালি দিও না। কারণ, তারা স্বীয় কর্মফল পর্যন্ত পৌছে গেছে। [১৬১৪]
[১৬১৪] বুখারী ১৩৯৩, ৬৫১৬, নাসায়ী ১৯৩৬, আবূ দাউদ ৪৮৯৯, আহমাদ ২৪৯৪২, দারেমী ২৫১১ ।

১৫০৩

সহিহ হাদিস
وَلَهُ مِنْ حَدِيثِ ابْنِ مَسْعُودٍ -رَفَعَهُ-: «لَيْسَ الْمُؤْمِنُ بِالطَّعَّانِ، وَلَا اللَّعَّانِ، وَلَا الْفَاحِشِ، وَلَا الْبَذِيءِ» وَحَسَّنَهُ وَصَحَّحَهُ الْحَاكِمُ، وَرَجَّحَ الدَّارَقُطْنِيُّ وَقْفَهُ

ইবনু মাসঊদ (রাঃ) থেকে বর্ণিতঃ

(রাসূলুল্লাহ (সাল্লাল্লাহু ‘আলাইহি ওয়া সাল্লাম) হতে বর্ণিত হয়েছে, তিনি বলেন, মু’মিন তিরস্কারকারী, অভিসম্পাত দানকারী, অশ্লীলভাষী, নির্লজ্জ ইতর প্রকৃতির হয় না। [১৬১৩]
[১৬১৩] তিরমিযী ১৯৭৭, আহমাদ ৩৮২৯, ৩৯৩৮ ।

১৫০৫

সহিহ হাদিস
وَعَنْ حُذَيْفَةَ - رضي الله عنه - قَالَ: قَالَ رَسُولُ اللَّهِ - صلى الله عليه وسلم -: «لَا يَدْخُلُ الْجَنَّةَ قَتَّاتٌ» مُتَّفَقٌ عَلَيْهِ

হুযাইফাহ (রাঃ) থেকে বর্ণিতঃ

তিনি বলেন, রাসূলুল্লাহ (সাল্লাল্লাহু ‘আলাইহি ওয়া সাল্লাম) বলেছেনঃ চোগলখোর কক্ষনো জান্নাতে প্রবেশ করবে না। [১৬১৫]
[১৬১৫] বুখারী ৬০৫৬, মুসলিম ১০৫, তিরমিযী ২০২৬, আবূ দাউদ ৪৮৭১, আহমাদ ২২৭৩৬, ২২৭৯৪, (আরবী) শব্দের অর্থ; (আরবী) অর্থাৎ চোগলখোর ব্যক্তি।

১৫০৬

দুর্বল হাদিস
وَعَنْ أَنَسٍ - رضي الله عنه - قَالَ: قَالَ رَسُولُ اللَّهِ - صلى الله عليه وسلم -: «مَنْ كَفَّ غَضَبَهُ، كَفَّ اللَّهُ عَنْهُ عَذَابَهُ» أَخْرَجَهُ الطَّبَرَانِيُّ فِي «الْأَوْسَطِ»

আনাস (রাঃ) থেকে বর্ণিতঃ

তিনি বলেন, রাসূলুল্লাহ (সাল্লাল্লাহু ‘আলাইহি ওয়া সাল্লাম) বলেছেনঃ যে ব্যক্তি তার ক্রোধ সংবরণ করে (ক্রোধের বশে কোন অঘটন না ঘটায়) আল্লাহ্‌ তাকে শাস্তি প্রদানে বিরত থাকেন। [১৬১৬]
[১৬১৬] সিলসিলা সহীহাহ ২৩৬০, হাদীসটির সনদেক আলবানী হাসান বলেছেন। ইবনু হাজার বলেন, এর শাহেদ আছে।

১৫০৭

নির্ণীত নয়
وَلَهُ شَاهِدٌ مِنْ حَدِيثِ ابْنِ عُمَرَ عِنْدَ ابْنِ أَبِي الدُّنْيَا

বর্ণনাকারী থেকে বর্ণিতঃ

এ হাদীসের একটা পৃষ্ঠপোষক হাদীস ইবনু আবিদ দুনিয়া সাহাবী ইবনু উমার (রাঃ) হতে বর্ণনা করেছেন।

১৫০৮

দুর্বল হাদিস
وَعَنْ أَبِي بَكْرٍ الصِّدِّيقِ - رضي الله عنه - قَالَ: قَالَ رَسُولُ اللَّهِ - صلى الله عليه وسلم -: «لَا يَدْخُلُ الْجَنَّةَ خِبٌّ، وَلَا بَخِيلٌ، وَلَا سَيِّئُ الْمَلَكَةِ» أَخْرَجَهُ التِّرْمِذِيُّ وَفَرَّقَهُ حَدِيثَيْنِ، وَفِي إِسْنَادِهِ ضَعْفٌ

আবূ বাকর সিদ্দীক (রাঃ) থেকে বর্ণিতঃ

তিনি বলেন, রাসূলুল্লাহ (সাল্লাল্লাহু ‘আলাইহি ওয়া সাল্লাম) বলেছেনঃ জান্নাতে প্রবেশ করবে না ধোঁকাবাজ, কৃপণ, কর্তৃত্বের বা ক্ষমতার অপপ্রয়গকারী। [১৬১৭]
[১৬১৭] তিরমিযি ১৯৪৭, ১৯৬৪ । ইবনুল কীসরানী তাঁর দাখীরাতুল হুলফায ৫/২৭১০ গ্রন্থে বলেন, দুই দিক থেকে হাদীসটিতে দুর্বলতা পরিলক্ষিত হয়েছে।

১৫০৯

সহিহ হাদিস
وَعَنِ ابْنِ عَبَّاسٍ رَضِيَ اللَّهُ عَنْهُمَا قَالَ: قَالَ رَسُولُ اللَّهِ - صلى الله عليه وسلم -: «مَنْ تَسَمَّعَ حَدِيثَ قَوْمٍ، وَهُمْ لَهُ كَارِهُونَ، صُبَّ فِي أُذُنَيْهِ الْآنُكُ يَوْمَ الْقِيَامَةِ» يَعْنِي: الرَّصَاصَ. أَخْرَجَهُ الْبُخَارِيُّ

ইব্‌নু ‘আব্বাস (রাঃ) থেকে বর্ণিতঃ

তিনি বলেন, রাসূলুল্লাহ (সাল্লাল্লাহু ‘আলাইহি ওয়া সাল্লাম) বলেছেনঃ যে কেউ কোন এক দলের কথার দিকে কান লাগাল – অথচ তারা এটা পছন্দ করে না – ক্বিয়ামাতের দিন তার উভয় কানে সীসা ঢলে দেয়া হবে। [১৬১৮]
[১৬১৮] বুখারী ২২২৫, ৫৯৬৩, ৭০৪২, মুসলিম ২১১০, তিরমিযী ১৭৫১, ২২৮৩, নাসায়ী ৫৩৫৮, ৫৩৫৯, ৬০২৪, ইবনু মাজাহ ৩৯১৬, আহমাদ ১৮৫৯, ২১৬৩ । হাদীসের প্রথমাংশ হচ্ছেঃ (আরবী)
যে লোক এমন স্বপ্ন দেখার ভান করল যা সে দেখেনি তাকে দুটি যবের দানায় গিট দেয়ার জন্য বাধ্য করা হবে। অথচ সে তা কখনও পারবে না। তারপর তিনি উপরোক্ত হাদীসটি বর্ণনা করলেন। তিনি এতে আরো বৃদ্ধি করেন, আর যে কেউ প্রাণীর ছবি আঁকে-তাকে শাস্তি দেয়া হবে এবং তাতে প্রাণ ফুঁকে দেয়ার জন্য বাধ্য করা হবে। কিন্তু সে প্রাণ ফুঁকতে পারবে না।

১৫১০

হাসান হাদিস
وَعَنْ أَنَسٍ - رضي الله عنه - قَالَ: قَالَ رَسُولُ اللَّهِ - صلى الله عليه وسلم -: «طُوبَى لِمَنْ شَغَلَهُ عَيْبُهُ عَنْ عُيُوبِ النَّاسِ» أَخْرَجَهُ الْبَزَّارُ بِإِسْنَادٍ حَسَنٍ

আনাস (রাঃ) থেকে বর্ণিতঃ

তিনি বলেন, রাসূলুল্লাহ (সাল্লাল্লাহু ‘আলাইহি ওয়া সাল্লাম) বলেছেনঃ ঐ ব্যক্তির জন্য তুবা নামক বিশেষ জান্নাত বা খুশি যে নিজের ত্রুটি-বিচ্যুতি নিয়ে ব্যস্ত থাকার জন্যে অন্যের ত্রুটির প্রতি তার কোন ভ্রুক্ষেপ থাকে না। [১৬১৯]
[১৬১৯] আল ইরাকী তাঁর তাখরীজুল এহইয়া ৩/১৮৩ গ্রন্থে এর সনদকে দুর্বল বলেছেন। শাইখ আলবানী তাঁর যঈফুল জামে’ ৩৬৪৪ হাদীসটিকে অত্যন্ত দুর্বল বলেছেন।

১৫১১

হাসান হাদিস
وَعَنِ ابْنِ عُمَرَ رَضِيَ اللَّهُ عَنْهُمَا قَالَ: قَالَ رَسُولُ اللَّهِ - صلى الله عليه وسلم -: «مَنْ تَعَاظَمَ فِي نَفْسِهِ، وَاخْتَالَ فِي مِشْيَتِهِ، لَقِيَ اللَّهَ وَهُوَ عَلَيْهِ غَضْبَانُ» أَخْرَجَهُ الْحَاكِمُ وَرِجَالُهُ ثِقَاتٌ

ইবনু ‘উমার (রাঃ) থেকে বর্ণিতঃ

তিনি বলেন, রাসূলুল্লাহ (সাল্লাল্লাহু ‘আলাইহি ওয়া সাল্লাম) বলেছেনঃ যে ব্যক্তি নিজের মনেই নিজেকে বড় বলে জানে, চলার সময় অহংকার করে চলে, সে আল্লাহর সাথে সাক্ষাৎকালে তিনি তাঁর উপর রাগান্বিত অবস্থায় থাকবেন। [১৬২০]
[১৬২০] বুখারী আদাবুল মুফরাদ ৫৪৯

১৫১৩

দুর্বল হাদিস
وَعَنْ عَائِشَةَ رَضِيَ اللَّهُ عَنْهَا قَالَتْ: قَالَ رَسُولُ اللَّهِ - صلى الله عليه وسلم -: «الشُّؤْمُ: سُوءُ الْخُلُقِ» أَخْرَجَهُ أَحْمَدُ، وَفِي إِسْنَادِهِ ضَعْفٌ

আয়িশাহ (রাঃ) থেকে বর্ণিতঃ

তিনি বলেন, রাসূলুল্লাহ (সাল্লাল্লাহু ‘আলাইহি ওয়া সাল্লাম) বলেছেনঃ কুলক্ষণই মন্দ চরিত্র। [১৬২২]
[১৬২২] মুসলিম ২৫৮৯, তিরমিযী ১৯৩৪, আবূ দাউদ ৪৮-৭৪, আহমাদ ৭১০৬, ৮৭৫৯, দারেমী ২৭১৪। ইবনু আদী তাঁর আল কামিল ফিয যুআফা গ্রন্থে ২/১১ পৃষ্ঠায় বলেন, এর সনদে আবূ বকর বিন আবূ মারইয়াম রয়েছে তার অধিকাংশ হাদীস গরীব, তার দ্বারা দলীল গ্রহণ করা যায় না। আবূ নুআইম তাঁর হুলয়াতুল আউলিয়া ৬/১১০ গ্রন্থে বলেন, আবূ বকর বিন আবূ মারইয়াম এ হাদীসটি এককভাবে উল্লেখ করেছেন। ইমাম বাইহাকী শুআবুল ঈমান ৬/২৭৩১ পৃষ্ঠায় বলেন, এর সনদে আবূ বকর আবদুল্লাহ আল গাসানী রয়েছে, সে দুর্বল। শাইখ আলবানী সিলসিলা যঈফা ৭৯৩, যঈফুত তারগীব ১৬১০, যঈফুল জামে ৩৪২৬ গ্রন্থে হাদীসটিকে দুর্বল আখ্যায়িত করেছেন। অনুরূপ জাবের বিন আবদুল্লাহ সূত্রে বর্ণিত একটি হাদীসের সনদকে ইমাম বাইহাকী শুআবুল ঈমানে ৬/২৭৩১ দুর্বল বলেছেন। আর আলবানী যঈফ তারগীব ১৪৭১ গ্রন্থে হাদীসটিকে সরাসরি জাল হিসেবে আখ্যায়িত করেছেন।

১৫১২

হাসান হাদিস
وَعَنْ سَهْلِ بْنِ سَعْدٍ رَضِيَ اللَّهُ عَنْهُمَا قَالَ: قَالَ رَسُولُ اللَّهِ - صلى الله عليه وسلم -: «الْعَجَلَةُ مِنَ الشَّيْطَانِ» أَخْرَجَهُ التِّرْمِذِيُّ وَقَالَ: «حَسَنٌ»

সাহেদ ইবনু সা’দ (রাঃ) থেকে বর্ণিতঃ

তিনি বলেন, রাসূলুল্লাহ (সাল্লাল্লাহু ‘আলাইহি ওয়া সাল্লাম) বলেছেনঃ তাড়াহুড়া অর্থাৎ চিন্তাভাবনা না করেই কথা বলা বা কাজ করা শাইতানের প্রভাব থেকে হয়। [১৬২১]
[১৬২১] হিলইয়াতুল আওলিয়া ৮/৭৮; শুআবুল ঈমান ৪/৮৯; মুসনাদ আবী ইয়া’লা ৭/২৪৭, হুসাইন সালিম আসাদ এর সনদকে দুর্বল বলেছেন। ইমাম তিরমিযী (২০১২) আবদুল মুহাইমিন বিন আব্বাস বিন সাহল বিন সা’দ আস সাঈদী এর সূত্রে হাদীসটি বর্ণনা করেছেন। তিনি তার পিতা থেকে, তিনি তার দাদা থেকে। এর পূর্বে অতিরিক্ত রয়েছে (আরবী)। (ধীরস্থিরতা আল্লাহ্‌র পক্ষ থেকে)। অনুরূপভাবে ইবনু হাজার ইমাম তিরমিযী কর্তৃক হাদীসটিকে হাসান বলার কথা বলেছেন। আবদুর রহমান মুবারকপুরী তাঁর তুহফাতুল আহওয়াযী (৪/১২৯) গ্রন্থে বলেন, ইমাম তিরমিযী হাদীসটিকে হাসান গরীব বলেছেন। কোন কোন মুদ্রণে “এ হাদীসটি গরীব” কথাটির উল্লেখ রয়েছে। কতিপয় মুহাদ্দিস আবদুল মুহাইমীন বিন আব্বাস বিন সাহলএর সমালোচনা করেছেন। স্মৃতিশক্তির দিক থেকে তাকে দুর্বল বলেছেন। ইমাম সুয়ূত্বী তাঁর আল জামেউস সগীর (৩০৮৮) গ্রন্থে হাদীসটিকে হাসান বলেছেন। তার আনাস বিন মালিক সূত্রে বর্ণিত একই হাদীস আল জামেউস সগীর (৩৩৯০) গ্রন্থে দুর্বল বলেছেন। শাইখ আলবানী আবার উক্ত আনাস বিন মালিকের হাদীসকে সহীহুল জামে (৩০১১) গ্রন্থে হাসান বলেছেন। তিনি সিলসিলা সহীহাহ (১৭৯৫) গ্রন্থে বলেন, এর সনদ হাসান এবং প্রত্যেক বর্ণনাকারীই বিশ্বস্ত। ইবনুল কীসরানী তাঁর দাখীরাতুল হুফফায (৩/১৬০৬) গ্রন্থে বলেন, এর সনদে ইবনু লাহিয়া নামক দুর্বল বর্ণনাকারী রয়েছে।

১৫১৪

সহিহ হাদিস
وَعَنْ أَبِي الدَّرْدَاءِ - رضي الله عنه - قَالَ: قَالَ رَسُولُ اللَّهِ - صلى الله عليه وسلم -: «إِنَّ اللَّعَّانِينَ لَا يَكُونُونَ شُفَعَاءَ، وَلَا شُهَدَاءَ يَوْمَ الْقِيَامَةِ» أَخْرَجَهُ مُسْلِمٌ

আবূ দারদা (রাঃ) থেকে বর্ণিতঃ

তিনি বলেন, রাসূলুল্লাহ (সাল্লাল্লাহু ‘আলাইহি ওয়া সাল্লাম) বলেছেনঃ অধিক লা’নাতকারীগণ (তিরস্কার ও অভিসম্পাতকারী) পরকালে সুপারিশকারী ও সাক্ষ্য প্রদানকারী হতে পারবে না। (এরূপ দু’টো বিশেষ মর্যাদা লাভ হতে এরা বঞ্চিত হবে। [১৬২৩]
[১৬২৩] মুসলিম ২৫৯৮,আবূ দাউদ ৪৯০৭,আহমাদ ২৬৯৮১।

১৫১৫

অন্যান্য
وَعَنْ مُعَاذِ بْنِ جَبَلٍ - رضي الله عنه - قَالَ: قَالَ رَسُولُ اللَّهِ - صلى الله عليه وسلم -: «مَنْ عَيَّرَ أَخَاهُ بِذَنْبٍ، لَمْ يَمُتْ حَتَّى يَعْمَلَهُ» أَخْرَجَهُ التِّرْمِذِيُّ وَحَسَّنَهُ، وَسَنَدُهُ مُنْقَطِعٌ

‘আয ইবনু জাবাল (রাঃ) থেকে বর্ণিতঃ

তিনি বলেন, রাসূলুল্লাহ (সাল্লাল্লাহু ‘আলাইহি ওয়া সাল্লাম) বলেছেন: যে ব্যক্তি তার মুসলিম ভাইকে কোন পাপের কথা বলে লজ্জা দেয়, সে ঐ পাপ কাজ না করে মরবে না। (অর্থাৎ তাকে ঐ কাজে লিপ্ত হয়ে লোকচক্ষে হেয় হতে হয়।) [১৬২৪]
[১৬২৪] তিরমিযী ২৫০৫। শাইখ আলবানী তাঁর যঈফ তারগীব ১৪৭১ এ হাদীসটিকে বানোয়াট হিসেবে আখ্যায়িত করেছেন। আসসীগানীও অনুরূপ বলেছেন। ইবনু হিব্বান তাঁর আল মাজরুহীন গ্রন্থে ২/২৮৮ পৃষ্ঠায় বলেন, এর সনদে মুহাম্মাদ ইবনুল হাসান মুনকারুল হাদীস। ইবনুল কীসরানী তাঁর তাযকিরাতুল হুফফায গ্রন্থেও একই কথা বলেছেন। আল মুনযিরী তাঁর তারগীব ওয়াত তারহীব গ্রন্থে ২/২৮৭ গ্রন্থে ইমাম তিরমিযীর একটি কওল উল্লেখ করেছেন। তিনি বলেন, খালেদ বিন মাদান মুআযের যুগ পাননি। ইমাম যাহাবী মিযানুল ইতিদাল ৩/৫১৫ গ্রন্থে বলেন, এ হাদীসের সনদের একজন রাবী মুহাম্মাদ ইবনুল হাসান বিন আবূ ইয়াযীদের দোষ উল্লেখ করা হয়েছে।

১৫১৬

হাসান হাদিস
وَعَنْ بَهْزِ بْنِ حَكِيمٍ، عَنْ أَبِيهِ، عَنْ جَدِّهِ - رضي الله عنه -: قَالَ: قَالَ رَسُولُ اللَّهِ - صلى الله عليه وسلم -: «وَيْلٌ لِلَّذِي يُحَدِّثُ، فَيَكْذِبُ; لِيُضْحِكَ بِهِ الْقَوْمَ، وَيْلٌ لَهُ، ثُمَّ وَيْلٌ لَهُ» أَخْرَجَهُ الثَّلَاثَةُ، وَإِسْنَادُهُ قَوِيٌّ

বাহয ইবনু হাকিম (রাঃ) থেকে বর্ণিতঃ

তিনি তাঁর পিতা, তিনি তাঁর দাদা হতে বর্ণনা করেছেন, রাসূলুল্লাহ (সাল্লাল্লাহু ‘আলাইহি ওয়া সাল্লাম) বরেন, চরম সর্বনাশ ঐ ব্যক্তির জন্য যে মানুষকে হাসানোর উদ্দেশ্যে মিথ্যা কথা বলে থাকে, তার জন্য সর্বনাশ, তার জন্য সর্বনাশ। সনদটি শক্তিশালী। [১৬২৫]
[১৬২৫] তিরমিযী ২৩১৫, আবূ দাঊদ ৪৯৯০, আহমাদ ১৯৫১৯, ১৯৫৪২, দারেমী ২৭০২। হাদীসটিকে আলবানী, বিনবায, ইবনুল মুলকিন, আল মুনযিরী হাসান বলেছেন। ইমাম সুয়ূত্বী আল জামেউস সগীর (৯৬৪৮) গ্রন্থে একে সহীহ বলেছেন।

১৫১৭

দুর্বল হাদিস
وَعَنْ أَنَسٍ - رضي الله عنه - عَنِ النَّبِيِّ - صلى الله عليه وسلم - قَالَ: «كَفَّارَةُ مَنِ اغْتَبْتَهُ أَنْ تَسْتَغْفِرَ لَهُ» رَوَاهُ الْحَارِثُ بْنُ أَبِي أُسَامَةَ بِسَنَدٍ ضَعِيفٍ

আনাস (রাঃ) থেকে বর্ণিতঃ

নাবী (সাল্লাল্লাহু ‘আলাইহি ওয়া সাল্লাম) বলেন: গীবাতের (পরনিন্দার) কাফ্ফারা (গুনাহ্ মাফের উপায়) হচ্ছে যার গীবাত করেছ তার পাপের ক্ষমার জন্য আল্লাহর দরবারে দু‘আ করতে থাকা। (হারেস বিন উসামা দুর্বল সনদে বর্ণনা করেছেন। [১৬২৬]
[১৬২৬] ইবনে উসাইমীন বুলুগুল মারামের শরাহ ৬/৪১৬ গ্রন্থে বলেন, এর সনদ দুর্বল তবে এর অর্থে লক্ষ্য করে আমল করা যেতে পারে। শাইখ আলবানী তাখরীজ মিশকাতুল মাসাবীহ ৪৮০৩ গ্রন্থে বলেন, এর তিনটি সনদ রয়েছে, যার প্রতিটিই দুর্বল। ইমাম বাইহাকী তাঁর আদ দাওয়াতুল কাবীর (২/২১৩) গ্রন্থে বলেন, এর সনদে দুর্বলতা রয়েছে। আল বুসাইরী তার ইতহাফূল খিয়ারাতুল মুহাররাহ গ্রন্থে ৭/৪২৫ বলেন, এ হাদীসের সনদে আনবাসা বিন আবদুর রহমান রয়েছেন যিনি দুর্বল। ইমাম বাইহাক্বী শুআবুল ঈমান ৫/২৩১০ গ্রন্থে এর সনদকে দুর্বল বলেছেন। শাইখ সুমাইর আয যুহাইরী হাদীসটিকে মুওযূ বলেছেন। তিনি বলেন, আনাবাসা বিন আবদুর রহমান হাদীস রচনা করত।

১৫১৮

সহিহ হাদিস
وَعَنْ عَائِشَةَ رَضِيَ اللَّهُ عَنْهَا قَالَتْ: قَالَ رَسُولُ اللَّهِ - صلى الله عليه وسلم -: «أَبْغَضُ الرِّجَالِ إِلَى اللَّهِ الْأَلَدُّ الْخَصِمُ» أَخْرَجَهُ مُسْلِمٌ

আয়িশাহ (রাঃ) থেকে বর্ণিতঃ

তিনি বলেন, রাসূলুল্লাহ (সাল্লাল্লাহু ‘আলাইহি ওয়া সাল্লাম) বলেছেন: আল্রাহর কাছে সবচেয়ে ঘৃণ্য ব্যক্তি হচ্ছে অতি ঝগড়াটে লোক। [১৬২৭]
[১৬২৭] বুখারী ২৪৫৭, ৭১৮৮, মুসলিম ২৬৬৮, তিরমিযী ২৯৭৬, নাসায়ী ৫৪২৩, আহমাদ ২৩৭৫৬, ২৩৮২২।

রিডিং সেটিংস

Bangla

System

আরবি ফন্ট নির্বাচন

Kfgq Hafs

অনুবাদ ফন্ট নির্বাচন

Kalpurush

22
17

সাধারণ সেটিংস

আরবি দেখান

অনুবাদ দেখান

রেফারেন্স দেখান

হাদিস পাশাপাশি দেখান


এই সদাকা জারিয়ায় অংশীদার হোন

মুসলিম উম্মাহর জন্য বিজ্ঞাপনমুক্ত মডার্ন ইসলামিক এপ্লিকেশন উপহার দিতে আমাদের সাহায্য করুন। আপনার এই দান সদাকায়ে জারিয়া হিসেবে আমল নামায় যুক্ত হবে ইন শা আল্লাহ।

সাপোর্ট করুন