সুলায়মান ইব্নু ইয়াসার (র) হতেও এইরূপ বর্ণিত আছে। (হাদীসটি ইমাম মালিক এককভাবে বর্ণনা করেছেন)
মালিক (র) বলেন যদি কোন ব্যক্তি কয়েকজন একযোগে মালিক এমন কোন জমির এক অংশ কোন জন্তু অথবা গোলামের পরিবর্তে কিংবা এই ধরনের কোন মালের (যেমন জিনিসপত্র) পরিবর্তে খরিদ করে, অতঃপর শরীকদার নিজ শুফ‘আ নেয়ার জন্য আসে কিন্তু এই সময়ে ঐ গোলাম অথবা দাসী মারা গিয়ে থাকে এবং তাদের মূল্য কত ছিল কেউ জানে না। কিন্তু খরিদ্দার বলে যে, তার মূল্য একশত দীনার ছিল এবং শুফ‘আ দাবিদার পঞ্চাশ দীনার বলে, তবে খরিদ্দার বলে যে, তার মূল্য একশত দীনার ছিল এবং শুফ‘আ দাবিদার পঞ্চাশ দীনার বলে, তবে খরিদ্দার হতে এই ব্যাপারে কসম (শপথ) গ্রহণ করা হবে যে, উহার মূল্য একশত দীনার ছিল। তার পর শুফ‘আ দাবিদারের ইচ্ছা হলে উহা গ্রহণও করতে পারে অথবা দাবি ছেড়েও দিতে পারবে। কিন্তু যদি শুফ‘আর দাবিদারের ইচ্ছা হলে উহা গ্রহণও করতে পারে অথবা দাবি ছেড়েও দিতে পারবে। কিন্তু যদি শুফ‘আর দাবিদার তার দাবির সপক্ষে প্রমাণ করে যে, উক্ত দাস দাসীর মূল্য খরিদ্দার যা বলে তা হতে কম ছিল, তবে তার কথা মানতে হবে।
মালিক (র) বলেন যদি কেউ একযোগে কয়েক ব্যক্তি মালিক এমন ঘর অথবা জমির নিজ অংশ দান করে দেয় কিন্তু যাকে দান করা হয়েছে সে দানকারীকে তার মূল্য দিয়ে দেয়, তবে শুফ‘আর দাবি করার অধিকার শরীকদারদের থাকবে এবং গ্রহীতাকে টাকা-পয়সা ফেরত দিয়ে তা নিবার ইখতিয়ার শরীকদারদের থাকবে, দীনার অথবা দিরহাম যা দিয়ে হোক মূল্য শোধ করবে।
মালিক (র) বলেন যে, যদি কেউ তার সঙ্গে অন্যেরাও মালিক এমন ঘর অথবা জমি হেবা (দান) করে এবং এখনও কোন বিনিময় গ্রহণ করেনি এবং বিনিময় তলবও করেনি, এমন সময় শরীকদার যদি চায় যে, উহার বিনিময় দিয়ে দখল করবে তবে উহার বিনিময় প্রদান না করে দখল করা জায়েয হবে না। যদি বিনিময় দিয়ে দেয় তবে উহা শুফ‘আ দাবিকারীর জন্য বৈধ হবে এই শর্তে যে, পূর্ণ মূল্য সে দিয়ে দিবে ও দখল নিবে।
মালিক (র) বলেন যে, শুফ‘আর দাবিদার যদি জমির বেচাকেনার সময় অনুপস্থিত থাকে তবে তার শুফ‘আর অধিকার বাতিল হবে না, যদিও সে অনেক দিন গায়েব থাকে। আর গায়েব থাকার কোন সীমা আমাদের নিকট নাই যে, এতদিন গায়েব থাকলে শুফ‘আর অধিকার থাকবে না।
মালিক (র) বলেন এক ব্যক্তির কয়েকজন সন্তান ওয়ারিসসূত্রে কোন জমির মালিক হল, তার পর তাদের কারো সন্তান জন্ম হওয়ার পর সে মারা গেল এবং তার এক সন্তান মৃত পিতার প্রাপ্য অংশ বিক্রয় করতে চায়, তবে বিক্রেতার ভাই তার চাচার চাইতে শুফ‘আর অধিকার বেশি রাখে। মালিক (র) বলেন যে, আমাদের নিকটও হুকুম অনুরূপ।
মালিক (র) বলেন যদি শুফ‘আর শরীকদারদের মধ্যে কয়েকজন দাবি করে তবে বিক্রীত সম্পদ হতে প্রত্যেক হিস্যা (অংশ) অনুযায়ী নিবে। যদি কম হয় কমই নেবে আর বেশি হলে বেশিই নেবে। এটা তখনই করবে যখন তাদের মধ্যে ঝগড়া বাঁধে, অথবা একজন তার সঙ্গীর নিকট হতে তার হিস্যা খরিদ করে কোন শরীকদারকে বলবে যে, আমি আমার হিস্যা পরিমাণ শুফ‘আ নিব। অতঃপর খরিদ্দার বলবে যে, তুমি যদি চাও তবে সবটুকুরই শুফ‘আ নিয়ে যাও, আমি তোমাকে সবই দিয়ে দিচ্ছি। কিংবা শুফ‘আর দাবিও পরিহার কর। এই অবস্থায় শুফ‘আর দাবিদারের উচিত পূর্ণ হিস্যা খরিদ্দার হতে খরিদ করে নেয় অথবা শুফ‘আর দাবি পরিত্যাগ করা। যদি পূর্ণ নিতে চায় তবে সে বেশি হকদার, অন্যথায় সে হকদার হবে না।
মালিক (র) বলেন এক ব্যক্তি কিছু জমি খরিদ করল, অতঃপর উহা আবাদ করল ও তাতে ঘর নির্মাণ করল অথবা কূপ খনন করল। তার পর এক ব্যক্তি এসে হক দাবি করল এবং শুফ‘আর মাধ্যমে উহা নেয়ার ইচ্ছা করল, তবে তার শুফ‘আ দাবির কোন অধিকার নেই যতক্ষণ বানানো ঘর অথবা কূপ খননের মূল্য আদায় না করে। যদি তার মূল্য আদায় করে দেয় তবে তার শুফ‘আর দাবি গ্রাহ্য হবে। অন্যথায় তার কোন শুফ‘আর দাবি চলবে না।
মালিক (র) বলেন এক ব্যক্তি শরীকের ঘর অথবা জমি বিক্রয় করে জানতে পারল যে, শুফ‘আর দাবিদার শুফ‘আ দাবি করবে। তাই ক্রেতা মূল্যের ব্যাপারে মিথ্যার আশ্রয় নিতে চাইল এবং বিক্রেতাও তাই করল। তাতে শুফ‘আর দাবিদারের শুফ‘আ নষ্ট হবে না। এই ব্যাপারে শুফ‘আর দাবিদারই শুফ‘আর অধিকারী, যে মূল্যে বিক্রয় করেছে তা আদায় করার পর।
মালিক (র) বলেন যদি কেউ শরীকী ঘর অথবা জমির এক অংশ ও ১টি জন্তু এবং কিছু জিনিসপত্র একই বৈঠকে আফদে (দাম) খরিদ করে, অতঃপর শুফ‘আ দাবিকারীর শুফ‘আ দাবি করে, শুধু ঘরের অথবা জমিতে, কিন্তু খরিদ্দার বলে যে, আমি যা খরিদ করেছি সকলই নিয়ে যাও, কারণ আমি সবই খরিদ করেছি। তখন শুফ‘আর দাবিদার জমি ও ঘরেরই শুফ‘আ নিবে, তার হিস্যা যতদূর আসে। তখন ঐ পূর্বের মূল্যের হিসাবে প্রত্যেকটি জিনিসের মূল্য ধরতে হবে পৃথকভাবে। অতঃপর শুফ‘আ নিয়ে যাবে ঐ খরিদকৃত আসল দামের হিসাবে, যা হয় তা দিয়ে। জন্তু ও জিনিসপত্র কোনটাই নেবে না, কিন্তু সে যদি ইচ্ছা করে সবগুলো নিয়ে যায় তবে উহাও জায়েয।
মালিক (র) বলেন শরীকী জমির এক অংশ কেউ বিক্রয় করল, অতঃপর যাদের শুফ‘আর অধিকার আছে তাদের কেউ খরিদ্দারের পক্ষে দাবি প্রত্যাখ্যান করল কিন্তু তাদের আর কেউ তা দাবি করে বসল, এই অবস্থায় খরিদ্দারের পূর্ণ অংশ তার নিতে হবে। এটা হবে না যে, সে তার ভাগের অংশই নিবে এবং বাকী অংশ ছেড়ে দিবে।
মালিক (র) বলেন যদি অনেকেই মালিক এমন একটি ঘরের কোন এক শরীক তার অংশ বিক্রয় করল। একজন শরীক ছাড়া আর সকলেই অনুপস্থিত। অতঃপর সেই উপস্থিত শরীককে এই মর্মে জিজ্ঞেস করা হবে যে, শুফ‘আর দাবিতে আপনি এটা নিয়ে যান অথবা ছেড়ে দেন; সে বলল, আমি আমার অংশ নিচ্ছি এবং অন্য শরীকদের অংশ ছেড়ে দিচ্ছি, তারা হাযির হওয়ার পর যদি তাদের অংশ তারা নেয় তবে তো ভাল, না হয় আমি সবটুকু নিব। এই পন্থা জায়েয নয়, হয়ত সে পূর্ণ হিস্যা নেবে, না হয় পূর্ণ দাবি ছেড়ে দেবে। অতঃপর যদি অন্যান্য শরীকগণ আসে তবে তার নিকট হতে তারা অংশ নিবে অথবা ছেড়ে দেবে। আর উক্ত ব্যক্তি যদি তা গ্রহণই না করে তবে তার আর শুফ‘আর অধিকার থাকবে না।